খবর অনলাইন ডেস্ক: ভারত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে খেলতে পারবে তো? ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের কাছে চুনকাম হয়ে যাওয়ার পর এই প্রশ্নটাই বড়ো হয়ে দেখা দিয়েছে। খাতায়কলমে এখনও টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ভারতের। কিন্তু পথ বড়ো কঠিন, খুবই কঠিন। তবে ক্রিকেটকে বলা হয় অনিশ্চয়তার গেম। সুতরাং শেষ কথা এখনই বলা যায় না।
অথচ এক মাস আগেও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ছবিটা ভারতের কাছে এত কঠিন ছিল না। পয়েন্টস টেবিলের শীর্ষস্থানে থাকাটা প্রায় পাকা করে ফেলছিল। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ব্যবধান ক্রমশই বাড়ছিল। কিন্তু ভারত সফরে এসে নিউজিল্যান্ড সব হিসাব গণ্ডগোল করে দিল। তিন ম্যাচের সিরিজে একেবারে দুরমুশ করে দিল ভারতকে। ভারত এখন রয়েছে পয়েন্টস টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে। হিসাবমতো টেবিলের প্রথম দুটি স্থানে থাকা দলই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলবে। তা হলে আর ভারতের অত চিন্তা কীসের? না। ভবিষ্যতের ক্রীড়াসূচিই তো ভারতকে চিন্তায় ফেলে দিচ্ছে। যাই হোক, আগে দেখে নেওয়া যাক পয়েন্টস টেবিলে কোন দেশ কোথায় আছে।
পয়েন্টস টেবিলে কে কোথায়
টেবিলের শীর্ষ স্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ১২টা ম্যাচ থেকে তাদের সংগ্রহ ৯০ পয়েন্ট, শতাংশের হিসাবে ৬২.৫০। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভারত ১৪টা ম্যাচ থেকে সংগ্রহ করেছে ৯৮ পয়েন্ট, শতাংশের হিসাবে ৫৮.৩৩। তৃতীয় স্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। ৯টা ম্যাচ থেকে তাদের সংগ্রহ ৬০ পয়েন্ট, পয়েন্টের শতাংশে ৫৫.৫৬। এর পরের স্থান নিউজিল্যান্ডের। ১১টা ম্যাচ থেকে তারা সংগ্রহ করেছে ৭২ পয়েন্ট, পয়েন্টের শতাংশে ৫৪.৫৫। আর পঞ্চম স্থানে রয়েছে সাউথ আফ্রিকা। ৮টা ম্যাচ থেকে ৫২ পয়েন্ট পেয়েছে তারা, পয়েন্টের শতাংশে ৫৪.১৭।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম দুটি স্থানের যাওয়ার লড়াই এই ৫টি দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বাকি দেশগুলি অর্থাৎ ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে লড়াইয়ের মধ্যে নেই তা এখনই বলে দেওয়া যায়।
ভারতের লড়াই কত কঠিন
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সদ্যসমাপ্ত সিরিজের পর ভারতের আর একটা সিরিজই বাকি – অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ, খেলা অস্ট্রেলিয়ায়। নিজেদের ঘরের মাঠে কিউয়িদের ৩-০ ফলে হারাতে পারলে অনেকটাই নিশ্চিন্ত থাকত ভারত। সে ক্ষেত্রে পাঁচ টেস্টের সিরিজে ১টা ম্যাচ জয় এবং ২টো ড্র করতে পারলেই ফাইনালে জায়গা পাকা হয়ে যেত রোহিতবাহিনীর।
কিন্তু সে গল্প করে আর লাভ নেই। এখন অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে রোহিতদের ৫টার মধ্যে ৪টে ম্যাচ জিততে হবে এবং বাকি ম্যাচটিও হারলে চলবে না, ড্র করতে হবে। সে ক্ষেত্রে অন্য কোনো দলের ফলের দিকে তাকাতেও হবে না ভারতকে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্যাট কামিন্সের দলকে ৪-০ ব্যবধানে হারানো চাট্টিখানি কথা নয়, নিঃসন্দেহে অত্যন্ত কঠিন।
অন্য দলের অবস্থা
অস্ট্রেলিয়াকে খেলতে হবে ৭টা টেস্ট – ৫টা ঘরের মাঠে ভারতের বিরুদ্ধে এবং ২টো শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সেখানে গিয়ে। সাতটি টেস্টের পাঁচটিতে জিতলেই ফাইনালে পৌঁছে যাবে অস্ট্রেলিয়া এবং আর কোনো দলের ফলের দিকে তাকাতে হবে না তাদের।
ভারতকে চুনকাম করে পয়েন্টস টেবিলে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে নিউজিল্যান্ড। এর পর ঘরের মাঠে টম লাথামেরা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন টেস্টের সিরিজ় খেলবেন। বেন স্টোকসদের বিরুদ্ধে সিরিজ় জিতলেই প্রথম দু’দলের মধ্যে জায়গা করে নিতে পারেন লাথামেরা।
সুযোগ রয়েছে এই মুহূর্তে তৃতীয় স্থানে থাকা শ্রীলঙ্কার এবং পঞ্চম স্থানে থাকা সাউথ আফ্রিকারও। তবে এ ক্ষেত্রে প্রোটিয়াদের লড়াইটা কিঞ্চিৎ সহজ। তারা ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ২টি আর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ২টি টেস্ট খেলবে। দক্ষিণ আফ্রিকা বাকি ৪টি টেস্টের ৩টিতে জিতলেই ফাইনাল খেলার সুযোগ পেতে পারে যদি ভারত এবং নিউজিল্যান্ড দুটি দলই তাদের পরের সিরিজ হেরে যায়। এরই মধ্যে তৃতীয় স্থানে থাকা শ্রীলঙ্কার কাজটা কঠিন। কারণ তাদের পরবর্তী সিরিজ বিদেশে, প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে তাদের মাঠে।