আত্মবিশ্বাস বাড়ানো জীবনে সবচেয়ে কঠিন কাজ। আত্মবিশ্বাস থাকলে জীবনে অনেক কঠিন কাজই খুব সহজে হয়ে যায়।
প্রত্যেকে মানসিক ভাবে আত্মবিশ্বাসী হন না। প্রত্যেককেই আত্মবিশ্বাস অর্জন করে নিতে হয়। তবে সব কাজটা এত সহজে হয় না। অনেক সময় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা খারাপ হলে অনেকেরই আত্মবিশ্বাস কমে যায়। আবার অনেকেই আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভোগে, নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে কোনো ধারণাই থাকে না। সে ক্ষেত্রেও আত্মবিশ্বাস বাড়ানো খুব কঠিন।
কীভাবে বাড়াবেন আত্মবিশ্বাস
নিজের কৃতিত্ব নিয়ে গর্ববোধ করুন
নিজের জীবনে যে সব কৃতিত্ব অর্জন করেছেন তা নিয়ে গর্ববোধ করুন। জীবনে সে রকমের পছন্দের বিষয় নিয়ে তালিকা তৈরি করুন। যখনই কিছু ভালো লাগার কাজ করবেন তখনই তা লিখে রাখুন। পরে যখন মন খারাপ হবে, আত্মবিশ্বাস কম থাকবে বা কোনো কিছু ভালো লাগছে না বা উৎসাহ পাচ্ছেন না বলে মনে হবে, তখন সেই তালিকায় চোখ বোলান।
যে কাজে পারদর্শী সেদিকে বিশেষ নজর দিন
প্রত্যেকেরই কিছু নিজস্ব শক্তি ও প্রতিভা থাকে। নিজে যে কাজে পারদর্শী সেটিকে সবচেয়ে আগে চিহ্নিত করুন। শুধু চিহ্নিত করাই নয়, প্রতিভার সঠিক বিকাশ ঘটান। তা হলেই আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
নিজের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করুন
নিজের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করুন। সেটা পূরণ করতেও উদ্যোগী হন। বড়ো বড়ো লক্ষ্যমাত্রা নয় ছোটো ছোটো লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেও আত্মবিশ্বাস ফিরে আসবে।
মনে মনে নিজের সম্পর্কে ভালো কথা আওড়ে যান
আত্মবিশ্বাস বাড়াতে ‘সেলফ টক’ খুব দরকারি। ‘সেলফ টক’ মানে নিজের সঙ্গে কথা বলা। নিজের সম্পর্কে ইতিবাচক কথা মনে মনে অনবরত বলে যান। নিজেকে নিজের সবচেয়ে ভালো বন্ধু মনে করে ‘চিয়ার আপ’ করুন।
শখকে প্রাধান্য দিন
নিজের হবি তথা শখকে ভালোবাসুন। যেটা করতে আপনার ভালো লাগে, তাকে গুরুত্ব দিন, নিজের প্যাশন দিয়ে সেটা করুন। এতে যেমন দক্ষতা বাড়বে তেমনই মোটিভেটেডও হবেন।
অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করবেন না
কখনও অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করবেন না। এটা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। ২০১৮ সালে ‘ব্যক্তিত্ব ও ব্যক্তিগত ফারাক’ (Personality and Individual Differences) শীর্ষক গবেষণাপত্রে বলা হয়, একজন ব্যক্তি নিজেকে কোন চোখে দেখে তার সঙ্গে অন্যের প্রতি তার মনে কতটা হিংসা আছে, তার সরাসরি সম্পর্ক আছে। যত বেশি হিংসার উদ্রেক হবে মনে, তত বেশি করে নিজের সম্পর্কে খারাপ ধারণা হবে। জীবন কোনো প্রতিযোগিতা নয়। অন্যের নয়, নিজের জীবনের ওপর ফোকাস করুন।
যাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করছেন তাদের ওপর নজর দিন
যাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করছেন তার ওপর বিশেষ নজর দিন। আমাদের চারপাশে থাকা মানুষরা আমাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। তাই নেতিবাচক, নিন্দুকদের জীবন থেকে ছেঁটে ফেলুন। যারা আপনাকে ভালোবাসে, সব সময় আপনার থেকে সেরাটা চায়, তাদের কাছে থাকুন।
নিজের যত্ন নিন
নিজেকে ভালোবাসতে শিখুন। নিজের শরীর ও মনের খেয়াল রাখুন। নিজেকে যত্নে রাখলে তবেই আত্মবিশ্বাস বাড়বে। স্বাস্থ্যকর খাবার খান, শরীরচর্চা করুন, ভালো করে ঘুমোন, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন। ভয় পাবেন না, ভয়ের মোকাবিলা করতে শিখুন। সবসময় শোলের গব্বর সিংয়ের কথা মনে রাখবেন – ‘যো ডর গয়া ওহ মর গয়া’।
কেমন হয় আত্মবিশ্বাসে ভরপুর একজন মানুষ
নিজে যা মনে করেন সেটাই করে দেখান একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষ। অন্যের পছন্দসই মন-জোগানো কাজ নয়, নিজের পথে হেঁটে কঠিন কাজ অনায়াসে করে ফেলেন আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তি।
ঝুঁকি নিতে ভয় পান না আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তি।
নিজের ভুল স্বীকার করতে ভয় পান না একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষ।
ভুল থেকেই শিক্ষা নিয়ে নতুন পথে এগিয়ে যান তাঁরা। ভুল যেমন স্বীকার করেন তেমনই প্রশংসাও গ্রহণ করতে পারেন এমন ব্যক্তি।
ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করেন আত্মবিশ্বাসে ভরপুর একজন মানুষ।
আরও পড়ুন
গঠনমূলক সামাজিকতা কীভাবে একাকিত্ব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে