আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের নৃশংস ঘটনায় দেশজুড়ে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে। হাসপাতাল থেকে রাস্তায় সাধারণ মানুষ, সবাই মিলে একটাই আওয়াজ তুলেছে— ‘বিচার চাই’। এমন উত্তাল পরিস্থিতিতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই প্রেক্ষাপটে, কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে প্রতি দু’ঘণ্টা অন্তর তাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির রিপোর্ট পাঠাতে হবে।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে কলকাতার বিভিন্ন স্থানে এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ, ধর্না, এবং প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিছুক্ষেত্রে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে, যা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ আকার নিয়েছে যে, পুলিশকে কয়েকটি জায়গায় র্যাফ মোতায়েন করতে হয়েছে এবং কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের অন্যান্য রাজ্যেও একই ধরনের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাই সমস্ত রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে যে, তারা যেন প্রতিটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির তথ্য ইমেল, ফ্যাক্স বা হোয়াটস্অ্যাপের মাধ্যমে কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুমে পাঠায়। বিশেষ কোনও ঘটনা ঘটলে তা অবিলম্বে কেন্দ্রকে জানাতে হবে। গত ১৬ অগস্ট, এই নির্দেশিকা রাজ্যগুলির কাছে পৌঁছেছে।
গত ৯ অগস্ট রাতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার রুম থেকে এক মহিলা চিকিৎসকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করে। এরপর ১৪ অগস্ট রাতে ‘মেয়েদের রাত দখল’ কর্মসূচির মাঝেই কিছু দুষ্কৃতী আরজি কর হাসপাতালে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এই ঘটনার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
লালবাজার ইতিমধ্যেই আরজি করের সংলগ্ন এলাকায় ১৮ থেকে ২৪ অগস্ট পর্যন্ত পাঁচ জন বা তার বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে। তবে পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি, এবং বিক্ষোভের আগুন এখনও জ্বলছে।