খবর অনলাইন ডেস্ক: আজ পঞ্চমী। বাংলার ঘরে চলে এসেছেন হিমালয়-দুহিতা উমা। কোথাও তাঁকে বরণ করে নেওয়া হয়েছে, কোথাও বা বরণের অপেক্ষায় রয়েছেন মা। নানা ভাবে, নানা প্রথায় পূজিতা হচ্ছেন তিনি।
একটি পুজোর তিনটি শরিক। তিন শরিক হল তিনটি পরিবার – চট্টোপাধ্যায়, মুখোপাধ্যায় ও চক্রবর্তী। তিন শরিকের পুজোয় মা আসেন ব্যাঘ্রবাহিনী রূপে। এই পুজো হয় পশ্চিম বর্ধমান জেলার পাণ্ডবেশ্বর থানার অন্তর্গত গ্রাম নবগ্রামে। তিন শরিকের এই পুজো আনুমানিক আড়াইশো বছরের পুরোনো।
এখানে মা দুর্গার গায়ের রঙ তপ্ত কাঞ্চনবর্ণের। এই পুজোয় এখন যিনি দেবীপ্রতিমা তৈরি করেন, তাঁর পরিবারই বংশপরম্পরায় এই কাজ করে আসছেন। এমনকি, যাঁরা ঢাক বাজান, তাঁরাও বংশপরম্পরায় ঢাক বাজিয়ে আসছেন।
তিন শরিকের এই দুর্গাপুজোর একটি অন্যতম বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল অপরাজিতা পূজা, বেলপাতায় দুর্গানাম লিখে দেবীর চরণে অর্পণ ও যাত্রা বাঁধা। এ ছাড়াও দশমীর দিন সিঁদুরখেলা ও দেবীবরণ এই পুজোর এক অন্যতম রীতি।
এই পূজার আর-একটি বড়ো বৈশিষ্ট্য হল, এখানে দেবী ব্যাঘ্রবাহিনীকে ভোগ নিবেদন করার আগে পরিবারের কুলদেবতা শ্রীশ্রীরঘুনাথচন্দ্র জিউকে ভোগ নিবেদন করা হয়। ভোগের ক্ষেত্রেও রয়েছে বেশ কিছু বিশেষত্ব। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে দেবীকে পঞ্চব্যাঞ্জন সহকারে অন্নভোগ নিবেদন করা হয়। তার সঙ্গে থাকে পায়েস ও মিষ্টি। তবে কচু-কুমড়োর তরকারি ভোগে থাকতেই হবে। দশমীতে দেবীকে দই-চিঁড়ে ভোগ হিসাবে দেওয়া হয়।
এই পুজোয় বলিদান প্রথা আছে। মহাসপ্তমীতে চালকুমড়ো বলি হয় এবং মহাষ্টমীতে শ্বেতছাগ ও মহানবমীতে কালোছাগ বলি দেওয়া হয়।
দশমীর রাত্রে শোভাযাত্রা সহকারে স্থানীয় এক পুকুরে প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। ঐতিহ্য ও পরম্পরায় নবগ্রামের এই প্রাচীন দুর্গোৎসব আজও অমলিন।
আরও পড়ুন
বিসর্জনের আগে প্রার্থনাসংগীত গেয়ে মাকে বিদায় জানানো হয় চোরবাগান চট্টোপাধ্যায় পরিবারে
একবার গদাই এঁকে দিয়েছিলেন কামারপুরের লাহাবাড়ির মা দুর্গার চোখ
ভট্টাচার্য বংশের ‘মঠের বাড়ির দুর্গোৎসব’-ই সিঙ্গি গ্রামের সবচেয়ে প্রাচীন দুর্গাপূজা