দক্ষিণ আফ্রিকা: ২৪৪-৭ (প্রেতোরিয়াস ৭৬, সেলেতসোয়ানে ৬৪, লিমবানি ৩-৬০, মুশির ২-৪৩)
ভারত: ২৪৮-৮ (সচিন ধস ৯৬, উদয় সহরন ৮১, মাফাকা ৩-৩২, লুস ৩-৩৭)
বেনোনি (দক্ষিণ আফ্রিকা): পাঁচ পাঁচ বার অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। ২০২২ বিশ্বকাপেরও চ্যাম্পিয়ন ভারত। সেই শিরোপা অক্ষুণ্ণ রাখার লড়াই লড়ছে তারা। আর সেই লড়াইয়ে সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ভারতের খেলা ছিল মঙ্গলবার। সেই বাধা টপকে তারা পৌঁছে গেল বিশ্বকাপের ফাইনালে।
মঙ্গলবার বেনোনির উইলোমুর পার্কে আয়োজিত সেমিফাইনালের ম্যাচে ভারত ২ উইকেটে হারাল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। মূলত সচিন ধস ও অধিনায়ক উদয় সহরনের জুটির ১৭১ রানের দৌলতে ভারত জয়ের মুখ দেখে। মাত্র ৪ রানে শতরান থেকে বঞ্চিত হন সচিন। আর অধিনায়ক উদয় ৮১ রানে রান আউট হন। ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হন উদয়। ফাইনালে ভারত অস্ট্রেলিয়া বনাম পাকিস্তান ম্যাচের জয়ীর মুখোমুখি হবে।
টসে জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাট করতে পাঠায় ভারত। নির্ধারিত ৫০ ওভারে তারা করে ৭ উইকেটে ২৪৪ রান। অন্যতম ওপেনার লুহান-দ্রে প্রেতোরিয়াসের ৭৬ রান (১০২ বলে) এবং রিচার্ড সেলেতসোয়ানের ৬৪ রানের (১০০ বলে) সুবাদে দক্ষিণ আফ্রিকা এই রানে পৌঁছোয়। ভারতের চার বোলার প্রতিপক্ষের উইকেটগুলো ভাগাভাগি করে নেন। সবচেয়ে বেশি উইকেট দখল করেন রাজ লিমবানি। তিনি ৬০ রান দিয়ে ৩ উইকেট পান। মুশির খান ৪৩ রান দিয়ে ২টি উইকেট দখল করেন। নমন তিওয়ারি এবং সৌমি পাণ্ডে ১টি করে উইকেট পান।
প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে জয়ে
জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ২৪৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে শুরুতেই বিপাকে পড়ে ভারত। ৩২ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় তারা। স্কোরবোর্ডে রান ওঠার আগেই প্রথম উইকেট হারায় ভারত। প্যাভেলিয়নে ফিরে যান আদর্শ সিং। এর পরে তিন নম্বরে নামা মুশির খান প্যাভেলিয়নের পথে পা বাড়ান। দলের রান তখন ৮, মুশিরের রান ৪। দলের তৃতীয় উইকেট পড়ে ২৫ রানে। ব্যক্তিগত ১২ রানের মাথায় আউট হন অপর ওপেনার অরশিন কুলকার্নি। স্কোরবোর্ডে ৭ রান যোগ হতেই আউট হন পাঁচ নম্বরে নামা প্রিয়াংশু মোলিয়া। তাঁর সংগ্রহ ৫।
দলের রান ৩২-৪। চার নম্বরে নামা অধিনায়ক উদয় সহরনের সঙ্গী হন সচিন ধস। পঞ্চম উইকেটে উদয়-সচিন জুটি যোগ করে ১৭১ রান। একসময়ে মনে হচ্ছিল ভারতের হার সময়ের অপেক্ষা মাত্র। কিন্তু এই জুটি যতই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, ততই জয়ের আশা উজ্জ্বল হচ্ছিল। দুই ক্রিকেটারের মধ্যে সচিন অনেক বেশি মারমুখী ছিলেন। তিনি যখন আউট হন দল তখনও জয় থেকে ৪২ রান দূরে। মাত্র ৪ রানের জন্য শতরান থেকে বঞ্চিত হন সচিন। ৯৫ বলে ৯৬ রান করে মাফাকার বলে টিগারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন সচিন। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে সচিন-উদয়ের ১৭১ পঞ্চম উইকেটের জুটিতে সর্বোচ্চ রান।
দলকে জয়ে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন অধিনায়ক উদয়। মাথা ঠান্ডা রেখে একটু একটু করে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছোনোর চেষ্টা করেন তিনি। ইতিমধ্যে ভারত আরও ২টি উইকেট হারায়। ৯ বল বাকি থাকতে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোরের সঙ্গে সমান সমান করে ভারত। পরের বলেই নিজস্ব ৮১ রানের মাথায় আউট হয়ে যান অধিনায়ক। জয়ের জন্য প্রয়োজন ১ রান, হাতে রয়েছে ৮ বল। জয়ের একেবারে দোরগোড়ায় ভারত। শেষ পর্যন্ত দলকে জয়ে পৌঁছে দিলেন বোলিং-এ সফল রাজ লিমবানি পরের বলেই বাউন্ডারি মেরে। এই জয়ের মাধ্যমেই এ বারে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা জিইয়ে রাখল ভারত।