খবরঅনলাইন ডেস্ক: অনেকেই দিল্লি বেড়াতে গিয়ে দুটো-তিনটে দিন আশপাশে কোথাও বেড়িয়ে আসার কথা ভাবেন। সপ্তাহান্তে বা ছোট্ট ছুটিতে বেড়িয়ে আসা যায় এ রকম বেশ কিছু শৈলশহর রয়েছে দিল্লির কাছেই। কিন্তু এখন হিমাচল প্রদেশ বা উত্তরাখণ্ডের সেই সব শৈলশহর বন্যা ও ধসে কিছুটা বিপর্যস্ত। তাই এই সব শৈলশহরের পরিবর্তে এমন কিছু জায়গার কথা বলা হল যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাস। এ ছাড়াও দিল্লির কাছে কিছু সংরক্ষিত বনাঞ্চলও রয়েছে যেখান থেকে সহজেই বেড়িয়ে আসতে পারেন। সেই সব জায়গার সুলুকসন্ধান দেওয়া হল। আজ চলুন জয়পুর।
কী দেখবেন
রাজস্থানের রাজধানী জয়পুর কেন বিখ্যাত তা আর ব্যাখ্যা করে বলার দরকার হয় না। রাজস্থানের ঐতিহাসিক শহর জয়পুর। ১৮ শতকের গোড়ায় অম্বর থেকে এখানে রাজধানী সরিয়ে নিয়ে আসেন রাজা সোয়াই জয় সিংহ। এই জয় সিংহের নামেই শহরের নাম জয়পুর।
জয়পুরের দ্রষ্টব্যগুলির মধ্যে প্রথমেই নাম করতে হয় সিটি প্যালেসের। এর স্থাপত্যশৈলী অনবদ্য। জয় সিংহের আমলে তৈরি এই প্রাসাদের মহলগুলি আজ মিউজিয়ামে রূপান্তরিত।
সিটি প্যালেসের কাছেই যন্তর মন্তর। আঠারো শতকের গোড়ায় তৈরি এই মানমন্দিরের ১৮টি জ্যামিতিক যন্ত্রে আজও নিখুঁত ভাবে ধরা পড়ে স্থানীয় সময়, সূর্যের অবস্থান, দ্রাঘিমাংশ, অক্ষাংশ, ধ্রুবতারা, তারকা, উপগ্রহের গতিপথ, গ্রহণের নিখুঁত হিসাব।
যন্তর মন্তর।
কলকাতা বলতেই যেমন হাওড়া ব্রিজের ছবি দেখানো হয় তেমনই জয়পুর বলতেই যে স্থাপত্যর ছবিটি দেখানো হয় সেটি হল হাওয়ামহল। শহরের ব্যস্ততম এলাকার রাস্তার ধারে হাওয়ামহল।
এই শহরের আরও দ্রষ্টব্যের মধ্যে রয়েছে মানসাগর সরোবরে জলমহল প্রাসাদ, নাহারগড়, জয়গড়, গলতা, সিসোদিয়া রানি কি বাগ, বিদ্যাধরজি কি বাগ, মোতি ডুংরি, অ্যালবার্ট হল ইত্যাদি।
আর শহর থেকে ১১ কিমি দূরে অম্বরই যেন শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ এই জয়পুরের। রাজপুত স্থাপত্যের এক অপূর্ব নিদর্শন অম্বর ফোর্ট। ১৫৯২ সালে এর নির্মাণকাজ শুরু করেছিলেন আকবরের সেনাপতি রাজা মান সিংহ। শতাধিক বছর পরে তা পূর্ণতা পায় সোয়াই জয় সিংহের হাতে। এই দুর্গে ঢুকেই দর্শন হয়ে যায় বাংলার দেবী মা যশোরেশ্বরীর। ১৬০৪ সালে বাংলা জয় করে যশোর থেকে এই দেবীকে নিয়ে এসেছিলেন মান সিংহ। এই দুর্গের ভিতরে অনেক কিছুই দেখার আছে, তবে মান সিংহের তৈরি শিশমহলের কথা না বললেই নয়। শিশমহল মানে কাচের মহল। এই মহলে চারপাশের দেওয়াল, ছাদ, উপর-নীচে এমন ভাবে রঙিন আরশি বসানো যাতে একটি বাতিকে লক্ষ বাতি মনে হয়।
নাহারগড় ফোর্ট।
কী ভাবে যাবেন
দিল্লি থেকে সড়কপথে জয়পুরের দূরত্ব ৩০৬ কিমি। নিয়মিত বাস চলে। বাস বা গাড়ি যাতেই যান, ঘণ্টাপাঁচেকের মধ্যে পৌঁছে যাবেন জয়পুর, রাস্তা এতটাই ভালো। আর ট্রেন তো আছেই। সময়সূচির জন্য দেখে নিন erail.in।
কোথায় থাকবেন
জয়পুরে থাকার মতো প্রচুর বেসরকারি হোটেল আছে। গুগুল সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। আর রাজস্থান পর্যটনের একাধিক হোটেল রয়েছে। অনলাইন বুকিং-এর জন্য দেখে নিন — https://rtdc.tourism.rajasthan.gov.in/।