শ্রীলঙ্কা: ২৭৯ (৪৯.৩ ওভার) (চরিত অসলঙ্কা ১০৮, পথুম নিসঙ্ক ৪১, তানজিম হাসান শাকিব ৩-৮০, শরিফুল ইসলাম ২-৫১)
বাংলাদেশ: ২৮২-৭ (৪১.১ ওভার) (নজমুল হোসেন শান্ত ৯০, শাকিব আল হাসান ৮২, দিলশান মদুশঙ্কা ৩-৬৯, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ২-৩৫)
দিল্লি: এ বারের বিশ্বকাপে প্রথম চারে যাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নেই দুটি দলেরই। কিন্তু আরও একটি লক্ষ্য রয়েছে। তা হল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সুযোগ পাওয়া। বিশ্বকাপের লিগ টেবিলে প্রথম আটের মধ্যে থাকলেই সরাসরি ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সুযোগ পাওয়া যাবে। সেই লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কাকে পিছনে ফেলে একটু এগিয়ে থাকল।
সোমবার দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৩ উইকেটে হারাল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা প্রথম ব্যাট করে ৪৯.৩ ওভারে ২৭৯ করে অল আউট হয়ে যায়। জবাবে বাংলাদেশ করে ৭ উইকেটে ২৮২। এই নিয়ে এ বারের দ্বিতীয় জয় পেল বাংলাদেশ। এই জয়ের পরে লিগ টেবিলে বাংলাদেশ ৮টি ম্যাচ থেকে ৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করল। সমসংখ্যক খেলায় শ্রীলঙ্কার সংগ্রহও ৪ পয়েন্ট। কিন্তু নেট রানরেটের বিচারে বাংলাদেশ থাকল সপ্তম স্থানে, শ্রীলঙ্কা অষ্টম।
এ বারের বিশ্বকাপের লিগ টেবিলে পাকিস্তান বাদে আর যে ৭টি দেশ উপরের দিকে থাকবে তারাই ২০২৫-এর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে (মিনি বিশ্বকাপ) খেলার সুযোগ পাবে। আয়োজক দেশ হিসাবে পাকিস্তান ওই টুর্নামেন্টে খেলবে। আর যে ৫টি দেশ ইতিমধ্যেই খেলার ছাড়পত্র পেয়েছে তারা হল ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং আফগানিস্তান। বাকি ২টি জায়গার জন্য এখন লড়াই চলছে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে।
অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ‘টাইমড্ আউট’
সোমবার টসে জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাট করতে পাঠায় বাংলাদেশ। ইনিংসের শুরুতেই কুশল পেরেরা বিদায় নিলেও হাল ধরেন পথুম নিসঙ্ক এবং অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। দ্বিতীয় উইকেটে দুই ব্যাটার পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিলেও আবার ঘন ঘন ৩টি উইকেট পড়ে যায়। শ্রীলঙ্কা ৫ উইকেটে ১৩৫ রান করেন। এর মধ্যে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ‘টাইমড্ আউট’ হয়ে যান। ক্রিকেটের বিধি অনুসারে একজন ব্যাটার আউট হয়ে যাওয়ার ২ মিনিটের মধ্যে পরবর্তী ব্যাটারকে ব্যাট শুরু করতে হয়। কিন্তু ম্যাথিউস তাঁর হেলমেট নিয়ে এত ব্যস্ত হয়ে পড়েন যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাট শুরু করতে পারেননি। বাংলাদেশের অধিনায়ক শাকিব ‘টাইমড্ আউট’-এর আবেদন জানালে আম্পায়ার তা গ্রাহ্য করেন।
শাকিবের এই আবেদন নিয়ে অনেকেই রুষ্ট। তাঁদের অভিযোগ, খেলার ‘স্পিরিট’ নেই শাকিবের। কিন্তু তার পালটা হিসাবে অনেকেই বলেন, শাকিব ভুল তো কিছু করেননি। ক্রিকেটের বিধিতে যখন এই আউটের ধারা আছে, তা হলে তা ব্যবহার করা হবে না কেন? ক্রিকেটের ইতিহাসে এই প্রথম ‘টাইমড্ আউট’-এর ঘটনা ঘটল।
এর পর চরিত অসলঙ্কা এবং ধনঞ্জয় ডি সিলভা দলকে বিপদকে উদ্ধার করেন। শেষ পর্যন্ত দল পৌঁছে যায় ২৭৯ রানে। অসলঙ্কা ১০৫ বলে ১০৮ রান করেন।
শাকিব ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’
জয়ের জন্য ২৮০ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে ৪১ রানের মধ্যে আউট হয়ে যান তানজিদ হাসান এবং লিটন দাস। বাংলাদেশ এ দিন লড়াই দিতে পারবে কি না সে সম্পর্কে সমর্থকদের মনে যখন সংশয় সৃষ্টি হচ্ছিল তখনই দলের হাল ধরেন নজমুল হোসেন শান্ত এবং শাকিব আল হাসান। দু’জনেই একটু একটু করে শতরানের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন।
যখন মনে হচ্ছিল দু’জনেই সেঞ্চুরি করবেন, ঠিক তখনই দু’ জনেই পর পর আউট হয়ে যান। দলের ২১০ রানে আউট হন শাকিব এবং ২১১ রানে শান্ত। শাকিব করেন ৬৫ বলে ৮২ এবং শান্ত ১০১ বলে ৯০। তখনও জেতার জন্য চাই ৬৯ রান, হাতে ৬টি উইকেট। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৮.৫ ওভার বাকি থাকতেই বাংলাদেশ জয়ে পৌঁছে যায়। ৪ উইকেটে ২৮২ রান করে তারা যেতে ৩ উইকেটে। ৮২ রান করে এবং ৫৭ রানে ২ উইকেট নিয়ে শাকিব আল হাসান ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হন।
আরও পড়ুন