নয়াদিল্লি: একটি “অত্যন্ত মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়”-এ পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’। মঙ্গলবারও গুজরাত উপকূলের কাছাকাছি গ্রামগুলির বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ অব্যাহত। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বিকেলে কচ্ছ এবং পাকিস্তানের করাচির মধ্যে ল্যান্ডফল হতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়ের।
শুক্রবার ঘূর্ণিঝড়টি দক্ষিণ-পশ্চিম রাজস্থানে প্রবেশ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যে কারণে বেশ কিছু ট্রেন বাতিল করেছে উত্তর পশ্চিম রেলওয়ে। গুজরাতে ৫৬টি ট্রেন বালিত করা হয়েছে। তার আগে, সোমবার সন্ধ্যায়, খারাপ আবহাওয়ার কারণে বেশ কয়েকটি ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হওয়ার কারণে গত মুম্বইয়ের উড়ান চলাচল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। একটি কন্ট্রোল রুম খুলেছে রেলওয়ে। গুজরাতের বেশ কয়েকটি জেলায় রেল যোগাযোগ নিশ্চিত করতে ইমার্জেন্সি কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে।
আছড়ে পড়ার বহু আগে সোমবার থেকেই ‘বিপর্যয়’-এর প্রভাব শুরু হয়ে গিয়েছে কচ্ছ ও সৌরাষ্ট্র উপকূল-সহ গুজরাতের বিস্তীর্ণ এলাকায়। এমনকি সম্ভাব্য ল্যান্ডফল লোকেশনের বহুদূরে মুম্বইয়ের কোলাবা সৈকতে সোমবার বিকেল থেকে তৈরি হয়েছে জলোচ্ছ্বাস পরিস্থিতি। মুম্বইয়ের জুহু সৈকতের কাছে জলে ডুবে এক বালকের মৃত্যু হয়েছে, অন্য দু’জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আরও দু’জন নিখোঁজ। তাদের খোঁজ চলছে।
জাতীয় আবহাওয়া বিভাগের তরফে মৎস্যজীবীদের গুজরাত, কেরল, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র এবং লাক্ষাদ্বীপের উপকূলে সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইন অনুসারে, আসন্ন প্রতিকূল আবহাওয়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে জাহাজগুলিকে সতর্ক করার জন্য বন্দরগুলিকেও সংকেত দেখাতে হবে।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখে সোমবার একটি উচ্চপর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব মোকাবিলায় এখনও পর্যন্ত কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, বৈঠকে সেসব কথাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন সরকারি আধিকারিকরা। ঘূর্ণিঝড়ে প্রভাবিত হতে পারে এমন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারী লোকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সমস্ত সম্ভাব্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
ঘূর্ণিঝড়ে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির ক্ষেত্রে দ্রুত উদ্ধার কাজের জন্য প্রস্তুতির সঙ্গে সমস্ত প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলির চালু রাখার ব্যাপারে নিশ্চিত করতে বলেছেন মোদী। বিশেষত স্বাস্থ্য, পানীয় জল, টেলিকমিউনিকেশনের দিক থেকে যেন কোনও ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি না থাকে, তার বন্দোবস্ত করতেও বলা হয়। পাশাপাশি তিনি বলেন, পশুদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: মঙ্গলেও বৃষ্টির সম্ভাবনা, দক্ষিণে বর্ষা কবে আসবে অনিশ্চিত