Home খবর বিদেশ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন ট্রাম্প

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন ট্রাম্প

0

মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানা গিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার বিষয়ে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যেতেই এই বৈঠক। এর আগে সোমবার, ক্রেমলিন জানিয়েছে, ইউক্রেনকে সদস্যপদ না দেওয়ার ব্যাপারে ন্যাটোকে ‘লৌহ কঠিন’ গ্যারান্টি দিতে হবে এবং ইউক্রেনকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে।

ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা দেখতে চাই, এই যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব কিনা। হয়তো পারব, হয়তো পারব না। তবে আমি মনে করি, ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। আমি মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলব। গত সপ্তাহে এ বিষয়ে অনেক কাজ হয়েছে।”

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তাতে সম্মতি জানিয়েছেন। রাশিয়াও নীতিগতভাবে এ প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। তবে পুতিন বলেছেন, চুক্তি স্বাক্ষর করার আগে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।

রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার গ্রুশকো জানান, যেকোনো স্থায়ী শান্তিচুক্তিতে মস্কোর নিরাপত্তা চাহিদা অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। তিনি বলেন, “আমরা চাই, কঠোর নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এই চুক্তির অংশ হোক।”

গ্রুশকো আরও বলেন, “এই নিরাপত্তা নিশ্চয়তার মধ্যে ইউক্রেনের নিরপেক্ষ অবস্থান এবং ন্যাটোর সদস্যপদ প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি থাকতে হবে।”

মার্কিন শান্তি প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় পুতিন বলেন, “আমরা সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের ধারণাকে অবশ্যই সমর্থন করি। তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে, যেগুলো নিয়ে আমাদের আলোচনা করতে হবে।”

১৪ মার্চ ট্রাম্প জানান, পুতিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে এবং তিনি আশা করছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শীঘ্রই শেষ হতে পারে। ট্রাম্প বলেন, “রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে খুবই ভালো ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে আমাদের। আমি মনে করি, এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষ হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।”

পুতিন যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা নিয়ে মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের মাধ্যমে ট্রাম্পকে বার্তা পাঠিয়েছেন এবং বলেছেন যে একটি সমঝোতা হওয়ার বিষয়ে তিনি ‘সতর্ক আশাবাদী’।

এ দিকে, জেলেনস্কি এই যুদ্ধ দ্রুত শেষ হওয়ার আশা প্রকাশ করলেও পুতিনের শর্ত আরোপের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “পুতিন আসলে ট্রাম্পকে সরাসরি বলতে ভয় পাচ্ছেন যে তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান। তাই মস্কো যুদ্ধবিরতির ধারণাকে এমন সব শর্তে ঘিরে ফেলছে, যাতে হয় এটি ব্যর্থ হয়, নয়তো দীর্ঘায়িত হয়।”

জেলেনস্কি আরও বলেছেন যে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব নিয়ে কোনো আপস হবে না এবং রাশিয়াকে দখল করা ভূখণ্ড ফেরত দিতেই হবে। ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করে এবং ২০২২ সালের আক্রমণের পর থেকে চারটি পূর্ব ইউক্রেনীয় অঞ্চলের বেশিরভাগই নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।

ট্রাম্প বলেন, “আমরা ভূখণ্ড নিয়ে কথা বলব। আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আলোচনা করব।”

এর আগে, সৌদি আরবের জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা দীর্ঘ বৈঠক করেন, যেখানে উভয় দেশ সম্পর্ক মেরামতের বিষয়ে একমত হয়। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার কথা বলা হয়। তবে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এই আলোচনার ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে বলেন, কিয়েভের অংশগ্রহণ ছাড়া নেওয়া কোনো সিদ্ধান্তই গ্রহণযোগ্য নয়।

এরপর ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে এবং তীব্র বাকযুদ্ধ শুরু হয়। এমনকি ট্রাম্প জেলেনস্কিকে এক পর্যায়ে ‘স্বৈরাচারী’ বলেও অভিহিত করেন। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে হোয়াইট হাউসে হওয়া এক বৈঠকের পর জেলেনস্কিকে বেরিয়ে যেতে বলা হয়।

তবে পরে জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি নিজের মনোভাব কিছুটা নমনীয় করলেও তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version