বিয়ের মতো চির বন্ধনের সম্পর্ক ইদানিং কেমন যেন ঠুনকো হয়ে গিয়েছে। খুব সামান্য বিষয়ে মতের অমিল হলেই এখন বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছেন অনেক দম্পতি। এখনকার অধিকাংশ দম্পতি নিজের অবস্থান থেকে এক চুলও সরতে চান না। তাই বিয়ের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নির্দ্বিধায় চোখের পলকে ভেঙে দিচ্ছেন অনেকেই।
তবে অনেক সময়ে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ থেকেও জড়িয়ে পড়ছে অন্য সম্পর্কে। সেখান থেকেই সূত্রপাত সংসার ভাঙনের।
কিন্তু এই সমস্যার সমাধান করতে কয়েকটি দরকারী টিপস বরং জেনে নিন।
১। ফোন বা ইন্টারনেটে অত্যাধিক আসক্তি-
আপনার সঙ্গী ফোনের পেছনে কতটা সময় ব্যয় করছেন সেদিকে নজর রাখুন। একসাথে বসে থেকে বা ঘুরতে গেলে যদি তিনি ফোন নিয়েই ব্যস্ত থাকেন, মেসেজ বা ইন্টারনেট ব্রাউজিং করেন- তাহলে তা নিশ্চিতভাবে অন্য একটি সম্পর্কেরই ইঙ্গিত। এছাড়া দিনের বেশিরভাগ সময়ে যদি তাকে ফোনালাপে ব্যস্ত পাওয়া যায় তাহলেও বিষয়টি লক্ষণীয়। অনেকে বলতে পারেন কাজের প্রয়োজনে মানুষ ফোন বেশি ব্যবহার করতেই পারে।
কিন্তু একটি বিষয় মনে রাখবেন, কাজের প্রয়োজনে ফোনালাপ এবং কারোর সাথে প্রেমময় ফোনালাপের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে এবং এই পার্থক্য বোঝার মত ক্ষমতাও বিবাহিত প্রত্যেক মানুষের হওয়া উচিত। শুধুমাত্র ফোন নয়, ফেসবুক কিংবা অন্যান্য যোগাযোগের মাধ্যমের প্রতি আসক্তির মাত্রার ওপরও নজর দেবেন।
২। আপনাকে ও পরিবারকে আগের তুলনায় কম সময় দিলে-
সঙ্গী যদি আপনাকে আগের চেয়ে কম সময় দেওয়া শুরু করেন, তাহলে এটিও একটি লক্ষণ হিসেবে ধরে নেওয়া যায়। খুব ভালো করে আপনার সঙ্গীর প্রতিদিনকার কাজকর্ম লক্ষ্য করুন। যদি বুঝতে পারেন যে আগের চাইতে কম সময় পাচ্ছেন, তাহলে বোঝার চেষ্টা করুন সেই বাড়তি সময়টা তিনি কীভাবে ব্যয় করছেন। আপনি তাকে সময় দেওয়ার কথা বলে দেখুন, একসঙ্গে বসে টিভি দেখার কথা বলুন ও কোথাও বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করুন, আত্মীয় স্বজনদের ও পারিবারিক বন্ধুদের সময় দেওয়ার কথা বলুন।
তিনি যদি আপনাকে অজুহাত দেখিয়ে না বলেন তাহলে জানার চেষ্টা করুন অজুহাতটি সত্যি কিনা। সঙ্গী যদি পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করে বিনা কারণে, তাহলে ধরে নিতে পারেন তিনি পরকীয়ায় লিপ্ত। অবশ্য তিনি নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলে সেটা আলাদা বিষয়। এই পার্থক্যটা আপনাকেই বুঝতে হবে। তবে একটু সময় নিয়ে নোটিশ করুন। এই স্পর্শকাতর বিষয়গুলিতে কোনো তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নেবেন না।
৩। হঠাৎ নিজের সৌন্দর্য সম্পর্কে অতিরিক্ত সচেতন-
আপনার স্বামী বা স্ত্রী যদি হঠাৎ নিজের ত্বক, সাজগোজ, কিংবা পোশাকের দিকে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে শুরু করেন, তাহলে আপনি একে পরকীয়ার একটি লক্ষণ হিসেবে ধরে নিতে পারেন। এখানে একটি বিষয়ে পরিষ্কার হওয়া দরকার যে সঙ্গী আপনার জন্যই নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করছেন কিনা। কারণ অনেক স্বামী বা স্ত্রী আছেন যারা দাম্পত্য জীবনে পুনরায় রোমান্স ফিরিয়ে আনতে এই পন্থা বেছে নেন। কিন্তু আপনি এই দ্বিধাবোধের অবসান করতে পারেন কয়েকটি প্রশ্নের মাধ্যমে।
তা হল, আপানার স্বামী বা স্ত্রী কি আপনার পছন্দ অনুযায়ী নিজেকে উপস্থাপন করছেন। তিনি কি শুধুমাত্র আপনাকে দেখানোর জন্যই বিশেষ পোশাক ও সাজগোজ করছেন। সব বিষয়ে আগে খুটিয়ে বিচার করুন।
৪। নতুন কোনও নাম-
আপনার সঙ্গীটির মুখে যদি নতুন কোনও একটি নাম ঘন ঘন শুনতে পান, তবে এটাও পরকীয়ার একটা ইঙ্গিত। সঙ্গীর যে বন্ধুটির কথা আগে কখনো শোনেননি, এমন কারোর কথা ঘনঘন শুনলে তাকে জিজ্ঞেস করুন এবং তার মুখের ভাব লক্ষ্য করুন। যদি তিনি প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান, কিংবা তার মুখের অভিব্যক্তি বদলে যায় তবে বিষয়টি কিন্তু অবশ্যই চিন্তার।
৫। অকারণে রেগে যাওয়া-
আরও একটি বিষয় আছে যা বিশেষ ভাবে লক্ষণীয়। তা হল আপনার সঙ্গীর কথায় রাগের সুর। খেয়াল করে দেখুন তো, আগে যে বিষয়গুলো আপনার সঙ্গীর রাগের লক্ষণ ছিল না সেইসব বিষয়ে কি তিনি এখন রেগে যাচ্ছেন? কিংবা কথায় কথায় আপনাদের দাম্পত্য জীবনকে অভিশাপ হিসেবে অভিহিত করছেন? তার এইসব কথার কোনও যুক্তি আছে কিনা এইসব ব্যাপারগুলো লক্ষ্য করুন। বিনা কারণে অযৌক্তিক রাগ করা, কিংবা সবসময় খিটখিট করা পরকীয়ার অন্যতম লক্ষণ।
সম্পর্কে সমস্যা? সমাধানে পড়ুন আমাদের সম্পর্ক বিভাগের লেখাগুলি।