Homeপ্রবন্ধ'উন্নয়নযজ্ঞ' চলছে সর্বত্র, বিপদ ধেয়ে আসছে দ্রুতগতিতে

‘উন্নয়নযজ্ঞ’ চলছে সর্বত্র, বিপদ ধেয়ে আসছে দ্রুতগতিতে

প্রকাশিত

বিনায়ক চৌধুরী

কয়েক মাস আগে সামসিং চা বাগানের দিকে রাতের অন্ধকারে একটি বাঘের হেঁটে যাওয়ার ভিডিও শেয়ার করেছিলাম ব্যক্তিগত মাধ্যমে। আশঙ্কা সত্যি করে বেরোল রিপোর্ট, বাঘের উপস্থিতি মিলছে নিয়মিত। এই অঞ্চলে লেপার্ড, হিমালয়ান ভাল্লুকের মতো মাংসাশী প্রাণীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রয়াল বেঙ্গল টাইগার। ফলত খাদ্যের জোগান যে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে তা নিশ্চিতরূপে বলা যায়।

আশঙ্কা বলছি, কারণ এই বন্যপ্রাণীদের স্বাভাবিক আবাসে টান পড়ছে খাবারে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রাণীরা নেমে আসছে অপেক্ষাকৃত নীচের অংশে। নেমে আসছে কারণ আমাদের দেশে সরকারি বা বেসরকারি ভাবে জঙ্গলের জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

যে কয়েকটা ব্যাপার মনে করতে পারলাম:

১. সুকনায় এলিফ্যান্ট করিডোর এক রকম প্রায় বন্ধ হতে বসেছে। চিকেন নেক হওয়ার কারণে নিরাপত্তার খাতিরে খুব গুরুত্বপূর্ণ এই গোটা অংশ।

২. সেবক-রংপো রেললাইন প্রজেক্টের জন্য সংকটে মহানন্দা ওয়াইল্ডলাইফ পার্ক। তৈরি হচ্ছে একাধিক টানেল, জঙ্গল নিধন হচ্ছে দ্রুত।

৩. অল ওয়েদার কংক্রিট রোডের জন্য নির্বিচারে ধ্বংস হচ্ছে কালিম্পং জেলার একটা বিরাট অংশের সেই সুন্দর রাস্তা। জঙ্গলের বুক চিরে যাওয়া সেই বিখ্যাত রাস্তা আজ অতীত।

৪. রিয়েলটার জায়েন্টের প্রকল্প সবুজ সংকেত পেয়ে যাচ্ছে গরুমারা জাতীয় উদ্যানের ঠিক বাইরেই।

teesta

৫. তিস্তায় একের পর এক বাঁধ দিয়ে তার স্বাভাবিক গতি নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে সেই কবে থেকেই। এ বার একে একে রঙ্গিতের মতো অন্যান্য শাখানদীতেও বসতে চলেছে বাঁধ।

৬. উন্নয়নযজ্ঞ চলছে গজলডোবায়। তৈরি হচ্ছে সুদৃশ্য হ্যাঙ্গিং ব্রিজ, ঝাঁ চকচকে রাস্তাঘাট আরও কত কিছু।

এমন আরো কত শত প্রজেক্ট যে কেড়ে নিচ্ছে বন্যপ্রাণীর অধিকার, তার ইয়ত্তা নেই। তৈরি হবে বিদ্যুৎ, সড়ক, আবাস, নিরাপত্তা ব্যবস্থা-সহ নানা পরিকাঠামো। বন্যা আমাদের কিছু শেখাতে পারেনি, ধসও শেখাতে পারেনি। আর কী শেখাতে পারবে আমাদের? মাধ্যমিকের সময়ে শর্টকাট রাস্তায় দাঁতালের হানায় প্রাণ গিয়েছিল পরীক্ষার্থীর।

সাধারণ মানুষ জানতেও পারে না কী ঘটে চলেছে পাহাড়ে-জঙ্গলে-নদীতে-সমুদ্রে, নির্বিচারে। আর আমরা প্রশ্ন করছি তাপমাত্রা কেন বাড়ল?

কাজের সূত্রে উত্তরবঙ্গের প্রতিনিয়ত আপডেট পাই। শহুরে মিডিয়া যার কোনো পাত্তাই করে না। যে ভাবে রেললাইনে কান পাতলে অনেক দূর থেকে ট্রেনের ছুটে আসা কানে ধরা পড়ে, ঠিক সে ভাবেই আমি শুনতে পাই বিপদের ধেয়ে আসা দ্রুতগতিতে। সেই দিনটা খুব দূরে কি?

আরও পড়ুন

৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ‘রিয়াল ফিল’-এই ঘাবড়ে গেলেন? অতীতে ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসও দেখেছে কলকাতা

সাম্প্রতিকতম

মহারাষ্ট্রের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস, ঘোষণা করে দিলেন বিজেপি নেতা

মহারাষ্ট্রের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেবেন্দ্র ফড়নবীসের নাম ঘোষণা করলেন বিজেপি নেতা সুধীর মুঙ্গন্তিওয়ার। সোমবার...

বিধানসভায় মুখোমুখি মমতা-রাজ্যপাল, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে সৌজন্যের বার্তা

অবশেষে মুখোমুখি হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সোমবার বিধানসভায় উপনির্বাচনে...

আদানি ইস্যুতে কংগ্রেসকে এড়িয়ে গেল তৃণমূল, সংসদে বিরোধীদের বিভাজন স্পষ্ট

সোমবার সংসদে কংগ্রেসের নেতৃত্বে হওয়া বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র বৈঠক থেকে দূরে থাকল তৃণমূল কংগ্রেস।...

রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে বাংলাদেশে শান্তিসেনা পাঠানোর আর্জি জানাক কেন্দ্র, বিধানসভায় প্রস্তাব মমতার

কলকাতা: বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার বিধানসভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিলেন...

আরও পড়ুন

পরমাণু অস্ত্রবিরোধী সংগঠন নিহন হিদানক্যো কে শান্তির জন্য নোবেল, এতদিন বাদে কেন?

জাপানের পরমাণু অস্ত্রবিরোধী সংগঠন নিহন হিদানক্যো ২০২৪ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে, ইরানের সাম্প্রতিক পারমাণবিক অবস্থানের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী নিরস্ত্রীকরণের জরুরি প্রয়োজনকে সামনে আনছে।

আরজি কর আন্দোলন: রাজ্য-রাজনীতিতে সিপিএমের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ

গত এক দশকে বাংলার রাজনীতিতে সিপিএমের অবস্থান অনেকটাই কোণঠাসা। রাজ্যের বিধানসভা ভোটে শূন্য আসন...

আরজি কর কাণ্ডে নীরবতা কেন? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ঘটে যাওয়া বিতর্কিত ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শুধু কি বিষয়টি বিচারাধীন বলে, না কি এর পেছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে?
কেন লক্ষ্মীর পাঁচালি পাঠ করা হয় রতন টাটার সেরা উক্তি যা আপনাকে অনুপ্রাণিত করবে