মুম্বই: রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত চলতে থাকলে দীর্ঘ সময়ের জন্য সুদের হার উচ্চস্তরে থাকতে পারে। সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়ায় ব্যয়বৃদ্ধির কারণে মুদ্রাস্ফীতির ভোলবদল সম্ভব নয় বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস।
শনিবার বিজনেস টুডে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে আরবিআই গভর্নর বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের মুদ্রানীতি কমিটি কী করবে, তার নির্দিষ্ট কোনো ইঙ্গিত নেই। তবে ভূ-রাজনৈতিক সংকট যদি এমন ভাবেই চলতে থাকে, তা হলে উচ্চ হারে সুদে তেমন কোনো পরিবর্তন সম্ভব নয়। এটা শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নয়, বিশ্বের যে কোনো দেশের জন্যই প্রযোজ্য”।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা অব্যাহত থাকলেও পরিস্থিতি মোকাবিলার আসল চাবিকাঠি সমাজ। কারণ, মানুষ জানে কী ভাবে একটা নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খল আগের থেকে এখন অনেকটাই সাবলীল হয়েছে। প্রত্যেক দেশই এখন সংকট কাটিয়ে উঠতে চাহিদা মেটানোর জন্য নতুন উৎসের দিকে মনোনিবেশ করছে। ফলে ভবিষ্যতে মুদ্রাস্ফীতি একটা পরিমিত অবস্থানে আসতে পারে।
এ ব্যাপারে তাঁর যুক্তি, বৃদ্ধির নিম্নমুখিনতা প্রত্যাশার চেয়ে কম হতে পারে। যেমন, ছ’মাস আগেও অনেকে ভেবেছিলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মন্দা চওড়া হবে। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে এ ভাবে চলতে থাকলে, অর্থাৎ অনিশ্চয়তার প্রেক্ষিতে সকলকেই যে কোনো পরিস্থতির জন্য তৈরি থাকতে হবে।
রাতারাতি মূল্যস্ফীতির ভোলবদল সম্ভব নয় জানিয়ে আরবিআই গভর্নর বলেন, একে প্রভাবিত করতে আগের হার বৃদ্ধির জন্য সাত-আট মাস সময় লাগবে। তবে একটা আঁটসাঁট পরিস্থিতিতে আরও বেশি সময়ের প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, মূল্যবৃদ্ধি এবং আর্থিক মন্দার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পঞ্চম দফায় রেপো রেট (মূল সুদের হার) বাড়িয়েছে আরবিআই। গত বছরের মে মাস থেকে রেপো রেট বাড়ানো শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। প্রথম ধাপে ৪০ বেসিস পয়েন্ট ও পরবর্তী তিন ধাপে ৫০ বেসিস পয়েন্ট করে রেপো রেট বাড়ানো হয়। পঞ্চম দফায়, ডিসেম্বরে সেই বৃদ্ধির হার সামান্য কমিয়ে, রেপো রেট ৩৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হয়। এর ফলে রেপো রেট এখন ৬.২৫ শতাংশ।