খবর অনলাইন ডেস্ক: জাপানি সংগঠন ‘নিহন হিদানকিও’-কে ২০২৪ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হল। ১৯৪৫-এর জাপানের হিরোশিমা-নাগাসাকিতে মার্কিন পরমাণু বোমা বিস্ফোরণে যাঁরা বেঁচে গিয়েছিলেন তাঁদের বলা হয় ‘হিবাকুশা’। সেই ‘হিবাকুশা’রাই এই সংগঠনের সদস্য। ১৯৫৬ সালের ১০ আগস্ট গঠিত এই জাপানি সংগঠন পরমাণু বোমায় ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে কাজ করে।
নোবেল কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, পরমাণু অস্ত্রমুক্ত পৃথিবী গড়তে এই সংগঠন যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তার স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের এ বছরের নোবেল পুরস্কার দেওয়া হল। পৃথিবীকে পরমাণু অস্ত্র থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে অসামান্য কাজ করে চলেছে এই জাপানি গোষ্ঠী। পরমাণু অস্ত্র কতটা ক্ষতিকর তা বোঝানোর জন্য তারা নানা প্রচারমূলক কর্মসূচি চালায়। হিরোশিমা ও নাগাসাকির মতো ঘটনা যাতে আরও কোনোদিন কোথাও না ঘটে, তা সুনিশ্চিত করতে তারা যে নিরলস কাজ করে চলেছে তার ভূয়সী করেছে নোবেল কমিটি।
৬ আগস্ট, ১৯৪৫ সাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ প্রায় শেষের মুখে। হঠাৎই রাতারাতি ধ্বংস হয়ে গেল জাপানের একটি শহর। হিরোশিমায় আছড়ে পড়ল পরমাণু বোমা ‘লিটল বয়’। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। ঠিক তার তিন দিন পরেই আবার। ৯ আগস্ট আর-এক শহর নাগাসাকিতে আছড়ে পড়ল ‘ফ্যাট ম্যান’। নিমেষের মধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল দুটি শহর। কত মানুষ যে প্রাণ হারাল তার প্রকৃত হিসেব নেই। কিন্তু এর পরেও আছে। তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত হল অগণিত মানুষ। বছরের পর বছর, প্রজন্মের পর প্রজন্ম বয়ে নিয়ে চলল তেজস্ক্রিয়তার ক্ষত। তবে এরপর এই বিশ্বে বহু যুদ্ধ হয়েছে। কিন্তু কোনো যুদ্ধে কোনো দেশ পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের সাহস দেখায়নি।
নোবেল কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, চলতি বছরে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মোট ২৮৬টি আবেদন জমা পড়েছিল। তার মধ্যে ১৯৭টি আবেদন এসেছিল ব্যক্তিবিশেষকে সম্মাননার জানানোর এবং বাকি ৮৯টি বিভিন্ন গোষ্ঠী বা সংগঠনকে সম্মাননা জানানোর আবেদন। সব আবেদন বিবেচনা করে নোবেল কমিটি এ বছরের জন্য বেছে নিয়েছে পরমাণু বোমা নিয়ে কাজ করা এই জাপানি সংগঠনটিকে।


