ভারত: ২৯৮-৭ (শেফালি বর্মা ৮৭, দীপ্তি শর্মা ৫৮, স্মৃতি মন্ধানা ৪৫, আয়াবোঙ্গা খাকা ৩-৫৮)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২৪৬ (৪৫.৩ ওভার) (লরা উলভার্ট ১০১, আনেরি ডার্কসেন ৩৫, দীপ্তি শর্মা ৫-৩৯, শেফালি বর্মা ২-৩৬)
মুম্বই: ইতিহাস গড়ে দিল ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল! দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা জিতল হরমনপ্রীত কৌর বাহিনী। ২৯৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস গুটিয়ে যায় ৪৫.৩ ওভারে ২৪৬ রানে। মহিলাদের একদিনের ক্রিকেটে প্রথম বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কৃতিত্ব ভারত অর্জন করল হরমনপ্রীত কৌরের নেতৃত্বে।

দীপ্তি প্রমাণ করলেন তিনি শ্রেষ্ঠ অলরাউন্ডারদের মধ্যে অন্যতম। ছবি BCCI Women ‘X’ থেকে নেওয়া।
দীপ্তি ‘প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ’, শেফালি ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’
এই জয়ে ভারতের সকলের অবদান থাকলেও দু’জনের নাম বিশেষ করে করতে হয়। তাঁরা হলেন দীপ্তি শর্মা এবং শেফালি বর্মা। ব্যাটে-বলে, দুই বিভাগেই খেল দেখালেন তাঁরা। প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে দীপ্তি ছিলেন অপরাজিত ৫৮ রানে। তার পর একাই দক্ষিণ আফ্রিকার পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। দীপ্তি পেলেন ‘প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ’ সম্মান।
একই সঙ্গে বলতে হয় ওপেনার শেফালি বর্মার কথা। ভারতীয় দলের নিয়মিত ওপেনার প্রতিকা রাওয়াল চোট পেয়ে বিশ্রামে চলে যাওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল ম্যাচে সুযোগ পান শেফালি। ফাইনালে খেললেন দারুণ এক ইনিংস — ব্যাট করে করলেন ৭৮ বলে ৮৭ রান। মহিলাদের একদিনের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে দ্বিতীয় দ্রুততম অর্ধশত রান করলেন শেফালি। একই সঙ্গে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে সর্বকনিষ্ঠ হিসাবে ৫০ রান করার কৃতিত্বও অর্জন করলেন। ব্যাটিংয়ের পর তুলে নিলেন দু’ উইকেট। ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হলেন শেফালি।

এই জয়ে সমান কৃতিত্ব শেফালিরও। ছবি BCCI Women ‘X’ থেকে নেওয়া।
লরা উলভার্টের শতরান বৃথা গেল
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে শুরুটা ছিল দারুণ। ওপেনার লরা উলভার্ট (১০১) এবং তাজমিন ব্রিটস (২৩) ভালো সূচনা দিলেও ব্রিটসের রানআউট দলের বিপর্যয় ডেকে আনে। এর পর উলভার্ট একাই লড়াই চালিয়ে যান, কিন্তু দীপ্তির ঘূর্ণিতে থেমে যায় তার শতরানের ইনিংস। এর পর আনেকে বশ-কে শ্রী চরনি আউট করার পর শেফালি একে একে তুলে নেন সুনে লুস ও মেরিজানে ক্যাপকে। এর এর দীপ্তির পালা। তিনি পর পর ফেরান সিনালো জাফটা, আনেরি ডার্কসেন ও ক্লোয়ি ট্রায়নকে। শেষ পর্যন্ত নাদিন দে ক্লার্ককে ফিরিয়ে দিয়ে দীপ্তি সম্পন্ন করেন তাঁর পাঁচ উইকেটের কীর্তি।
জয়ে অবদান স্মৃতি-রিচারও
ভারতের ইনিংসে শুরুটা ছিল দাপুটে। শেফালি ও স্মৃতি মন্ধানা মিলে প্রথম ১০ ওভারে ৬৪ রান তোলে। মন্ধানা (৪৫) আউট হওয়ার পর কিছুটা ছন্দপতন হলেও শেফালি অর্ধশতক ছুঁয়ে দলকে বড় স্কোরের ভিত গড়ে দেন। শেষ দিকে বঙ্গসন্তান রিচা ঘোষের ২৪ বলে ৩৪ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভারত প্রায় ৩০০ রানের লড়াকু স্কোর। সেমিফাইনালের অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জয়ের নায়িকা জেমিমা রড্রিগুয়েজ এ দিন ৩৭ বলে ২৪ রান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে মারিজানে ক্যাপ, খাকা ও দে ক্লার্ক প্রত্যেকে নেন দুটি করে উইকেট।

জয়ের আনন্দে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছেন অধিনায়ক হরমনপ্রীত এবং সহ-অধিনায়ক স্মৃতি। ছবি BCCI Women ‘X’ থেকে নেওয়া।
এ দিন বৃষ্টির কারণে টস হয় বিকেল ৪টা ৩২ মিনিটে। দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক লরা উলভার্ট টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে ভারতের ব্যাটাররা তাঁর সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করে দিলেন।
সেমিফাইনালে ভারত হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে আর দক্ষিণ আফ্রিকা ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল। কিন্তু নবি মুম্বইয়ের ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে নিজেদের অজেয় রেকর্ড বজায় রেখে শেষ হাসি হেসেছে ভারতই।
আরও পড়ুন
অর্শদীপের বল আর ওয়াশিংটনের ব্যাটের জোরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি২০ সিরিজে সমতা ফেরালেন সূর্যেরা


