মঙ্গলবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনাল ম্যাচে বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে মোহনবাগানের জয় শুধু মাঠেই নয়, গ্যালারিতেও একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে দাঁড়ালো। কারণ, এ দিন মাঠে উপস্থিত সবুজ-মেরুন সমর্থকেরা আরজি কর-কাণ্ডের বিচারের দাবিতে টিফো প্রদর্শন করেন, যা কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনেই করা হয়।
টিফোতে লেখা ছিল, “হাতে হাত রেখে এ লড়াই, আমাদের বোনের বিচার চাই!” এটি শুধু মোহনবাগান সমর্থকদের নয়, বরং কলকাতার দুই প্রধান মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের মধ্যে সম্প্রীতির প্রতীক হয়ে উঠেছিল। টিফোর মধ্যে সবুজ-মেরুন এবং লাল-হলুদ রং ব্যবহার করে দুটি মেয়ের ছবি দেখানো হয়েছে, যা দুই প্রধানের একাত্মতা ও সংহতির প্রতিফলন।
ম্যাচ শুরুর আগে বা বিরতির সময় টিফো প্রদর্শন করা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নিষিদ্ধ ছিল না, তবে সেমিফাইনাল শেষ হওয়ার পরই গ্যালারিতে টিফো প্রদর্শন করেন সবুজ-মেরুন সমর্থকেরা। তাতে কোনও ভারী বস্তু ব্যবহার না করার নির্দেশ মেনে, কেবলমাত্র সামান্য উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল টিফোটি।
উল্লেখযোগ্য যে, আরজি কর কাণ্ডের বিচারের দাবিতে সম্প্রতি কলকাতার তিন প্রধান ক্লাব – ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, এবং মহমেডানের সমর্থকেরা একসঙ্গে পথে নেমেছিলেন। ডার্বি ম্যাচ বাতিল এবং পুলিশের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ওই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে কলকাতাজুড়ে। পরে হাই কোর্টের নির্দেশে ডুরান্ড কাপের ম্যাচ আয়োজিত হলেও, পুলিশ আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় টিফো প্রদর্শন নিষিদ্ধ করেছিল।
তবে ময়ূখ বিশ্বাসের হাই কোর্টে আর্জি জানানোয় বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দেন যে, মাঠে টিফো নিয়ে প্রবেশ করা যাবে এবং তা দেখানো যাবে ম্যাচের শেষে। তবে তা ভারী বস্তু দিয়ে তৈরি হওয়া চলবে না। সেই নির্দেশ মেনেই খেলা শেষে টিফো প্রদর্শিত হয়।
এই মুহূর্তটি শুধু একটি প্রতিবাদ নয়, বরং ফুটবল ও সমর্থকদের মাধ্যমে সংহতি ও ন্যায়বিচারের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার একটি নজিরবিহীন উদাহরণ হয়ে থাকলো।