ভারত: ১০ (হরমনপ্রীত ৪, বরুণ কুমার ২, মনদীপ, সুমিত, শমসের, ললিত) পাকিস্তান: ২ (মুহম্মদ খান, আবদুল রানা)
হ্যাংঝাউ: এশিয়ান গেমসে তৈরি হল ইতিহাস। হকিতে ভারত-পাকিস্তানের লড়াইয়ে এই ঘটনা এর আগে কখনও ঘটেনি। চিরপ্রতিদ্বন্দী পাকিস্তানকে এত বড়ো ব্যবধানে ভারত কোনো দিন হারাতে পারেনি। বরাবরই দুই দেশের হকি ম্যাচ মানেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। কিন্তু এ বার একেবারে গোলের উৎসব উদযাপন করল ভারত।
আগের ম্যাচে এশিয়ান গেমসে গত বারের হকি চ্যাম্পিয়ন জাপানকে ৪-২ গোলে হারিয়ে উজ্জীবিত ছিল ভারত। সেই ভারত শনিবার গংশু ক্যানাল স্পোর্টস পার্ক স্টেডিয়ামে আয়োজিত পুল ‘এ’-এর ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাল ১০-২ গোলে। অধিনায়ক হরমনপ্রীত হ্যাটট্রিক-সহ ৪টি গোল করেন। ভারতের আক্রমণের সামনে দাঁড়াতেই পারল না পাকিস্তান। কার্যত পাকিস্তানকে নিয়ে ছেলেখেলা করল তারা।
প্রথমার্ধে ৪ গোল ভারতের
প্রথম কোয়ার্টারে শুরুর দিকটা যেন এক পক্ষ আর-এক পক্ষকে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করে। পাকিস্তান আক্রমণ শানানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ভারতের রক্ষণভাগ সজাগ ছিল। তারা পাকিস্তানের সেই চেষ্টা রুখে দেয়। এরই মধ্যে দুর্দান্ত প্রতি-আক্রমণে উঠে আসে ভারত। বাঁ দিক থেকে আক্রমণে উঠে আসেন মনদীপ সিং এবং অভিষেক। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ৮ মিনিটে মনদীপ গোল করে ভারতকে এগিয়ে দেয়।
মুহূর্তের মধ্যে পাকিস্তান আক্রমণে উঠে আসে। তারা তাদের প্রথম পেনাল্টি কর্নার পায়। কিন্তু সেই পেনাল্টি কর্নার তারা কাজে লাগাতে পারেনি। এর পরেই পেনাল্টি স্ট্রোক পায় ভারত। ভারতের অধিনায়ক ঠান্ডা মাথার হরমনপ্রীত সিং তা থেকে গোল করেন। প্রথম কোয়ার্টারে ভারত ২-০ গোলে এগিয়ে যায়।
দ্বিতীয় কোয়ার্টারের শুরুতে ভারত গোলকিপার বদল করে। কৃষণ পাঠকের জায়গায় গোল রক্ষা করতে নামেন পিআর শ্রীযশ। এর পরেই আসে ভারতের তৃতীয় গোল। পেনাল্টি কর্নার থেকে সেই হরমনপ্রীত আবার গোল করেন (৩-০)। পাকিস্তান আক্রমণ করার চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু তাদের আক্রমণ তেমন ভাবে দানা বাঁধছিল না। ইতিমধ্যে ভারত আবার গোল করে। ললিত উপাধ্যায়ের স্ট্রাইক সুমিতের স্টিকে লেগে পাকিস্তানের গোলে ঢোকে। বিরতিতে ভারত ৪-০ গোলে এগিয়ে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধে ভারতের আরও ৬ গোল
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আবার গোল পায়। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে গোল করে হরমনপ্রীত হ্যাটট্রিক করেন। ১ মিনিট পরে আবার গোল। একেবারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অধিনায়ক হরমনপ্রীত। আবার গোল করেন তিনি। ম্যাচের ৩৪ মিনিটের মধ্যে ৬-০ গোলে এগিয়ে যায় ভারত।
খেলা এগিয়ে চলে। পাকিস্তান আক্রমণে ঝাঁপানোর চেষ্টা করে এবং তার ফলও পায়। ৩৮ মিনিটে তারা প্রথম গোল পায়। পাকিস্তান পেনাল্টি কর্নার পায়। এবং সেটি কাজে লাগান মুহম্মদ খান। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে প্রতি-আক্রমণে ভারত আবার গোল করে। ম্যাচের ৪১ মিনিটে গোল করেন বরুণ কুমার। ভারতের স্কোরশিটে ৭টি গোল যোগ হয়। এর পর পাকিস্তান সান্ত্বনা পুরস্কার হিসাবে আরও একটি গোল পায়। গোল করেন আবদুল রানা। তৃতীয় কোয়ার্টারের শেষে ভারতের পক্ষে স্কোর দাঁড়াল ৭-২।
এর পরেও গোলের উৎসব চালিয়ে যেতে থাকল ভারত। শেষ কোয়ার্টারে তারা আরও তিনটি গোল দিল। এই কোয়ার্টারের প্রথম চার মিনিটের মধ্যেই দুটো গোল। অষ্টম গোলটি ফিল্ড গোল। করলেন শমসের। তিন মিনিট পরেই জরমনপ্রীতের কাছ থেকে বল পেয়ে গোল করেন ললিত উপাধ্যায়। এবং কিছুক্ষণ পরেই ভারতের দশম গোল এবং বরুণের দ্বিতীয় গোল। খেলার একেবারে শেষ মুহূর্তে গোল করার সুযোগ পায় পাকিস্তান। কিন্তু ভারতের গোল লক্ষ্য করে নেওয়া শট দারুণ ভাবে বাঁচিয়ে দেন শ্রীযশ।
আরও পড়ুন
এশিয়ান গেমস ২০২৩: টেনিস ও স্কোয়াশে এল সোনা, ভারতের ঝুলিতে আরও পদক
আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০২৩: কোন কোন দেশ সেমিফাইনালে যাবে, কী বললেন আমলা, গেইল আর গম্ভীর