কোলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) শিয়ালদা ফ্লাইওভার বা বিদ্যাপতি সেতুর মেরামত, রেট্রোফিটিং এবং পুনর্বাসনের জন্য একটি পাঁচ দফার নকশা তৈরি করেছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী ফ্লাইওভারকে ধাপে ধাপে মজবুত করা হবে এবং প্রতিটি ধাপে হকার ও ব্যবসায়ীদের অস্থায়ীভাবে সরানো হবে।
এক সরকারি আধিকারিক জানান, “হকারদের ধাপে ধাপে সরানো সম্ভব হলে পুজোর পর কাজ শুরু করা যাবে।”
কাজের মধ্যে থাকবে কার্বন ফাইবার র্যাপিং, পিয়ারে স্টিল জ্যাকেটিং এবং ডেক স্ল্যাব মেরামত। ফ্লাইওভারের বিম, কলাম ও স্ল্যাবে কার্বন ফাইবার রিইনফোর্সড পলিমার শিট লাগানো হবে, যাতে কাঠামোর শক্তি ও লোড বহনের ক্ষমতা বাড়ে। পিয়ারে স্টিল জ্যাকেট পরানো হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ডেক স্ল্যাব মেরামত করা হবে। সেতুর পিলারগুলি লোহার জ্যাকেট দিয়ে ঘিরে কংক্রিটের কাজ করা হবে, যাতে বোঝা বহনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
শিয়ালদা ফ্লাইওভারটি আশির দশকের গোড়ায় তৈরি হয়। একসময় এই ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে ট্রাম চলত, যদিও কয়েক বছর আগে তা বন্ধ হয়ে গেছে। কাজের সময় যাতে জলনিষ্কাশন ও পানীয় জলের পাইপলাইনের মতো ভূগর্ভস্থ পরিষেবাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা খতিয়ে দেখা হবে। একই সঙ্গে ধাপে ধাপে হকারদের কীভাবে সরানো যায়, তাও বিবেচনা করা হচ্ছে।
তবে ফ্লাইওভারের নিচে থাকা হকারদের অস্থায়ী পুনর্বাসনই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এক সরকারি আধিকারিক জানান, “একসঙ্গে সব হকারকে সরানো সম্ভব নয়। তাই প্রতি ধাপে ৬০-৭০ জন হকারকে সরানো হবে। কলকাতা পুরসভা এই অস্থায়ী পুনর্বাসনের দায়িত্বে থাকবে।”
বর্তমানে শিয়ালদা ফ্লাইওভারের নিচে প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ হকার ও ব্যবসায়ী অস্থায়ী দোকান চালান।
হকার্স ইউনিয়নের নেতা শক্তিমান ঘোষ বলেন, “পুজোর সময় ব্যবসা সবচেয়ে বেশি হয়। আমরা বুঝি ফ্লাইওভারের সুরক্ষা অগ্রাধিকার পেতে হবে। তবে পরিকল্পনাটি এখনও টাউন ভেন্ডিং কমিটিতে আলোচনা হয়নি। হাতে বিস্তারিত পরিকল্পনা পেলে সুবিধা হবে। পুজোর পর ধাপে ধাপে কাজ করলে ভালো হয়।”
আরও পড়ুন: পুজোর আগে নীল লাইনে ভিড় সামলাতে জেরবার মেট্রো কর্তৃপক্ষ, উৎসবের দিনগুলোতে কী হবে?