কাতার ৩ (তারেক মাশাল, আলমেওজ আলি, ইউসুফ আদুরিসাগ) ভারত ০
ভুবনেশর: কোচ আইগর স্টিম্যাকের ভুল কৌশলের জন্যই কি ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের কোয়ালিফারের দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলায় কাতারের কাছে ০-৩ গোলে হারল ভারত? ইতিমধ্যেই এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এটা ঠিক বিশ্ব ফুটবল র্যাঙ্কিং-এ যে দেশ ভারতের চেয়ে ৪১ ধাপ উপরে তার সঙ্গে লড়া খুব কঠিন ব্যাপার। তবু এ রকম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে স্টিম্যাক কেন গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সাঁধুকে বসিয়ে রাখলেন তা বোধগম্য হল না। ২০২২-এর বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক দেশ ছিল কাতার। এই কাতারের বিরুদ্ধে ভারত যে দু’ বার মুখোমুখি হয়েছে তাতে গুরপ্রীতই ছিলেন নিঃসন্দেহে শ্রেষ্ঠ ফুটবলার। সেই মঙ্গলবারের ম্যাচে বসিয়ে রাখলেন ভারতের হেড কোচ।
শুধু তা-ই নয়, ভারতের যে দল কুয়েতকে হারাল সেই দলের চার জন ফূটবলারকে কাতারের বিরুদ্ধে ম্যাচে বসিয়ে রাখলেন ক্রোয়েশিয়ার এই প্রাক্তন ফুটবলার। আইগরের এই কৌশল কেন, তাও বোঝা গেল না।
মঙ্গলবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে কাতার ৩-০ গোলে হারাল ভারতকে। চার বছর আগে কাতারের সঙ্গে ম্যাচ ভারত গোলশূন্য অবস্থায় শেষ করেছিল। সেই ম্যাচের ফল স্মরণে রেখে ভারতের উদ্বুদ্ধ হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি।
প্রথমার্ধে কাতার ১-০
এ দিনের ম্যাচে ভারতের রক্ষণভাগের দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে যায় যখন ম্যাচের ৪ মিনিটেই গোল করে বসে কাতার। একটা কর্নার কিক থেকে বল পেয়ে ভারতের বক্সের মধ্যেই কাতারের তিন ফুটবলার নিজেদের মধ্যে বল দেওয়ানেওয়া করতে লাগলেন, কিন্তু ভারতের কোনো ডিফেন্ডার তাঁদের বাধা দিতে পারলেন না। সেই পাশ থেকেই মুস্তাফা তারেক মাশাল ডান পায়ের নিচু শটে গোল করে বসেন। গুরপ্রীতের বিকল্প গোলকিপার অমরিন্দর সিং বলের থই পেলেন না।
এর পরও কাতার মুহুর্মুহু আক্রমণ চালায়। আক্রম আফিফ তিন তিন বার গোল করার সুবর্ণ সুযোগ মিস করেন। ম্যাচের ১৪, ২২ এবং ২৬ মিনিটে এই সুযোগগুলো তিনি পেয়েছিলেন। তার ওপর মাশালের একটা দুর্দান্ত হেড বাঁচিয়ে দিন অমরিন্দর।
তবে প্রথমার্ধের শেষ দিকে ভারত কিছুটা লড়াই করে। কাতারের গোলকিপার মেশাল বার্শমকে একা পেয়েও গোল করতে পারলেন না অনিরুদ্ধ থাপা। একটা দুর্বল নিচু শট গোলপোস্টের অনেক দূর দিয়ে বেরিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে থাকে কাতার।
দ্বিতীয়ার্ধে কাতারের আরও ২টি গোল
প্রথমার্ধের শেষ দিকে ভারত লড়াইয়ে ফিরে আসার কিছুটা চেষ্টা করেছিল তা দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই অঙ্কুরে বিনষ্ট করে কাতার। ম্যাচের ৪৭ মিনিটে দ্বিতীয় গোল পায় তারা। কাতারের আলমেওজ আলি দুর্দান্ত শটে পরাস্ত করেন অমরিন্দরকে। কাতার এর আগের ম্যাচে আফগানিস্তানকে যে ৮-১ গোলে হারিয়েছিল, সেই ম্যাচে আলি একাই ৪ গোল দিয়েছিলেন।
৬৩ মিনিটে অনিরুদ্ধ থাপাকে তুলে নিয়ে সহল আবদুল সামাদকে নামানো হয়। ২ মিনিট পরেই সুরেশ সিং কাতারের বক্সে থাকা সামাদকে দুর্দান্ত পাশ দেন। কিন্তু সামাদের বাঁ পায়ের শট পোস্টের অনেক উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়।
ম্যাচের ৮৬ মিনিটে জয়ের ব্যবধান বাড়ায় কাতার। মোহম্মদ আলবায়াতির ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে দলের তৃতীয় গোল করেন ইউসুফ আদুরিসাগ। কাতার জেতে ৩-০ গোলে।
তৃতীয় রাউন্ডে যাওয়ার পথ এখনও খোলা
তবে কুয়েতের বিরুদ্ধে জয়ের জোরেই বিশ্বকাপের যোগ্যতা-অর্জন পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে যাওয়ার এখনও রাস্তা খোলা আছে ভারতের। তাদের এই গ্রুপে চতুর্থ দলটি হল আফগানিস্তান, বিশ্ব ফুটবলে যাদের র্যাঙ্কিং ১৫৪, ভারতের চেয়ে ৫২ ধাপ নীচে।
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপ ফুটবল কোয়ালিফায়ার: কুয়েতকে হারিয়ে জায়গা মজবুত করল ভারত