নিট পরীক্ষা নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড়ের মাঝে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক অস্বচ্ছতার অভিযোগে ইউজিসি-নেট পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অনিয়মের অভিযোগের তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হয়েছে। আবার নতুন করে ইউজিসি-নেট পরীক্ষা নেওয়া হবে, তবে চূড়ান্ত দিনক্ষণ এখনও জানানো হয়নি।
গত মঙ্গলবার ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (NTA) পরিচালিত ইউজিসি-নেট পরীক্ষায় প্রায় ৯ লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। কিন্তু মাত্র একদিন পরেই, বুধবার কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের পক্ষ থেকে পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণা করা হয়। বিবৃতিতে জানানো হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম থ্রেট অ্যানালিসিস ইউনিট থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে গরমিলের অভিযোগ এসেছে। প্রাথমিক তদন্তে পরীক্ষায় বেনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ইউজিসি-নেট পরীক্ষার গরমিলের অভিযোগ তদন্ত করবে সিবিআই। পুনঃপরীক্ষার দিনক্ষণ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। পরবর্তীকালে পরীক্ষার নতুন তারিখ জানানো হবে। প্রতি বছরই জুন ও ডিসেম্বর মাসে ইউজিসি-নেট পরীক্ষা আয়োজিত হয়। এটি ‘জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ’ প্রদান এবং দেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর’ নিয়োগের জন্য যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা।
স্নাতক স্তরে ভর্তি প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে চালু অভিন্ন পোর্টাল
এ বছর জুন পর্বের ইউজিসি-নেট পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল ১৬ জুন, তবে বিশেষ কারণে তা পিছিয়ে ১৮ জুন করা হয়। ওই দিন দু’টি অর্ধে দেশের বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে ‘ওএমআর’ শিটের মাধ্যমে পরীক্ষা আয়োজিত হয়েছিল।
অন্যদিকে, NEET পরীক্ষা নিয়ে গোটা দেশে চলছে জোর বিতর্ক। পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারকারী ৬৭ জনের মধ্যে ৬ জন গ্রেস মার্কস পেয়েছেন। সেই গ্রেস মার্কস বাতিল হলে তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৬০-৭০ পয়েন্ট কমে যাবে। নিট পরীক্ষায় ১,৫৬৩ জন পরীক্ষার্থী ‘ভুল’ প্রশ্নের জন্য গ্রেস মার্কস পেয়েছিলেন, যা পরবর্তীতে বাতিল করা হয়েছে।
নিট পরীক্ষার অসঙ্গতি নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, গাফিলতির অভিযোগের তদন্ত চলবে, কিন্তু কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া বন্ধ করা হবে না। আগামী ৬ জুলাই থেকে কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া শুরু হবে। নিটে সিবিআই তদন্তের দাবিও খারিজ করেছে শীর্ষ আদালত। তবে নিটের অসঙ্গতি নিয়ে এনটিএ এবং কেন্দ্রকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
ইউজিসি-নেট এবং নিট পরীক্ষা নিয়ে চলমান এই বিতর্ক শিক্ষামহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। পরীক্ষার্থীরা এখন নতুন পরীক্ষার তারিখের অপেক্ষায় রয়েছেন এবং সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অস্বচ্ছতা দূর করার আশায় আছেন।