বাংলাদেশ: ২৪৫-৯ (মুসফিকুর রহিম ৬৬, মহমুদুল্লাহ ৪১ নট আউট, লকি ফার্গুসন ৩-৪৯, ট্রেন্ট বোল্ট ২-৪৫)
নিউজিল্যান্ড: ২৪৮-২ (৪২.৫ ওভার) (ড্যারিল মিচেল ৮৯ নট আউট, কেন উইলিয়ামসন ৭৮, মুস্তাফিজুর রহমান ১-৩৬)
চেন্নাই: যে ঝড় তুলে এ বারের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিল নিউজিল্যান্ড, সেই ঝড় অব্যাহত রয়েছে। এ বার কিউয়ি ঝড়ে উড়ে গেল বাংলাদেশ।
চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে আয়োজিত এ দিনের ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ করে ৯ উইকেটে ২৪৫ রান। নিউজিল্যান্ড ৭.১ ওভার বাকি থাকতেই পৌঁছে যায় জয়ের লক্ষ্যে। তারা করে ২ উইকেটে ২৪৮। ফলে ৮ উইকেটে হারিয়ে দিল বাংলাদেশকে। এই জয়ের সঙ্গে সঙ্গে এ বারের বিশ্বকাপে প্রথম তিনটি ম্যাচেই জয় পেল নিউজিল্যান্ড।
সাত মাস খেলতে নেমে কেন উইলিয়ামসন ফের অবসৃত
তারই মধ্যে কিঞ্চিৎ খারাপ খবর, কিউয়ি অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের আবার চোট। আইপিএল খেলার সময় ডান হাঁটুতে চোট পেয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে গিয়েছিলেন উইলিয়ামসন। এ বারের বিশ্বকাপে আদৌ খেলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ ছিল, যদিও টিমে সম্ভাব্য খেলোয়াড়দের তালিকায় তাঁর নাম ছিল। কিন্তু যা ভাবা গিয়েছিল, তার অনেক আগেই বিশ্বকাপে ফিরে এলেন উইলিয়ামসন। সাত মাস পরে বিশ্বকাপে খেলতে নেমে কেন উইলিয়ামসন কেন উইলিয়ামসনেরই মতো খেললেন। ১০৮ বলে ৭৮ রান করলেন, ১০টা চার আর ১টা ছয়ের মাধ্যমে। কিন্তু অবসৃত হয়ে ফের সরে গেলেন। জানা গিয়েছে, পায়ে ক্র্যাম্প ধরার জন্য উইলিয়ামসনকে চলে যেতে হল। বাকি কাজটা সেরে দিলেন ড্যারিল মিচেল।
জয়ের জন্য ২৪৬ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে প্রথমেই গত দুই ম্যাচের অত্যন্ত সফল ব্যাটার রাচিন রবীন্দ্রকে হারায় কিউয়িরা। দলের রান তখন ১২। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে মুসফিকুর রহিমকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি। দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে ৮০ রান যোগ করেন ডেভন কনওয়ে এবং অধিনায়ক উইলিয়ামসন। শাকিবের বলে ব্যক্তিগত ৪৫ রানে এলবিডব্লিউ হন কনওয়ে। রান ওঠার গতি কিছুটা শ্লথই ছিল। ২০.১ ওভারে ৯২ রান।
পরের ২২.৪ ওভারে নিউজিল্যান্ড তুলে ফেলে ১৫৬ রান। উইলিয়ামসন আর ড্যারিল মিচেলের জুটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে স্বচ্ছন্দে রান তুলতে থাকেন। মিচেল তো আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলে গেলেন। উইলিয়ামসন যখন অবসৃত হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তখন নিউজিল্যান্ড ২০০ তুলে ফেলেছে। বাকি কাজটা সেরে ফেলেন ড্যারিল মিচেল, গ্লেন ফিলিপসকে সঙ্গে নিয়ে। শেষ পর্যন্ত মিচেল ৬৭ বলে ৮৯ রান করে এবং ফিলিপস ১১ বলে ১৬ রান করে নট আউট থাকেন। ৮ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় নিউজিল্যান্ড।
নিউজিল্যান্ডের মোকাবিলায় ব্যর্থ বাংলাদেশ
টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে পাঠায় নিউজিল্যান্ড। ম্যাচের প্রথম বলেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। আউট হয়ে যান লিটন দাস। ট্রেন্ট বোল্টের বলে ম্যাট হেনরিকে ক্যাচ দিয়ে তিনি আউট হন। এর পর নিয়মিত ব্যবধানেই উইকেট পড়তে থাকে শাকিব আল হাসানের দলের। ৫৬ রানের মধ্যে তারা ৪টি উইকেট হারায়। শেষ পর্যন্ত পঞ্চম উইকেটের জুটিতে উইকেট পতন আটকান অধিনায়ক স্বয়ং এবং মুসফিকুর রহিম।
শাকিব এবং মুসফিকুর পঞ্চম উইকেটের জুটিতে যোগ করেন ৯৬ রান। দলের ১৫২ রানে ফার্গুসনের বলে ল্যাথামকে ক্যাচ দিয়ে শাকিব (৫১ বলে ৪০ রান) আউট হতেই আবার উইকেট পড়তে শুরু করে। দলের ১৭৫ রানের মাথায় ম্যাট হেনরির বলে মুসফিকুর যখন সরাসরি বোল্ড হন তখন তাঁর সংগ্রহ ছিল ৭৫ বলে ৬৬ রান। অষ্টম উইকেটে মহমুদুল্লাহ ও তাস্কিন আহমেদ যোগ করেন ৩৪ রান। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪৫ রান করে। ৪৯ বলে ৪১ রান করে মহমুদুল্লাহ নট আউট থাকেন। ৪৯ বলে ৩ উইকেট নিয়ে লকি ফার্গুসন ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হন।
এ দিনের ম্যাচের পর ৩ ম্যাচ খেলে ৩টিতেই জিতে নিউজিল্যান্ড লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকল। বাংলাদেশ ৩ ম্যাচ খেলে মাত্র ১টিতে জিতে ষষ্ঠ স্থানে থাকল।
আরও পড়ুন
ভারত-পাক ম্যাচে কি মাঠে নামছেন শুভমন গিল? জবাব রোহিত শর্মার