খবর অনলাইন ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টে অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আপাতত ১ জুন পর্যন্ত তিনি জামিনে থাকবেন। চলতি লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে যোগ দিতে পারবেন।
দিল্লি সরকারের অধুনা বাতিল আবগারি নীতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে ধৃত কেজরিওয়ালকে আবার ২ জুন জেলে ফিরে আসতে হবে বলে বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দে-কে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছেন।
শীর্ষ আদালতের পাঁচ শর্ত
অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট পাঁচটি শর্ত জারি করেছে। সেগুলি হল –
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে ২ জানুয়ারি আত্মসমর্পণ করতে হবে। ৪ জুন লোকসভা নির্বাচনের ভোটগণনার দিন। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জামিন ৫ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য তাঁর কৌঁসুলি সিনিয়র অ্যাডভোকেট অভিষেক সিঙ্ঘভি আবেদন জানান। শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দেন।
বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, জামিনে থাকাকালীন অরবিন্দ কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে এবং দিল্লির সচিবালয়ে যেতে পারবেন না। “প্রয়োজন না পড়লে বা দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অনুমোদন/ছাড়পত্র দরকার না হলে তিনি কোনো ফাইলে সই করবেন না বলে তাঁর তরফে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল, অরবিন্দ কেজরিওয়াল তা মেনে চলতে বাধ্য থাকবেন” বলে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে।
শীর্ষ আদালত বলেছে, আবগারি নীতি কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত টাকা নয়ছয়ের মামলায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়াল কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না।
তিহার জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে জামিনস্বরূপ ৫০ হাজার টাকা জমা করতে হবে এবং সমপরিমাণ টাকার একজন জামিনদার রাখতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট আরও নির্দেশ দিয়েছে, এই মামলার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এমন কোনো সরকারি ফাইল অরবিন্দ কেজরিওয়াল দেখতে পাবেন না এবং কোনো সাক্ষীর সঙ্গে কথাবার্তাও বলতে পারবেন না।
সুপ্রিম কোর্ট কী বলল
নির্বাচনী প্রচার চালানোর জন্য আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধানকে জামিন না দেওয়ার জন্য এনফোর্সমেন্ট ডায়রেক্টোরেটের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এবং অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু আবেদন জানান।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে জামিন দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলে, কেজরিওয়ালকে ২১ দিনের জন্য জামিন দেওয়ার ব্যাপারটা এই মামলার ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। এনফোর্সমেন্ট ডায়রেক্টোরেটের (ইডি) ‘এনফোর্সমেন্ট কেস ইনফরমেশন রিপোর্ট (ইসিআইআর) নথিভুক্ত হয়েছিল ২০২২-এর আগস্টে এবং মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয় ২০২৩-এর ২১ মার্চ। শীর্ষ আদালত বলে, “তিনি (কেজরিওয়াল) দেড় বছর বাইরে ছিলেন। তাঁকে আগে বা পরে ধরা যেত। কিন্তু তেমন কিছু ঘটেনি।”
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর জামিন মঞ্জুর করে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, “অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কোনো ক্রিমিনাল অতীত নেই এবং সমাজের পক্ষে তিনি বিপজ্জনকও নন। লোকসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে এ ব্যাপারে একটা সামগ্রিক ও স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গিই যথাযথ।”
আরও পড়ুন