নিউজিল্যান্ড: ২৩১ (৪৭.৫ ওভার) (সফি ডেভাইন ৮৫, ব্রুক হ্যালিডে ৪৫, ননকুলুলেকো এমলাবা ৪-৪০)
সাউথ আফ্রিকা: ২৩৪-৪ (৪০.৫ ওভার) (তাজমিন ব্রিট্স ১০১, সুনে লুস ৮৩, অ্যামেলিয়া কের ২-৬২)
ইনদওর: মহিলাদের একদিনের ক্রিকেটে বিশ্বকাপে প্রত্যাবর্তন করল সাউথ আফ্রিকা। এই সাউথ আফ্রিকাই প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ৬৯ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল, হেরে গিয়েছিল ১০ উইকেটে। শুধু জয়ই নয়, তাদের ব্যাটার তাজমিন ব্রিট্স বিশ্বরেকর্ড করলেন। করলেন শতরান। ২০২৫-এ এই নিয়ে পাঁচটি সেঞ্চুরি করলেন ব্রিট্স। এক ক্যালেন্ডার বর্ষে এতগুলো সেঞ্চুরি এর আগে কোনো মহিলা ব্যাটার করেননি। ব্রিট্স ভেঙে দিলেন স্মৃতি মন্ধানার রেকর্ড।
চার দিন আগে গুয়াহাটিতে ইংল্যান্ডের কাছে পর্যুদস্ত হয়েছিল সাউথ আফ্রিকা। ৬৯ রানে অল আউট। বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। সেই সাউথ আফ্রিকা দুর্দান্ত ভাবে ফিরে এল দ্বিতীয় ম্যাচে। ইনিংসের ৫৫ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটে হারিয়ে দিল নিউজিল্যান্ডকে। ২টি ম্যাচ থেকে ২ পয়েন্ট সংগ্রহ করে তারা উঠে এল লিগ টেবিলের পঞ্চম স্থানে। শ্রীলঙ্কা চলে গেল ষষ্ঠ স্থানে। ২টি ম্যাচ থেকে কোনো পয়েন্ট সংগ্রহ করতে না পেরে নিউজিল্যান্ড রইল সপ্তম স্থানে। টেবিলের একেবারে নীচে রয়েছে পাকিস্তান।
সোমবার হোলকার ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাট নেয় নিউজিল্যান্ড। নির্ধারিত ৫০ ওভারের ২.১ ওভার বাকি থাকতে তারা অল আউট হয়ে যায় ২৩১ রানে। ১৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন সফি ডেভাইন। ননকুলুলেকো এমলাবা ৪০ রান দিয়ে ৪ উইকেট দখল করেন। জবাবে সাউথ আফ্রিকা মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে যায়। ৯.১ ওভার বাকি থাকতেই তারা তুলে নেয় ২৩৪ রান। ৬ উইকেটে জিতে যায় সাউথ আফ্রিকা। স্বাভাবিক ভাবেই ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হন তাজমিন ব্রিট্স।

ব্রিট্সের বিশ্বরেকর্ড। ছবি ICC ‘X’ থেকে নেওয়া।
১৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি অধরা ডেভাইনের
নিউজিল্যান্ডের শুরুটা একদমই ভালো হয়নি। এ দিন ৩৫০তম ম্যাচ খেলতে নামা সুজি বেটস প্রথম বলেই ফিরে যান। পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেন জর্জিয়া প্লিমার (৬৮ বলে ৩১ রান) এবং অ্যামেলিয়া কের (৪২ বলে ২৩ রান)। দলের ৪৪ রানে অ্যামেলিয়া ফিরে গেলে জর্জিয়ার সঙ্গে জুটি বাঁধেন সফি ডেভাইন। ডেভাইন মারকুটে ব্যাটিং করছিলেন। জর্জিয়ার সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৫৭ রানের জুটি গড়ার পর চতুর্থ উইকেটে ব্রুক হ্যালিডের (৩৭ বলে ৪৫ রান) সঙ্গে ৮৬ রান যোগ করেন ডেভাইন। দলের ১৮৭ রানের মাথায় হ্যালিডে ফিরে যেতে আর কেউ সে ভাবে সঙ্গ দিতে পারেননি ডেভাইনকে। তবু তারই মধ্যে শতরানের দিকে এগোচ্ছিলেন ডেভাইন। কিন্তু ৮৫ রানের মাথায় এমলাবার বলে বোল্ড হন। মাত্র ১৫ রানের জন্য অধরা থাকল সেঞ্চুরি। নিউজিল্যান্ডের শেষের দিকের ব্যাটারদের হাত থেকে বিশেষ কিছু রান আসেনি। ১৩ বল বাকি থাকতে ২৩১ রানে ইনিংস শেষ হয়ে যায় তাদের।
উলভার্টের দুর্দান্ত ক্যাচ
নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে লরা উলভার্টের একটি ক্যাচ ধরা নিয়ে জোর চর্চা হচ্ছে। ৪৭তম ওভারের শেষ বল। বল করছিলেন এমলাবা, ব্যাট করছিলেন লিয়া তাহুহু। ড্রাইভ করেছিলেন লিয়া। ডান দিকে শূন্যে উড়ে এক হাতে ক্যাচ ধরেন উলভার্ট। সকলেই অবাক হয়ে যান। অনেকেই এটিকে বিশ্বকাপের সেরা ক্যাচ বলছেন।
ব্রিট্সকে সঙ্গ দিলেন সুনে লুস
দক্ষিণ আফ্রিকারও শুরুটা ভালো হয়নি। দলের ২৬ রানে ফেরেন লরা উলভার্ট (১০ বলে ১৪ রান)। তবে দ্বিতীয় উইকেটে ব্রিট্স এবং সুনে লুসের ১৫৯ রানের জুটি খেলার মোড় পুরোপুরি দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে ঘুরিয়ে দেয়। ১৫টি চার এবং ১টি ছক্কার সাহায্যে ব্রিট্স ৮৯ বলে করেন ১০১ রান। দলের ১৮৫ রানে ব্রিট্স ফিরে যাওয়ার পর জয়ের জন্য বাকি ছিল ৪৬ রান। হাতে ছিল ১৮.৫ ওভার অর্থাৎ ১১৩ বল। অত্যন্ত এই সহজ কাজ সমাধা করেন লুস। ১১৪ বলে ৮৩ রান করে নট আউট থাকেন তিনি।
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপ মহিলা ক্রিকেট ২০২৫: রবিবারে আবার পাকিস্তানকে হারাল ভারত, আপাতত লিগ টেবিলের শীর্ষে
বিশ্বকাপ মহিলা ক্রিকেট: বৃষ্টিতে ভেস্তে গেল অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ, পয়েন্ট ভাগাভাগি
বিশ্বকাপ মহিলা ক্রিকেট: ২১তম ওভারে ৬৯ রানে প্রোটিয়াদের ইনিংস শেষ, ইংল্যান্ড জিতল ১০ উইকেটে