চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি। ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির (Gautam Adani) বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর এক রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনেছিল মার্কিন শর্ট সেলিং ফার্ম হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। তার পরই ঝড়ের গতিতে সম্পদ খুইয়েছেন গৌতম আদানি। এই এক মাসের ব্যবধানে, বিশ্বের সবেচেয়ে ধনীর তালিকায় তৃতীয় স্থান থেকে ৩৮তম স্থানে নেমে এলেন তিনি।
একসময় এশিয়ার ধনী ও বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা গৌতম আদানি এখন তালিকায় ক্রমাগত নীচের দিকে নেমে যাচ্ছেন। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ রিপোর্টের পর তাঁর সংস্থার শেয়ার বিক্রির ঝড়ের কবলে পড়ে, সম্পদ কমতে কমতে তলানিতে। জানুয়ারিতে যেখানে তাঁর সম্পদের পরিমাণ ছিল ১১৯০০ কোটি মার্কিন ডলার, সেখান থেকে হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৮,৫০০ কোটি ডলার।
এর আগেই বিশ্বের শীর্ষ ১০ বিলিয়নেয়ারের তালিকা থেকেও ছিটকে গিয়েছিলেন গৌতম আদানি। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ভারতীয়, এমনকী এশিয়ারও সবচেয়ে বেশি সম্পদের মালিক আদানি দীর্ঘদিন ধরে প্রথম দশে ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে ওঠা কারচুপির অভিযোগকে কেন্দ্র করে দেখা দিয়েছে চরম সংকট। প্রভাব পড়েছে সংস্থার শেয়ারে। ফলে ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্সের সবচেয়ে ধনী তালিকার র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ ২৫-এরও বাইরে চলে যেতে হয় তাঁকে।
ফোর্বস এবং ব্লুমবার্গ-এর বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকা অনুসারে, তিনি যথাক্রমে ৩৮তম এবং ৩০তম স্থানে রয়েছেন। ফোবর্সের হিসেব অনুযায়ী, আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানির মোট সম্পদের পরিমাণ এখন ৩৩৪০ কোটি ডলার। ব্লুমবার্গের তথ্য অনুসারে, আদানির সম্পদ দাঁড়িয়েছে ৪০০০ কোটি ডলারে।
মার্কিন শর্ট সেলিং ফার্ম হিন্ডেনবার্গ আদানিকে ‘কর্পোরেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড়ো জালিয়াতি’ করার জন্য অভিযুক্ত করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর থেকে গৌতম আদানি কোটি কোটি ডলারেরও বেশি সম্পদ হারিয়েছেন।
বলে রাখা ভালো, ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স ৫০০ জন ধনী ব্যক্তির দৈনিক র্যাঙ্কিং প্রকাশ করে। নিউইয়র্কে প্রতিটি ট্রেডিং দিনের শেষে এই সংক্রান্ত পরিসংখ্যান আপডেট করা হয়। মার্কিন সংস্থার ভয়ানক রিপোর্টের পরেই টলে গিয়েছে আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার। আর স্টক বাজারে সেই পতনেই নড়ে গিয়েছে গৌতম আদানির মোট সম্পদের অঙ্ক।
আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে শেয়ার ‘স্টক ম্যানিপুলেশন’ এবং ‘অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতির’ অভিযোগ তুলেছে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। তারা জানিয়েছিল, বিপুল পরিমাণ ঋণের বোঝা রয়েছে আদানি গোষ্ঠীর ঘাড়ে। তাছাড়া তাদের শেয়ারের ভ্যালুয়েশনও মাত্রাতিরিক্ত। ফলে যে কোনো সময়ে ভেঙে পড়তে পারে তাসের ঘর। ওই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই একধাক্কায় ধনীতম ব্যক্তির তালিকায় ক্রমশ দূরবর্তী অবস্থানে চলে যাচ্ছেন ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানি।
আরও পড়ুন: আধার অথেন্টিকেশনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আরও সুরক্ষিত লেনদেন