মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার (৬-৮ জুন) অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI)-এর মুদ্রানীতি কমিটির (MPC) বৈঠক। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, তিন দিনের এই বৈঠকে সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।
অপরিবর্তিত থাকবে কি
আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের এমপিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ৪৩তম বৈঠকের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে ৮ জুন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার। রেপো রেট নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্ত ওই দিনই জানা যাবে। বলে রাখা ভালো, এর আগে এপ্রিলে অনুষ্ঠিত শেষ এমপিসি সভায়, আরবিআই সুদের হার বৃদ্ধি স্থগিত রেখেছিল।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এপ্রিল মাসে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি হ্রাস এবং এতে আরও স্বস্তির মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের মূল সুদের হার অর্থাৎ রেপো রেট ৬.৫ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবেই এটা সাম্প্রতিক অতীতে নেওয়া পদক্ষেপের কার্যকারিতার ইঙ্গিত হতে পারে।
এমনিতে, ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI)-ভিত্তিক খুচরো মূল্যস্ফীতি এপ্রিলে ১৮ মাসের সর্বনিম্ন ৪.৭ শতাংশে নেমে আসার পরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্প্রতি, আরবিআই গভর্নর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে মে মাসে এই সংখ্যা এপ্রিলের থেকেও কমতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্ষার অগ্রগতির উপরও নজর রাখছে আরবিআই। ‘এল নিনো‘ খরিফ ফসলের উপর কতটা প্রভাব ফেলে, সেটা দেখতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।
রেপো রেট বৃদ্ধি
গত ৮ ফেব্রুয়ারি রেপো রেট ২৫ বিপিএস বৃদ্ধি করেছিল আরবিআই। তার আগে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মুদ্রানীতি পর্যালোচনায়, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক মূল সুদের হার ৩৫ বিপিএস বাড়িয়েছিল। তার পরে রেপো রেট ৬.২৫ শতাংশ হয়েছিল। গত বছরের মে থেকে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক স্বল্পমেয়াদী ঋণের হার ২২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে। টানা ষষ্ঠ বার বৃদ্ধির ফলে রেপো রেট এখন দাঁড়িয়ে রয়েছে ৬.৫০ শতাংশে।
রেপো রেট কী
আরবিআই যে হারে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ দেয় তাকে রেপো রেট বলা হয়। আবার বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি যে হারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে ঋণ দেয় তাকে বলা হয় রিভার্স রেপো রেট।
সাধারণত, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের রেপো রেট কমানোর পরই বিভিন্ন ব্যাঙ্কগুলি নিজেরে সুদের হারে পরিবর্তন নিয়ে আসাটাই রীতি। ফলে রেপো রেট বাড়লে তার সরাসরি প্রভাব এসে পড়ে ঋণ শোধের প্রক্রিয়ায়। ঠিক এই কারণেই রেপো রেট বৃদ্ধি পেলে বাড়ি কিংবা গাড়ি কেনার ইএমআই বেড়ে যেতে পারে।