সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: ১৫৯ (১৯.৩ ওভারে) (রাহুল ত্রিপাঠী ৫৫, হাইনরিখ ক্লাসেন ৩২, মিশেল স্টার্ক ৩-৩৪, বরুণ চক্রবর্তী ২-২৬)
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৬৪-২ (১৩.৪ ওভার) (শ্রেয়স আইয়ার ৫৮ নট আউট, বেঙ্কটেশ আইয়ার ৫১ নট আউট)
অমদাবাদ: এত সহজেই সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে (এসআরএইচ) উড়িয়ে দেবে, এ বোধহয় স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কেকেআর-এর বোলারদের সামলাতে হিমশিম খেয়ে যায় এসআরএইচ-এর ব্যাটাররা। মাত্র ১৫৯ রানে এসআরএইচ গুটিয়ে যায়। পুরো ২০ ওভারও খেলতে পারেনি তারা। জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছোতে কেকেআর-এর লাগল মাত্র ১৩.৪ ওভার। ২ উইকেটে ১৬৪ রান করে তারা এসআরএইচ-কে ৮ উইকেটে হারাল এবং পৌঁছে গেল আইপিএল ফাইনালে।
কথায় বলে ওস্তাদের মার শেষ রাত্রে। আর সেটাই দেখালেন মিশেল স্টার্ক। ইনিংসের শুরতেই যে ভাবে প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দিলেন, সেখান থেকে আর বেরিয়ে আসতে পারল না তারা। স্বাভাবিক ভাবেই আইপিএল-এর ‘কোয়ালিফায়ার ১’ ম্যাচে ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হলেন মিশেল স্টার্ক।
এবারের আইপিএল-এর ফরম্যাট অনুযায়ী এসআরএইচ-এর এখনও সুযোগ রয়েছে ফাইনালে যাওয়ার। বুধবার ‘এলিমিনেটর’ ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মুখোমুখি হবে রাজস্থান রয়্যালস্। এই ম্যাচের বিজয়ীর সঙ্গে খেলতে হবে এসআরএইচ-কে। যারা জিতবে তারা ফাইনালে মুখোমুখি হবে কেকেআর-এর।
মঙ্গলবার অমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে আয়োজিত ‘কোয়ালিফায়ার ১’ ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করতে নামে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। নির্ধারিত ২০ ওভারের ৩ বল বাকি থাকতেই তারা অল আউট হয়ে যায়। তাদের ইনিংসে ধ্বংস ডেকে আনেন কেকেআর-এর প্রতিটি বোলার। তবে তারই মধ্যে বিধ্বংসী ছিলেন মিশেল স্টার্ক (৩৪ বলে ৩ উইকেট) এবং বরুণ চক্রবর্তী (২৬ রানে ২ উইকেট)।
মিশেল স্টার্কের উল্লাস। ছবি কেকেআর-এর ‘এক্স’ হ্যান্ডেল থেকে নেওয়া।
উড়ে গেল হায়দরাবাদ
স্কোরবোর্ডে কোনো রান ওঠার আগেই প্রথম উইকেট হারায় হায়দরাবাদ। মাত্র ২টি বল খেলে মিশেল স্টার্কের বলে সরাসরি বোল্ড আউট হয়ে ফিরে যান ট্র্যাভিস হেড। এর পর নিয়মিত উইকেট পড়তে থাকে হায়দরাবাদের। ৩৯ রানের মধ্যে তারা ৪টি উইকেট হারায়। এর মধ্যে তিনটি উইকেটই তুলে নেন স্টার্ক। পতন কিছুটা আটকান তিন নম্বরে নামা রাহুল ত্রিপাঠী এবং ছ’ নম্বরে নামা হাইনরিখ ক্লাসেন।
রাহুল ও ক্লাসেন পঞ্চম উইকেটে ৬২ রান যোগ করার পর সেই জুটি ভেঙে দেন বরুণ চক্রবর্তী। ২১ বলে ৩২ রান করে বরুণের বলে রিঙ্কু সিংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ক্লাসেন। ১০১ রানে পঞ্চম উইকেট পড়ার পর মাত্র ২৫ রানের মধ্যে আরও ৪টি উইকেট পড়ে হায়দরাবাদের। ৩৫ বলে ৫৫ রান করে রাহুল ত্রিপাঠী রান আউট হয়ে যান। প্যাট কামিন্সের ব্যাটিংয়ের সুবাদে শেষ উইকেটে যোগ হয় ৩৩ রান। কামিন্স করেন ২৪ বলে ৩০ রান।
৩৮ বল বাকি থাকতেই কলকাতার জয়
জয়ের জন্য কলকাতার দরকার ছিল ১৬০ রান। এ দিন ওপেনিং জুটি বদল করে কেকেআর। ফিল সল্ট ইংল্যান্ডে ফিরে যাওয়ায় সুনীল নারিনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন আফগানিস্থানের ব্যাটার রামানুল্লাহ গুরবাজ। ঝড়ের গতিতে রান তুলতে থাকে কলকাতা। মাত্র ৩.২ ওভারে উঠে যায় ৪৪ রান। এর মধ্যে গুরবাজই করেন ১৪ বলে ২৩ রান। টি নটরাজনের বলে বিজয়কান্ত বিয়সকান্তকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান গুরবাজ।
সুনীলের সঙ্গী হন বেঙ্কটেশ আইয়ার। কেকেআর-এর দ্বিতীয় উইকেট পড়ে ৬৭ রানে। সুনীল ১৬ বলে ২১ রান করে কামিন্সের বলে বিয়সকান্তকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। বেঙ্কটেশ আইয়ারের সঙ্গী হন দলের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। আর পিছন ফিরে তাকাননি আইয়ার জুটি। হায়দরাবাদ সংহারে নামে এই জুটি। প্রতিপক্ষের কোনো বোলারকেই পাত্তা দেননি তাঁরা। দু’জনেই অর্ধশত রান করেন। মাত্র ৭.২ ওভারে তাঁরা করেন ৯৭ রান। অর্থাৎ ওভারপিছু সাড়ে ১৩ রান। চতুর্দশ ওভারের চতুর্থ বলে ট্র্যাভিস হেডকে ৬ মেরে দলকে জয়ে পৌঁছে দেন অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। তখনও নির্ধারিত ২০ ওভারের ৩৮ বল বাকি।