Home জীবন যেমন সম্পর্ক বিশ্ব জুড়ে কেন পালিত হয় ভ্যালেন্টাইন্স ডে? জেনে নিন এই দিনটির উৎস...

বিশ্ব জুড়ে কেন পালিত হয় ভ্যালেন্টাইন্স ডে? জেনে নিন এই দিনটির উৎস ও ইতিহাস সম্পর্কে

0

প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্বজুড়ে পালিত হয় ভ্যালেন্টাইন্স ডে। এই দিনটিতে প্রত্যেকেই তাদের প্রিয়জনের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে। তবে, প্রায় বেশিরভাগ মানুষ এটা মনে করেন যে, এই দিনটি কেবল মাত্র প্রেমিক-প্রেমিকা ও দম্পতিদের জন্য। এটি একদমই সত্য নয়।

যে কেউ এই দিনে তাদের প্রিয়জনকে শুভেচ্ছা জানাতে পারেন। সে যে কেউ হতে পারে, যেমন – পরিবারের সদস্য, বন্ধু, ভাই-বোন এবং অন্যান্য ব্যক্তি। যারা প্রত্যেকের জীবনে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন কর থাকেন।

প্রতিবছরই ফেব্রুয়ারি মাসে এক সপ্তাহ জুড়ে প্রেমের বসন্তে মেতে ওঠেন সকলে। কিন্তু, কেউ কি জানেন কেন পালন করা হয় এই ভ্যালেন্টাইন্স ডে? এক সপ্তাহ ধরে ভালোবাসা দিবস পালনের পেছনে কি ইতিহাস রয়েছে বরং জেনে নেওয়া যাক।

উৎস-

দিনটির নামকরণ করা হয়েছে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামানুসারে। পঞ্চম শতাব্দীর শেষের দিকে পোপ গেলাসিয়াস ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ভ্যালেন্টাইন্স ডে হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।

ইতিহাস-

যদি ইতিহাসের পাতাগুলি উল্টে দেখি তবে দেখতে পাব যে, তৃতীয় শতাব্দীর সময় রোমের বাসিন্দা, পুরোহিত ও চিকিৎসক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আত্মত্যাগের স্মরণে উদযাপিত হয়েছিল এই দিনটি। যিনি ছিলেন একজন ধর্ম প্রচারকও। পাশাপাশি তিনি রোমান সৈন্যদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য বিবাহের অনুষ্ঠানও করতেন।

দ্বিতীয় ক্লডিয়াস ছিলেন একজন রোমান সম্রাট। যিনি বিশ্বাস করতেন যে, অবিবাহিত সৈন্যরা বিবাহিতদের চেয়ে বেশি দক্ষ, তাই তাদের বিয়ে করতে নিষেধ করেছিলেন। তিনি একটি আইন তৈরি করেন যাতে বলা ছিল, সেনাবাহিনীতে চাকরি করা যুবকেরা বিয়ে করতে পারবে না। ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইন যখন এই আইন সম্পর্কে জানতে পারেন তখন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, এই আইনটি অন্যায়। তাই যে সকল সৈন্যরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চান। তাদের জন্য গোপনে বিবাহের কাজ চালিয়ে যান তিনি। পাশাপাশি তিনি অন্যান্য মানুষের মধ্যেও ভালোবাসা জাগিয়ে তুলতে প্রচার শুরু করেন। কিন্তু, খুব তাড়াতাড়িই দ্বিতীয় ক্লডিয়াস সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের এই কাজ সম্পর্কে জানতে পারেন এবং ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদন্ড দেওয়ার আদেশ দেন। যিনি প্রেমের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন, সেই সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আত্মত্যাগকে স্বীকার করে সেখানকার মানুষেরা তাঁকে একটা দিন উৎসর্গ করার কথা ভাবে।

এছাড়া আরও একটি গল্প আছে। যেখানে বলা হয়েছে যে, সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে ধর্ম প্রচারের মামলায় অভিযুক্ত করে কারাবাসে পাঠানো হয়। কারাবাসে থাকার সময় তাঁর চিকিৎসার জাদুতে একজন কারারক্ষীর অন্ধ মেয়ের দৃষ্টি তিনি ফিরিয়ে দেন। এরপরেই সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে মেয়েটির পরিবারসহ অনেকেই খ্রীস্টধর্ম গ্রহণ করেন এবং মেয়েটির সঙ্গে ভ্যালেন্টাইনের একটি সম্পর্ক তৈরি হয়। সেখানকার রাজার কানে এই খবর পৌঁছোনো মাত্রই, আইনকে অমান্য করে ধর্ম প্রচারের অপরাধের জন্য ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। তাঁর মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়ার আগে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন মেয়েটিকে উদ্দেশ্য করে একটি চিঠি লেখেন, সেই চিঠির শেষে না কি লেখা ছিল ‘লাভ ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন’। সেই থেকে মানুষ তাঁর নামটিকে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করে। পরে পোপ গেলাসিয়াস প্রথম এই দিনটিকে ভ্যালেন্টাইন্স ডে হিসেবে ঘোষণা করেন।

এই দিবসটি পালন করার কারণ-

পঞ্চদশ শতাব্দীতে প্রেম নিবেদনের জন্য ‘ভালোবাসা’ শব্দটি প্রেমের কবিতা এবং গল্পগুলিতে ব্যবহৃত হত। ভ্যালেন্টাইন নামসহ বেশ কয়েকটি বই, গল্প এবং কবিতা আকারে আঠারো শতকে প্রকাশিত হয়েছিল এবং এটি বিশেষত যুব সমাজের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় ছিল। উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে লেখাগুলি গ্রিটিংস কার্ডের মাধ্যমে প্রচারিত হল।

এই দিনটির প্রধান উদ্দেশ্য হল, প্রিয়জনকে কয়েকটা দিন উৎসর্গ করা। ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা প্রকাশের জন্য মানুষ সাধারণত এই দিনটি উদযাপন করে। এই উদযাপন সাতদিন ধরে চলে। পুরো সপ্তাহটাই ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহ হিসেবে পরিচিত এবং মানুষ একে অপরকে উপহার ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র বিভিন্ন কাহিনী জানতে পড়ুন খবর অনলাইন।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version