বাংলাদেশ: ১৯৩ (৩৮.৪ ওভার) (মুসফিকুর ৬৪, শাকিব ৫৩, হরিস রাউফ ৪-১৯, নাসিম শাহ ৩-৩৪)
পাকিস্তান: ১৯৪-৩ (৩৯.৩ ওভার) (ইমাম উল হক ৭৮, রিজওয়ান ৬৩, শরিফুল ইসলাম ১-২৪)
লাহোর: এশিয়া কাপের ‘সুপার ৪’-এর প্রথম খেলায় বাংলাদেশকে হারিয়ে দিল পাকিস্তান। বাংলাদেশের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা তারা তুলে নেয় মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে। শেষ পর্যন্ত তারা ৩ উইকেটে ১৯৪ রান করে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারায়। ইমাম উল হক ও মহম্মদ রিজওয়ানের ব্যাটিং এবং হরিস রাউফ ও নাসিম শাহের বোলিং-এর দৌলতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সহজ জয় পেল পাকিস্তান।
ধীরেসুস্থে লক্ষ্যমাত্রায় পাকিস্তান
নির্ধারিত ৫০ ওভারে ১৯৪ রানের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছোনোর জন্য পাকিস্তানের তাড়াহুড়ো করার কোনো দরকার ছিল না এবং তা তারা করেওনি। ধীরেসুস্থেই খেলা শুরু করে। ফকর জমান ও ইমাম উল হকের ওপেনিং জুটি দলের রান ৩১-এ নিয়ে যায়। ততক্ষণে অবশ্য ৯.১ ওভার বল হয়ে গিয়েছে। ৩১ রানে শরিফুল ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ হন জমান। ৩১ বলে ২০ রান করে জমান।
ইমাম উল হকের সঙ্গে যোগ দেন দলের অধিনায়ক বাবর আজম। ইমাম-বাবরের জুটিতে রান ওঠার গতি কিছুটা বাড়ে। কিন্তু দলের ৭৪ রানের মাথায় বাবর আউট হয়ে যান। ১৭ রান করে মেহিদি হাসান মিরজার বলে বোল্ড হন তিনি। তবুও পাকিস্তানের ওপর তেমন কোনো চাপ ছিল না। ধীরে ধীরে রান বাড়িয়ে নিয়ে যেতে থাকেন ইমাম উল হক ও মহম্মদ রিজওয়ান।
দলের ১৫৯ রানের মাথায় আউট হন ইমাম। ৮৪ বলে ৭৮ রান করে তাসকিন আহমেদের বোল্ড হন তিনি। পাকিস্তানের ৩টি উইকেট পড়ে গেলেও জয় থেকে তারা তখন মাত্র ৩৫ রান দূরে। হাতে ৭ উইকেট এবং ১৮.১ ওভার। এর পর জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নেন মহম্মদ রিজওয়ান ও আগা সলমন। রিজওয়ান করেন ৭৯ বলে ৬৩।
পাকিস্তানকে সামলাতে পারল না বাংলাদেশ
এ দিন লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়াম আয়োজিত ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পাকিস্তানের বোলারদের সে ভাবে সামলাতে পারল না তারা। ৩৮.৪ ওভারেই শেষ হয়ে গেল তাদের ইনিংস। খেলার শুরুতেই বিপর্যয়। দলের ৪৭ রানের মধ্যেই পড়ে যায় ৪টি উইকেট। পঞ্চম উইকেটের জুটিতে শাকিব আল হাসান এবং মুসফিকুর রহিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে না তুললে বাংলাদেশের স্কোর ১৯৩-তে পৌঁছোত কি না সন্দেহ।
দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই আউট মেহিদি হাসান মিরাজ। নাসিম শাহর বলে ফখর জমানকে ক্যাচ দিয়ে তিনি যখন প্যাভিলিয়নের পথে পা বাড়ালেন তখনও স্কোরবোর্ডে কোনো রান ওঠেনি বাংলাদেশের। এর পর লিটন দাস কিছুটা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু দলের ৩১ রানের মাথায় শাহিন শাহ আফ্রিদিকে উইকেট দিয়ে যান তিনি। লিটন করেন ১৬ রান।
এর পর ব্যাট করতে নামেন শাকিব আল হাসান। কিন্তু ৪৫ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মহম্মদ নাইম এবং তার ২ রান পরেই আউট হয়ে যান তৌহিদ হৃদয়। ২টি উইকেটই পান হরিস রাউফ। শাকিবের সঙ্গী হন মুসফিকুর রহিম।
শাকিব-মুসফিকুর জুটি বাংলাদেশের হাল ধরেন। তাঁরা ধীরে ধীরে দলকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে শাকিব ছিলেন বেশি মারমুখী। পঞ্চম উইকেটের জুটিতে ১০০ রান যোগ করেন দুই ব্যাটসম্যান। কিন্তু দলের ১৪৭ রানের মাথায় শাকিব আউট হয়ে যেতে খেলার ছন্দ কেটে যায় বাংলাদেশের। শাকিব ৫৭ বলে ৫৩ রান করে ফহিম আশরফের বলে ফখর জমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে চলে যান।
বাংলাদেশের বাকি ৫ উইকেট পড়ে যায় মাত্র ৪৬ রানে। শাকিব আউট হয়ে যাওয়ার পর মুসফিকুর দলকে কিছুটা টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। হরিস রাউফের বলে মহম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়ে মুসফিকুর যখন বিদায় নেন তখন বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে রান ১৯০। এর আগে অবশ্য দলের ষষ্ঠ উইকেটের পতন হয়েছে ১৭৪ রানে।
মুসফিকুর আউট হওয়ার পরে আরও ৩টি উইকেট এবং ১২,৪ ওভার হাতে ছিল বাংলাদেশের। শেষ ৩ উইকেটে যোগ হল মাত্র ৩ রান। ১১.২ ওভার বাকি থাকতেই শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশের ইনিংস। পাকিস্তানের জন্য জয়ের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়াল ১৯৪ রান, যা সহজেই তুলে নিল তারা।