কলকাতা: জোকা-বিবাদী মেট্রো রুটে সখের বাজার স্টেশনের নাম বড়িশার নামে করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানাল সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার পরিষদ। এই অনুরোধ করে পরিষদের সম্পাদক দেবর্ষি রায় চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়েছেন।
ওই চিঠিতে দেবর্ষিবাবু বলেছেন, বড়িশার নামে নামকরণ সম্ভব না হলেও অন্তত যেন ‘বড়িশা সখেরবাজার’ করা হয়, যে ভাবে ‘শোভাবাজার সুতানুটি’ নামকরণ হয়েছে। বড়িশার নামে মেট্রো স্টেশনের নাম হলে বড়িশা তার প্রাপ্য সম্মানটুকু পাবে বলে মনে করেন দেবর্ষিবাবু।
সখের বাজার মেট্রো স্টেশনের নাম কেন বড়িশার নামে হওয়া উচিত, সে ব্যাপারে চিঠিতে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন দেবর্ষিবাবু। তিনি লিখেছেন, কলকাতার ইতিহাস ও ঐতিহ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ অনন্য পরিচিতি রয়েছে বড়িশার। খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতক থেকে এই জনপদ ক্রমশ বেড়ে উঠেছে এবং সামাজিক-ধর্মীয় সমন্বয়ের এক ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। সপ্তদশ শতকের গোড়ার দিকে সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের আমলে বড়িশা আরও বিখ্যাত হয়ে ওঠে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, কলকাতার প্রাচীনতম দুর্গাপূজা (১৬৯০) এবং কলকাতার প্রথম রথযাত্রার (১৭১৯) স্থান এই বড়িশা। এ ছাড়াও চণ্ডীপুজো (১৭৯২), দ্বাদশ শিবমন্দির ও রাধাকান্ত মন্দির (১৭৮০), অন্নপূর্ণা মন্দির (১৮৫০) সহ সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতকের আরও কিছু ঐতিহাসিক স্থাপত্যের জন্যও বড়িশা প্রসিদ্ধ স্থান।
এই বড়িশাতেই পা পড়েছে বিদ্যাসাগর, গান্ধীজি ও নেতাজির। কবি মোহিতলাল মজুমদার এবং বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলি এই বড়িশার মানুষ। তা ছাড়া এখানেই রয়েছে সাবর্ণ সংগ্রহশালা – ইতিহাস সংক্রান্ত এক অনন্য সংগ্রহশালা যা হাজার হাজার ছাত্র ও ইতিহাসপ্রেমীকে নানা ভাবে সমৃদ্ধ করে। আজ থিমপুজো ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য বড়িশার খ্যাতি চারি দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এই অঞ্চলের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি প্রত্যক্ষ করতে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লোক এই বড়িশায় ছুটে আসে।
সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার পরিষদের আশা, বড়িশার গুরুত্ব ও ভাবাবেগের কথা বিবেচনা করে মেট্রো স্টেশনের নাম পরিবর্তনের ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন।
আরও পড়ুন
মাত্র ১২ দিনে প্রায় সাড়ে ৫ সেমি ডুবেছে জোশীমঠ, বলছে উপগ্রহ চিত্র
গঙ্গা বিলাসের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী, ঘুরতে লাগবে কত খরচ?