থিম্পু (ভুটান): এগারো বছর পর এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের নকআউটে গেল ইস্টবেঙ্গল এফসি। শুক্রবার গ্রুপ ‘এ’-র চূড়ান্ত খেলায় তারা ৩-২ গোলে হারাল লেবাননের নেজমেহ এসসিকে। এই জয়ের ফলে ইস্টবেঙ্গল গ্রুপ ‘এ’ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেল।
দু’ গোলে এগিয়ে থেকে তা ধরে রাখতে না পারাটা যেন এই মরশুমের একটা নিয়মে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। এ দিনও যখন খেলা ২-২ চলছিল, তখনও ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের সেই আতঙ্ক গ্রাস করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই ধারা ভেঙে জয় পেল ইস্টবেঙ্গল।
প্রথমার্ধে ২-২
শুক্রবার ভুটানের থিম্পুতে চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে ৮ মিনিটেই এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। তবে সেটা ছিল নেজমেহ এসসি-র আত্মঘাতী গোল। কর্নার পেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। ফরাসি তারকা মাদিহ তালাল কর্নার কিক নেন। হেড করে সেই কর্নার কিক ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভুল করে বসেন নেজমেহের ডিফেন্ডার আল-রিদা ইসমাইল। তিনি নিজেদের গোলেই বল ঢুকিয়ে দেন।
প্রথম গোল পাওয়ার ৭ মিনিটের মধ্যেই দ্বিতীয় গোল পায় ইস্টবেঙ্গল। ডানদিক থেকে দারুণ ক্রস করেন নাওরেম মহেশ সিং। দ্বিতীয় পোস্টের কাছে থাকা গ্রিক তারকা দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকোস তাতে আলতো টোকা দিয়ে নেজমেহের গোলে ঢুকিয়ে দেন।
দুটো গোল খেয়ে ফুঁসে ওঠে লেবাননী দলটি। এবং তার সুফলও তারা পেয়ে যায় ৩ মিনিটের মধ্যে। ইস্টবেঙ্গলের এগিয়ে থাকার ব্যবধান কমান নেজমেহের স্ট্রাইকার কোলিন্স ওপারে। এর পর ম্যাচে সমতা আনার আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকে নেজমেহ এবং বিরতির একটু আগে সেই কাজে তারা সফলও হয়। ম্যাচের ৪২ মিনিটে ফ্রিকিক থেকে গোল করেন দলের মিডফিল্ডার হুসেন মনজের। প্রথমার্ধে খেলা ২-২ গোলে অমীমাংসিত থাকে।
ম্যাচের একটি মুহূর্ত। ছবি ইস্টবেঙ্গলের ‘এক্স’ থেকে নেওয়া।
দ্বিতীয়ার্ধে ইস্টবেঙ্গলের জয়সূচক গোল
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই অন্য রূপ দেখা যায় নেজমেহের। গোড়া থেকেই ইস্টবেঙ্গলকে চেপে ধরে এবং তাদের রক্ষণভাগে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বলের দখলও অনেক বেশি ছিল নেজমেহের। তবু স্রোতের বিপরীতে গিয়ে ইস্টবেঙ্গল তৃতীয় গোলটি পেয়ে যায়।
ম্যাচের ৭৪ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের নন্দকুমার সেকরকে নিজেদের বক্সে ফেলে দেন নেজমেহের ডিফেন্ডার। ইস্টবেঙ্গলকে পেনাল্টি দিতে কোনো ভুলচুক করেননি রেফারি। পেনাল্টি থেকে নিজের দলকে ৩-২ গোলে এগিয়ে দেন দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকোস।
ম্যাচের শেষ দিকে ইস্টবেঙ্গলকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে নেজমেহ। দলের গোলকিপার প্রভসুখন গিল নেজমেহের বেশ কিছু আক্রমণ বাঁচান। শেষ পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গল এফসি ৩-২ গোলে জিতে যায়। ঘরোয়া টুর্নামেন্টে আইএসএল-এ খুব বাজে পারফরমেন্সের পর এই মরশুমে পরপর দুটো জয় পেয়ে এশীয় টুর্নামেন্টের নকআউটে চলে গেল লাল-হলুদ বাহিনী। এর আগে ২০১৩ সালে এই মহাদেশীয় টুর্নামেন্টের নকআউট স্টেজে খেলেছিল ইস্টবেঙ্গল।