নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতার উত্তরে বরানগরের মাহাত্ম্য অপরিসীম। এই জায়গার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে গঙ্গা। এই গঙ্গা পথেই এসেছে বৈদেশিক নৌবহর। চারিদিকে আছে ছোট বড় অনেক মন্দির। এখানে একসময়ে চৈতন্য মহাপ্রভুও এসেছিলেন। এই স্থান শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসের পদধূলিতে ধন্য। যেন শাক্ত ও বৈষ্ণবের মিলন তীর্থ।
গঙ্গার ধারে এই জায়গায় আছে বরানগরের বিখ্যাত সব কালীমন্দির। ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহন করছে এখানকার নড়াইল জমিদারবাড়ি। এককালে অপার বৈভবের স্মৃতি আঁকড়ে ধরে রয়েছে নড়াইলের রায়বাড়ি।
পুলিনবিহারী রায় বর্তমান বাংলাদেশের খুলনা জেলা থেকে এসে এই অঞ্চলে জমিদারি কাজে বসতি গড়ে তোলেন। রামরতন রায় ছিলেন এই বাড়ির পূর্বপুরুষ, যাঁর নামে বর্তমানে রতনবাবু রোড। এখানেই রয়েছে নড়াইল রায়পরিবারের আনন্দময়ী কালীমন্দির। মন্দিরটি নির্মাণ করেন জমিদার পুলিনবিহারী রায়। এই মন্দিরে শ্রীরামকৃষ্ণও এসেছিলেন বলে শোনা যায়।
রায়বাড়ির সিংহফটক দিয়ে প্রবেশ করে কিছুটা এগোলে প্রথমে শিব ও রাধাকৃষ্ণের মন্দির চোখে পড়ে। এর ঠিক পাশেই অবস্থিত লাল রঙের আনন্দময়ী কালীমন্দির। মন্দিরটি বর্তমানে সম্পূর্ণভাবে সংস্কার করা হয়েছে। কালীমন্দিরটি খিলানযুক্ত দালান রীতির। সামনের অংশে প্রশস্ত সিঁড়ি। মন্দিরের ভেতর পঞ্চমুণ্ডির আসনের ওপর দেবীমূর্তি প্রতিষ্ঠিত।
নড়াইল জমিদারবাড়ির ফটক।
প্রতি অমাবস্যায় আনন্দময়ী কালীর বিশেষ পুজো করা হয়। কালীপুজোর সময় মহাসমারোহে পুজো অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন নিয়মরীতির মধ্যে রাত জেগে আরাধনা হয় কালীর। কালীপুজোর দিন এলাকার বহু মানুষ এখানে পুজো দিতে আসেন। মাকে নিজেদের সাধ্যমতো মিষ্টি ফল নিবেদন করেন।
পথনির্দেশ
বাসে বি টি রোড ধরে শ্যামবাজারের দিক থেকে ডানলপের দিকে গেলে সিঁথির মোড়ে নামতে হবে। সেখান থেকে কুঠিঘাটের অটোয় বরানগর বাজারে আসুন। এর পর চার-পাঁচ মিনিট পায়ে হেঁটে রতনবাবু রোড। কাছেই মন্দির। মেট্রোয় দমদম এসে সেখান থেকে অটোয় সিঁথির মোড় এসে চলে আসা যায় এই মন্দিরে।
আরও পড়ুন
কালীতীর্থ: চিৎপুরে ‘গিন্নিমা’ সিদ্ধেশ্বরী কালী