আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS)-এ সফল মিশন সম্পন্ন করে সোমবার পৃথিবীতে ফিরলেন ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট এবং ‘গগনযাত্রী’ গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা এবং অন্য নভশ্চরেরা। ভারতীয় সময় অনুযায়ী বিকেল ৩টা নাগাদ ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়াগো উপকূলে ‘গ্রেস’ নামের স্পেসএক্স ক্যাপসুল জলে অবতরণ করে। প্রায় ৫০ মিনিট পরে তাঁদের ওই ক্যাপসুল থেকে উদ্ধার করা হয়।
এই মিশনের মাধ্যমে শুভাংশু শুক্লা হলেন দ্বিতীয় ভারতীয় যিনি মহাকাশে গেলেন—প্রথম জন ছিলেন উইং কমান্ডার রাকেশ শর্মা, ১৯৮৪ সালে। তবে তিনিই প্রথম ভারতীয় যিনি $১৫০ বিলিয়ন মূল্যের আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়ে গবেষণা করে এলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “তিনি ১০০ কোটির স্বপ্নকে অনুপ্রাণিত করেছেন। গগনযান মিশনের পথে এটি এক ঐতিহাসিক সোপান।”
এই অভিযানটি স্পেসএক্স ও অ্যাক্সিয়ম স্পেসের মাধ্যমে করা হয়, যার জন্য ভারতের ব্যয় হয়েছে প্রায় $৭০ মিলিয়ন (প্রায় ₹৫৮০ কোটি)। প্রায় ১৮ দিন ধরে মহাকাশে থেকে ১২.২ মিলিয়ন কিমি পথ অতিক্রম করে ৪৩৩ ঘণ্টায় এই অভিযান সম্পন্ন হয়। অভিযানে শুক্লা ছাড়াও ছিলেন আমেরিকার কম্যান্ডার পেগি হুইটসন, পোল্যান্ডের স্লাওস উজনানস্কি-উইসনিয়েভস্কি এবং হাঙ্গেরির টিবোর কাপু।
এই অভিযান শুধু বৈজ্ঞানিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং ভারত, পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরির জন্য ঐতিহাসিকও বটে। চার দশক পর এই তিন দেশের কোনও নাগরিক আবার মহাকাশে পা রাখলেন এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে কাজ করলেন। এই অভিযান ভবিষ্যতের আরও মহাকাশ মিশনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করল।
#WATCH | Group Captain Shubhanshu Shukla and Axiom-4 crew assisted out of the Dragon Spacecraft onto the recovery vehicle, after their return to the earth from the International Space Station 18 days later#AxiomMission4
— ANI (@ANI) July 15, 2025
(Video Source: Axiom Space/ YouTube) pic.twitter.com/f57N8K2qCa
মহাকাশে কাটানো সময়কালে গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লা ভারতীয় বৈজ্ঞানিকদের তৈরি সাতটি বিশেষ মাইক্রোগ্র্যাভিটি এক্সপেরিমেন্ট পরিচালনা করেছেন। এই গবেষণা আগামী দিনে গ্রহান্তর মিশন ও দীর্ঘস্থায়ী মহাকাশবাসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানানো হয়েছে।
তিনি ১৭ আগস্ট দিল্লি ফিরে আসবেন। তার আগে আমেরিকায় এক সপ্তাহের মেডিক্যাল রিহ্যাব প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকবেন, যাতে পৃথিবীর অভিকর্ষে ফের মানিয়ে নেওয়া যায়। এই মিশনের সাফল্য ভারতের মহাকাশ গবেষণায় এক ঐতিহাসিক মাইলস্টোন।