Home খবর রাজ্য বকেয়া ডিএ মামলায় ফের প্রশ্নের মুখে রাজ্য, সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন— আইন ভেঙে...

বকেয়া ডিএ মামলায় ফের প্রশ্নের মুখে রাজ্য, সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন— আইন ভেঙে সুবিধা নিতে চাইছে সরকার?

West Bengal DA Case

বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) প্রদান সংক্রান্ত মামলায় ফের প্রশ্নের মুখে পড়ল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, বিভ্রান্তি তৈরি করে তার সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি পিকে মিশ্রের বেঞ্চে মামলার শুনানিতে এমন পর্যবেক্ষণ উঠে আসে।

উল্লেখ্য, আগে রাজ্য জানিয়েছিল তারা রোপা (ROPA) আইনের ভিত্তিতে ডিএ দেবে। এমনকি বকেয়া ডিএ দেওয়ারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। আদালতের মন্তব্য—রাজ্য নিজেই এমন ঘোষণা করেছে, তবে তা মানা বাধ্যতামূলক।

শীর্ষ আদালত এর আগে রাজ্য সরকারকে ডিএ-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। ছ’সপ্তাহ সময়ও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সময়সীমার মধ্যে সেই নির্দেশ মানা হয়নি। বরং রাজ্য আরও ছ’মাস সময় চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই চলতি সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে প্রতিদিন শুনানি চলছে।

বৃহস্পতিবার মামলাকারী সরকারি কর্মীদের তরফে সওয়াল করেন আইনজীবী করুণা নন্দী। তিনি জানান, কেরল সরকার কেন্দ্রীয় সূচক না মানলেও নিয়মিত ডিএ দেয়। তাই কেন্দ্রীয় ইনডেক্স বাধ্যতামূলক না হলেও ডিএ দেওয়া জরুরি।

বিচারপতি করোল প্রশ্ন তোলেন, যদি রাজ্যের যুক্তি মেনে নেওয়া হয়, তবে সেটা ‘স্বেচ্ছাচারিতা’ হিসেবে দেখা যাবে। করুণা বলেন, লেবার ব্যুরোর তৈরি অল ইন্ডিয়া কনজ়িউমার প্রাইস ইনডেক্স (AICPI) একটি বিজ্ঞানসম্মত সূচক। রাজ্যে আলাদা সূচক না থাকায় কেন্দ্রীয় সূচকেই চলতে হবে।

অন্যদিকে, মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী রউফ রহিম অভিযোগ করেন, নির্দিষ্ট নীতি ছাড়াই ইচ্ছামতো ডিএ দিচ্ছে রাজ্য। মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মেলাতে হলে বর্ধিত ডিএ দেওয়া জরুরি।

তবে রাজ্যের তরফে আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান পাল্টা জানান, রাজ্য বাজেট ও মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়। কেন্দ্র ও রাজ্যের আর্থিক কাঠামো এক নয়, তাই কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়া বাধ্যতামূলক নয় বলেও দাবি করেন তিনি।

কিন্তু আদালতের পর্যবেক্ষণ, রাজ্য নিজেই অতীতে বলেছিল রোপা আইনের ভিত্তিতে ডিএ দেবে। সেই প্রতিশ্রুতি থেকে এখন সরে আসা যাবে না।

প্রসঙ্গত, বকেয়া ডিএ মেটাতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন বলে আগেই জানিয়েছে রাজ্য। ২০২৫-২৬ সালের বাজেটেও এই বাবদ কোনও বরাদ্দ রাখা হয়নি। রাজ্যের বক্তব্য, মহার্ঘ ভাতা বাধ্যতামূলক নয় এবং এটি মৌলিক অধিকারও নয়। তবে মামলাকারী পক্ষের দাবি, ডিএ সময়মতো দেওয়া সরকারের নীতিগত দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে এবং প্রয়োজনে তা কিস্তিতে দেওয়া হোক।

এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী মঙ্গলবার। রাজ্য সরকার ও সরকারি কর্মীদের জন্য সেই দিনই হয়তো নির্ধারণ করবে পরবর্তী দিশা।

আরও পড়ুন: ওবিসি জটে আটকে গেল রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফলপ্রকাশ, ১৫ দিনের সময় বেঁধে দিল আদালত

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version