গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ওড়িশার বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে ভয়াবহ দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল শালিমার স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। তার পর থেকেই বন্ধ এই দূরপাল্লার ট্রেন। মঙ্গলবার দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফ থেকে জানানো হল, বুধবার থেকে ফের চলবে করমণ্ডল এক্সপ্রেস।
এ দিন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য চৌধুরী জানান, বুধবার বিকেল সওয়া ৩টে নাগাদ আবারও শালিমার থেকে চেন্নাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেবে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। আগের পথেই চলবে এই ট্রেন। ফলে ট্রেনটি যাবে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাহানগা বাজার স্টেশনের উপর দিয়েও।
উল্লেখ্য, শুক্রবার করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় ২৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই এক্সপ্রেসে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষ। তাদের অনেকেই এখনও নিখোঁজ, অনেকে ওড়িশার হাসপাতালে ভর্তি। অনেককে এনে রাজ্যের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দিন দুপুরে কটকের হাসপাতালে ভর্তি রাজ্যের বাসিন্দাদের দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আহতদের দেখে বেরিয়ে মমতা জানান, এখনও ৯৭ জন ওড়িশার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বাংলার ১০৩ জনের দেহ শনাক্ত করা গিয়েছে। সামগ্রিক ভাবে তিনি ধন্যবাদ জানান ওড়িশার সরকারকেও। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ওড়িশায় রাজ্যের ৪০ জন আধিকারিক রয়েছেন। এই রাজ্যে ভর্তি আহতদের খেয়াল রাখছেন তাঁরা।
এর আগে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী জানান, “বাকি দেহ শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। আমরা ঠিক করেছি মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে দেব। আর হোমগার্ডের চাকরি দেব। যাঁরা আহত তাঁদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। তুলনায় বেশি আহতদের ১ লক্ষ টাকা দেব। তুলনায় কম আহতদের ২৫ হাজার দেব। যাঁরা ট্রমায় ভুগছেন তাঁদের প্রথমে এককালীন ১০ হাজার টাকা দেব। তারপর চার মাস পরিবার প্রতি ২ হাজার টাকা পাবে। পাশাপাশি চাল, ডাল, তেল সহ দেওয়া হবে। অনেকে হাত-পা বাদ গিয়েছে এই দুর্ঘটনায়। সংশ্লিষ্টদের জন্য বিশেষ সুবিধা থাকছে। তাঁদের পরিবারের কাউকে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হবে”।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে ওড়িশায় বালেশ্বরের কাছে বাহানগা বাজারে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। একই সঙ্গে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় একটি মালগাড়িও। মালগাড়ির কামরার উপরে উঠে যায় করমণ্ডলের ইঞ্জিন। এই তিন ট্রেনের দুর্ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই।
আরও পড়ুন: প্রবল গরমে পুড়ছে বাংলা, অস্বস্তিকর আবহাওয়া আর কত দিন