ভারত: ২০১-৭ (সূর্যকুমার যাদব ১০০, যশস্বী জয়সোয়াল ৬০, কেশব মহারাজ ২-২৬, লিজাড উইলিয়ামস ২-৪৬)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৯৫ (১৩.৫ ওভার) (ডেভিড মিলার ৩৫, আইডেন মার্করাম ২৫, কুলদীপ যাদব ৫-১৭, রবীন্দ্র জাদেজা ২-২৫)
জোহানেসবার্গ: টি২০ ম্যাচে এমন জয় খুব কমই দেখা গিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে হার। ভারতের ২০ ওভারে ২০১ রানের জবাবে মাত্র ১৩.৫ ওভারে ৯৫ করে শেষ হয়ে গেল তাদের লড়াই। ২০ ওভারের ম্যাচে ভারত জিতে গেল ১০৬ রানে। তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজ শেষ হল ১-১ ফলে। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টির জন্য বানচাল হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার দ্য ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই ম্যাচে ভারতের এই জয়ের মূলে রয়েছে দলের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের শতরান এবং কুলদীপ যাদবের ক্রিকেট জীবনে সবচেয়ে সেরা বোলিং পারফরম্যান্স। সূর্যকুমার মাত্র ৫৬ বলে তাঁর শতরানে পৌঁছে যান। সঙ্গে পেয়েছিলেন অন্যতম ওপেনার যশস্বী জয়সোয়ালকে। তিনি করেন ৪১ বলে ৬০।
কুলদীপ তাঁর ২৯তম জন্মদিনে দেশের হয়ে সর্বোত্তম বোলিং উপহার দিলেন। প্রতিপক্ষ দলের ৫ উইকেট দখল করলেন মাত্র ১৭ রান দিয়ে। এই ৫ উইকেট এল তাঁর মাত্র ১২ বলে।
ভারতের ২০১ রানের জবাবে কেমন লড়াই দিল দক্ষিণ আফ্রিকা? একটা পরিসংখ্যানেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। দক্ষিণ আফ্রিকার মাত্র তিন জন ব্যাটার দুই অঙ্কের রানে পৌঁছেছিলেন – ডেভিড মিলার (৩৫), দলের অধিনায়ক আইডেন মার্করাম (২৫) এবং দোনোভান ফেরেরা (১২)। বাদবাকি ৮ ব্যাটারের রান এক অঙ্কের। এঁদের মধ্যে দু’জন খাতা খুলতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে আন্দিলে ফেহলুকোয়াও দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে টি২০ ম্যাচে সবচেয়ে বেশি শূন্য রান করলেন – মোট ৭ বার।
ম্যাচে মোড় ঘোরাল সূর্যকুমার-যশস্বী জুটি
এ দিন টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠায় দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ভারতও ২.৩ ওভারের মধ্যেই শুবমন গিল (৬ বলে ৮ রান) ও তিলক বর্মাকে (১ বলে ০ রান) হারায়। দলের স্কোর ২ উইকেটে ২৯ রান। দুটি উইকেটই তুলে নেন কেশব মহারাজ। প্রাথমিক বিপদ কাটিয়ে এর পরেই ব্যাট ঝড় তোলেন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব, সঙ্গী যশস্বী জয়সোয়াল। তৃতীয় উইকেটের জুটিতে যোগ হল ১১২ রান।
দলের ১৪১ রানে যশস্বী আউট হওয়ার পর রিঙ্কু সিংকে সঙ্গে নিয়ে সূর্যকুমার দলের রান পৌঁছে দেন ১৮৮ রানে। রিঙ্কু (১০ বলে ১৪ রান) বিদায় নেওয়ার পর দলের স্কোরে মাত্র ৬ রান যোগ হতেই প্যাভিলিয়নের পথে পা বাড়ান অধিনায়ক। ততক্ষণে তিনি শতরানে পৌঁছে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ২০১ রান করে ভারত।
নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাল প্রোটিয়ারা
জয়ের জন্য ২০২ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়ে গিয়েছে প্রোটিয়াদের। কিছুটা ডেভিড মিলার এবং সামান্য কিছুটা অধিনায়ক মার্করাম ছাড়া কেউই ভারতের বোলারদের মোকাবিলা করতে পারেনি। ভারতের ঝুলিতে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম উইকেট আসে রান আউটের মাধ্যমে। এর পর একে একে উইকেট তুলে নেন মুকেশ কুমার, রবীন্দ্র জাদেজা এবং অর্শদীপ সিং।
কুলদীপ যাদবকে যখন আক্রমণে আনা হয় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের তখন দশম ওভার। ততক্ষণে তাদের লড়াই করার ক্ষমতা প্রায় শেষ। ৯ ওভারের শেষে তাদের রান ৪ ওভারে ৬৬। পুরোদস্তুর ব্যাটার বলতে আর একজনই রয়েছেন – ডেভিড মিলার। তখনও প্রোটিয়াদের ১৩৬ রান করতে হবে ১১ ওভারে। অর্থাৎ ওভারপিছু ১২ রানের বেশি। কুলদীপ এলেন। বাকি ৬ উইকেটের মধ্যে ৫টি উইকেট দখল করে নিলেন মাত্র ২.৫ ওভারে ১৭ রান দিয়ে। আর-একটি উইকেটঁ নিলেন রবীন্দ্র জাদেজা।
শেষ পর্যন্ত ১০৬ রানে তৃতীয় টি২০ ম্যাচ জিতে ভারত সিরিজে সমতা ফেরাল। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ার পরে দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকা জিতে যায় ৫ উইকেটে। আগামী ১৭ ডিসেম্বর রবিবার শুরু হচ্ছে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার একদিনের ম্যাচের সিরিজ।
আরও পড়ুন