উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়: জয়নগর উত্তরপাড়ার ৩৮০ বছরের প্রাচীন ঘোষবাড়ির পুজো আজ জৌলুস হারালেও নিয়ম মেনে চলে আসছে। বৃন্দাবন থেকে আনা গৃহদেবতা নন্দনন্দন মূর্তির পুজো করে এখানে দুর্গার পুজো শুরু হয়। মহাষ্টমীতে দুর্গা ও নন্দনন্দনকে এক সঙ্গেই বসানো হয়।
প্রাচীন নিয়ম মেনে নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো করে আসছেন এখনও পরিবারের বর্তমান সদস্যরা। পরিবার সূত্রে জানা যায়, জয়নগর-মজিলপুর পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরপাড়ার ঘোষ পরিবারের আদিপুরুষ রামজয় ঘোষ প্রথম এই বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেন। গৃহদেবতা নন্দনন্দনের পুজো নিয়মিত হয় এখনও।
এই বাড়ির বর্তমান সদস্য গৃহবধূ অর্চনা ঘোষ বলেন, পূর্বপুরুষ রামরমণ ঘোষ গঙ্গাস্নান করতে যাওয়ার সময় কোনো একজন বৃন্দাবন থেকে এসে তাঁর ঝুলি থেকে নন্দনন্দন বের করে বলেছিলেন, ঘোষ পরিবারে তাঁকে প্রতিষ্ঠা করতে। সেই থেকেই এই দেবতা ঘোষ বাড়িতে বিরাজমান।
রাসের সময় বাইরের মন্দিরে বসানো হয় গৃহদেবতাকে। আগে মহালয়ায় বোধন হত দেবী দুর্গার আর এখন বোধন হয় পঞ্চমীর দিনে। ষষ্ঠীতে নিরামিষ খাওয়া-দাওয়া হয় এখানে। অষ্টমীতে দুর্গার পুজোতে অন্নভোগ দেওয়া হয় না। সকালে আতপ চালের নৈবেদ্য বড়ো আকারে দেওয়া হয় ও সন্ধ্যায় থাকে লুচিভোগ ও ফলের নৈবেদ্য।
এখানে মা দুর্গার নথ সোনার, আর অস্ত্র পিতলের। ঘোষ পরিবারের পুজোয় বলি নেই। তবে নিয়ম মেনে পুজোর সময় মাকে চাল, কুমড়ো, আখ, নারকেল ও পুঁইশাক দেওয়া হয়। দশমীর দিন আগে ঘট বিসর্জন করা হয়, তার পরে সন্ধ্যায় প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়।
পুরো পুজোটাই নিয়ম মেনে চলে আসছে। আর এই প্রাচীন এই পুজো দেখতে বহু মানুষ পুজোর সময় এই ঘোষ বাড়িতে আসেন। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার নামখানা লোকালে জয়নগর-মজিলপুর স্টেশনে নেমে গাড়িযোগে জয়নগর উত্তরপাড়া মোড় হয়ে চলে যান ঘোষবাড়ি। দর্শন করুন দুর্গাপ্রতিমা।
আরও পড়ুন: পাণ্ডবেশ্বরের নবগ্রামে তিন শরিকের পুজোয় মা দুর্গা তপ্ত কাঞ্চনবর্ণের