অরূপ চক্রবর্তী
গণ্ডার পর্যটনের গৌরবের সঙ্গে এখন যুক্ত হচ্ছে বাঘ পর্যটনের নতুন অধ্যায়। আন্তর্জাতিক বাঘ দিবসে উদযাপিত হল কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের এই ইতিবাচক রূপান্তর।
আসামের কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান এতদিন একশৃঙ্গ গণ্ডারের জন্য বিখ্যাত হলেও এখন সেখানে পর্যটনের মূল আকর্ষণ হয়ে উঠছে বাঘ। উত্তর-পূর্ব ভারতের এই বিশ্ববিখ্যাত জৈববৈচিত্র্যময় উদ্যানটি ‘বিগ ফাইভ’—গণ্ডার, হাতি, বাঘ, মোষ ও হরিণ—এর জন্য অনন্য, তবে বাঘ পর্যটনের উত্থান তাকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে।
উদ্যান ও বাঘ সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ক্ষেত্র পরিচালক ড. সোনালি ঘোষ জানিয়েছেন, “কাজিরাঙায় বর্তমানে ১০৪টি বাঘ রয়েছে, যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলেই প্রত্যাশা।” তিনি জানান, জাতীয় পর্যায়ে নতুন বাঘ গণনার কাজ শুরু হচ্ছে এবং ২০২৭ সালে প্রকাশ পাবে ফলাফল।
কাজিরাঙার বিপুল বনভূমি ও খাদ্য সংস্থান বাঘদের বসবাসের জন্য আদর্শ বলে মনে করেন গবেষকরা। শূকর, চিতল, বন্য মোষ ও সাম্বর হরিণের মতো প্রজাতির আধিক্য বাঘের টিকে থাকার পক্ষে সহায়ক।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জ্যেষ্ঠ ট্যুর গাইড বিতোপন কলঙে জানান, “কাজিরাঙায় বাঘ পর্যটনের পরিবেশ ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে। একসময় কেবল গণ্ডারের জন্য পর্যটকরা আসতেন, এখন বাঘ দর্শনের জন্যও অনেকে ভিড় করছেন।”
স্থানীয় পর্যটন উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত বিতোপন গগৈ জানান, “বাঘের উপস্থিতি কাজিরাঙার পর্যটনকে এক অন্য রূপ দিয়েছে। শচীন টেন্ডুলকারের সোনালী বাঘ দেখার খবর ভাইরাল হওয়ার পর উৎসাহ আরও বেড়েছে।”
২০১০ সালে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক সম্মেলনে ২৯ জুলাইকে আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই দিবস উপলক্ষে বাঘ সংরক্ষণের গুরুত্বকে আরও একবার সামনে আনলো কাজিরাঙা, যেখানে গণ্ডারের পাশাপাশি বাঘও হয়ে উঠছে পর্যটনের নতুন তারকা।
আরও পড়ুন: দেশে তৃতীয় সর্বাধিক বিদেশি পর্যটক পশ্চিমবঙ্গে! ২০২৩–২৪-এ রেকর্ড ৩২ লক্ষ আগমন