কলকাতা: আগামী মঙ্গলবার ফের ২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ডাক দিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (DA)-র দাবিতে গত ২০ এবং ২১ ফেব্রুয়ারি কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন। ফের কর্মবিরতির ডাক।
আন্দোলনকারী সরকারি কর্মচারীদের বক্তব্য, তাঁরা সরকারের সঙ্গে কাজে সহযোগিতা করবেন। আগামী ১০ মার্চের ধর্মঘটকে সামনে রেখে বিভিন্ন প্রচারমূলক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এর আগের দু’দিনের কর্মবিরতিতে সরকারি কর্মচারীদের উপর যে আক্রমণ হয়েছে, তারই প্রতিবাদে দু’ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করা হবে।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের এই কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেন, “কিছু সরকারি কর্মচারী সিপিএম এবং বিজেপি-র উস্কানিতে সরকারের কাজকর্ম বন্ধ করে দিতে চাইছে। সরকারে কাজকর্ম মানেই হচ্ছে সাধারণ মানুষের উন্নয়নের, সাধারণ মানুষের সাহায্যের কাজ। নানারকম বাহানাবাজি করে সেই কাজ বন্ধ করে দিতে চাইছে। সরকারি কাজে যদি এত রাগ, তা হলে ছেড়ে দিচ্ছেন না কেন”?
অন্য দিকে, ডিএ-র দাবিতে দু’দিন ধরে কর্মবিরতির পর এ বার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের যৌথ মঞ্চ। আগামী ১০ মার্চ এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের যৌথমঞ্চের ঘোষণা অনুযায়ী সরকারি সমস্ত কার্যালয়ে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। মুখ্যসচিবের কাছে সেই মর্মে চিঠিও জমা দিয়েছে সরকারি কর্মীদের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।
সদ্য হয়ে যাওয়া রাজ্য বাজেটে ৩ শতাংশ ডিএ বাড়ানোর পরও সরকারি কর্মীদের আন্দোলনে ইতি পড়েনি। কারণ, নয়া হারে ডিএ ঘোষণার পরও কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ-র ফারাক অনেকটাই বেশি। প্রাপ্য না মিটলে আন্দোলনের রাস্তা থেকে সরে আসবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের যৌথ মঞ্চ।
এর আগে ২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি, দু’দিন ধরে কর্মবিরতির পর এ বার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সরকারি কর্মচারীদের যৌথ মঞ্চ। গত মঙ্গলবার রাতে একটি সাংবাদিক বৈঠকে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবেই ৯ মার্চ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। না হলে বুধবারই তাঁরা এই ধর্মঘট ডাকতেন। পরে অবশ্য ধর্মঘটের দিনবদল করে হয় ১০ মার্চ।
বিষয়টি জানাতেই গত বৃহস্পতিবার যৌথ মঞ্চের তরফে এক প্রতিনিধি আসেন নবান্নে। একটি চিঠি দেওয়া হয় রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে। সেখানে বলা হয়, এর আগেও সরকারকে নিজেদের দাবি জানিয়ে কোনো লাভ হয়নি। তাঁদের দাবি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে একটি মধ্যস্থতা কমিটি গঠন করার কথা বলা হয়েছে।
রাজ্য জুড়ে স্কুল-সহ সমস্ত সরকারি অফিসে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। এই ধর্মঘটে ছাড় দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল-সহ বেশ কিছু জরুরি পরিষেবাকে। আন্দোলনকারীদের তরফে জানানো হয়েছে, ধর্মঘট বলতে তাঁরা এ ক্ষেত্রে সমস্ত দফতরের কর্মবিরতির কথা বলছেন। দোকানপাঠ বা যানবাহন চলাচল বন্ধের বিষয় নয়। তাঁরা সরকারি কর্মীদের ৩৮টি সংগঠন মিলে এই আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। ওই দিন স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে অন্যান্য সমস্ত সরকারি দফতরে কাজ বন্ধ রাখা হবে।
উল্লেখ্য, ১৫ মার্চ ডিএ সংক্রান্ত মামলায় শীর্ষ আদালতে রয়েছে শুনানি। ওই রায়ের দিকে আপাতত তাকিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগীরা।
আরও পড়ুন: রাজ্যের মুকুটে নয়া পালক, প্রাথমিক শিক্ষায় ‘এগিয়ে বাংলা’ বলল কেন্দ্র