নিউইয়র্ক: রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের (UNGA) ৭৮তম অধিবেশনে নিজের শেষ ভাষণে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন । মঙ্গলবার বক্তৃতা করার সময় তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ কারোরই স্বার্থে নয় এবং পরিস্থিতি সত্ত্বেও কূটনৈতিক সমাধান এখনো সম্ভব।
বাইডেন রাষ্ট্রসংঘের ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদকে বলেন, “পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ কেউ চায় না, কূটনৈতিক সমাধান এখনও সম্ভব”। তার এই বক্তব্যে লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের মধ্যে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের সম্ভাবনা সম্পর্কেও আশার কথা শোনা যায়।
বাইডেন আরও উল্লেখ করেন, রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের মূল উদ্দেশ্যেই ব্যর্থ হয়েছে। বাইডেন বলেন, “পুতিনের যুদ্ধ করার মূল লক্ষ্যেই ব্যর্থ হয়েছে। তিনি ইউক্রেনকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ইউক্রেন এখনো স্বাধীন”। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইউক্রেন জয় না পাওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র তাদের পাশে থাকবে এবং ন্যায্য, টেকসই শান্তির জন্য লড়াই করবে।
মধ্যপ্রাচ্যের প্রসঙ্গে বাইডেন বলেন, এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলে তা ইরানের পক্ষ থেকে আসা চলমান হুমকির মোকাবিলায় বিশ্বকে আরও শক্তিশালী অবস্থানে রাখবে। তিনি বলেন, “আমাদের একসঙ্গে ইরানের সন্ত্রাসবাদী আর তাদের সহযোগীদের কাছ থেকে আকাশ কেড়ে নিতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে না পারে।”
বাইডেনের এই ভাষণের সময়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রসঙ্গও উঠে আসে। ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে চলা নির্বাচনে ভোটাররা সিদ্ধান্ত নেবেন, ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস না প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের পরবর্তী অধিকারী হবেন।
বাইডেন নিজের বক্তব্যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের উদাহরণ হিসেবে ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ঘানার নাম উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমরা এই বছর দেখেছি ঘানা থেকে ভারত পর্যন্ত, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আরও অনেক দেশে, নাগরিকরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ভবিষ্যৎ বেছে নিচ্ছেন। এই বছরই বিশ্বের এক-চতুর্থাংশের মানুষ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।”
সাধারণ পরিষদের বক্তৃতায় তিনি বলেন, “এই গ্রীষ্মে আমাকে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল—আমি দ্বিতীয়বারের জন্য প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব কিনা। প্রেসিডেন্ট হওয়া আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্মান। আরও অনেক কিছু করার ইচ্ছা থাকলেও, ৫০ বছরের সরকারি সেবার পর আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এখন সময় এসেছে নতুন প্রজন্মের নেতৃত্বের। ক্ষমতা ধরে রাখার চেয়েও বড় কিছু রয়েছে, সেটা হল জনগণের সেবা”।