উত্তরকাশী টানেল দুর্ঘটনায় আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারে চলমান অভিযান এখন প্রায় শেষ প্রান্তে। বুধবার রাত বা বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে শ্রমিকদের নিরাপদে বের করে আনা হবে বলে আশা করছে প্রশাসন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন উপদেষ্টা এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ভাস্কর খুলবে মঙ্গলবার জানান, উদ্ধারকাজে বড় অগ্রগতি ঘটেছে। আমেরিকা থেকে যে ড্রিল মেশিন আনা হয়েছে, তা দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে এদিন আরও ৬ মিটার গভীরে প্রবেশ করানো গিয়েছে ইভাকুয়েশন পাইপটিকে। এইভাবে ড্রিলিংয়ের মাধ্যমে মোট ৪৫ মিটার খনন সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আগামী কয়েকঘণ্টা আরও গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তী পর্যায়ে খনন কাজ শুরু হয়েছে। ভাস্কর ছাড়াও এ সময় এনএইচআইডিসিএল-এর এমডি মাহমুদ আহমেদ, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অভিষেক রুহেলা, পুলিশ সুপার অর্পণ যদুবংশী ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
ধসে পড়া সুড়ঙ্গের ভিতরে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার অভিযানের আজ একাদশ দিন। টানেলের ভেতরে মেশিনের মাধ্যমে ড্রিলিং ও পাইপ বসানোর কাজ অব্যাহত। যে ৯০০ মিমি পাইপগুলি প্রাথমিক ভাবে ২২ মিটার পর্যন্ত ঢোকানো হয়েছিল, এখন টেলিস্কোপিক পদ্ধতি ব্যবহার করে ৮০০ মিমি পাইপের মাধ্যমে তা ভিতরে ঢোকানো হচ্ছে।
মেশিনের মাধ্যমে রাতভর ড্রিলিং কাজ চলে। উদ্ধার অভিযানের সঙ্গে যুক্ত অধিকারিকদের মতে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শ্রমিকদের বাইরে বের করে নিয়ে আসা সম্ভব হতে পারে। সুড়ঙ্গের বাইরে অ্যাম্বুলেন্সেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৪০টি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
এ দিকে, বুধবার আবারও মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর ধামিকে ফোন করে উদ্ধার অভিযান সম্পর্কে খোঁজখবর নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত ১২ নভেম্বর থেকে ওই সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছেন শ্রমিকরা। আটকে পড়া শ্রমিকদের বার করার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে চওড়া পাইপ ঢুকিয়ে তার মাধ্যমে শ্রমিকদের বাইরে আনা হবে বলে পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু গত শুক্রবার সেই খোঁড়াখুঁড়ির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সুড়ঙ্গের ভিতরে আবার ধস নামে। সোমবার ফের নতুন করে কাজ শুরু হয়।
সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন ভাবে খাবার ও জল পাঠানো হচ্ছে। ভিতরে একটি ক্যামেরাও পাঠানো হয়েছে যার মাধ্যমে শ্রমিকদের মনিটরিং করা হচ্ছে এবং তাঁদের সঙ্গে ওয়াকি টকির মাধ্যমে কথাও বলা হচ্ছে। ভিতরে থাকা শ্রমিকদের মনোবল যাতে অটুট থাকে সেজন্য তাঁদের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলানো হচ্ছে।