কলকাতা: গ্রীষ্মের শুরুতেই যে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে তা চাঁদি ফেটে যাওয়ার জোগাড়। তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া দফতর। এমন পরিস্থিতির মোকাবিলায় গরম সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা (হিট অ্যাডভাইজরি) প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দফতর। একই ধরনের একটি নির্দেশিকা দিয়েছে কলকাতা পুরসভাও।
মঙ্গলবার প্রকাশিত নির্দেশিকাগুলির মূল পরামর্শ হল সুস্থ থাকতে হলে রোদ এড়াতে হবে যথাসম্ভব, পাশাপাশি তেষ্টার অপেক্ষা না করে জল পান করে যেতে হবে। হিট স্ট্রোকে আক্রান্তের সহায়তায় আশেপাশের মানুষের কী করণীয়, সে সবেরও উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশিকায়।
আগামী কয়েকদিনে কলকাতার তাপমাত্রা ২-৪ ডিগ্রি বাড়তে পারে। ৪০ ডিগ্রি পেরোতে পারে তাপমাত্রা। বইতে পারে লু। ফলে হিটস্ট্রোকের আশঙ্কা… রয়েছে। সে কারণে হাসপাতালগুলিতে গরমের আগে আগাম কিছু ব্যবস্থা নিয়ে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশিকা অনুযায়ী, হাসপাতালগুলিতে প্রয়োজনীয় ওষুধ, ওআরএস রাখতে হবে। হাসপাতালগুলি যেন যথাযথ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত থাকে। পর্যাপ্ত কুলিং প্যাড, ইন্ট্রাভেনাস ফ্লুইডের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ইমার্জেন্সি অবজারভেশন ওয়ার্ড এবং ইন্ডোরে কয়েকটি বেড বরাদ্দ রাখতে হবে। রাজ্যে হিটস্ট্রোকে কারও মৃত্যু হলে জানাতে হবে।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই গরমে মূলত দু’ভাবে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথমত, প্রচণ্ড গরমে শরীরের তাপমাত্রা ধূমজ্বরের মতো অনেকটা বেড়ে গিয়ে। আর দ্বিতীয়ত, গরমের কারণে শরীরে জলশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন) তৈরি হয়ে। তাই তেষ্টার অপেক্ষা না করেই দিনভর স্বাভাবিক তাপমাত্রার শীতল জল ( খুব ঠান্ডা নয়) খেতে বলছেন চিকিৎসকরা এবং নিষেধ করছেন অতিরিক্ত চা-কফি খেতে। নরম কার্বোনেটেড পানীয় খেতেও বারণ করা হচ্ছে। এগুলোতে ক্যাফেইন অথবা অতিরিক্ত চিনি ও সোডিয়াম বাই-কার্বোনেট থাকে। যা জলশূন্যতার ক্ষেত্রে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। এসবের বদলে লস্যি, ঘোল, কম মিষ্টি দেওয়া সরবত ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।
পূর্বাভাস বলছে, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির আবহাওয়াও শুষ্ক থাকবে। প্রায় ৪০ ডিগ্রি পৌঁছাতে পারে তাপমাত্রার পারদ। বিশেষত বাঁকুড়া , পুরুলিয়া , পশ্চিম বর্ধমান জেলাগুলির তাপমাত্রা অনেকটাই বৃদ্ধি পেতে চলেছে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে মালদা ও দক্ষিণ দিনাজপুরে তাপপ্রবাহ বইতে পারে এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: স্বাভাবিকের উপরেই তাপমাত্রা, কাঠফাটা রোদে প্রাণ ওষ্ঠাগত