মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার আগেই রাজ্য রাজনীতিতে মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মহায়ুতি (বিজেপি-শিবসেনা-এনসিপি) এবং মহাবিকাশ আঘাড়ী (এমভিএ) (কংগ্রেস-শিবসেনা ইউবিটি-এনসিপি এসপি)—দুই জোটই নিজেদের জয়ের বিষয়ে আশাবাদী এবং মুখ্যমন্ত্রী পদে দাবি জানাতে শুরু করেছে। তবে এই দুই জোটের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
মহায়ুতি জোট জিতলে কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী?
মহায়ুতি জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে এখনই নানা মতানৈক্য সামনে এসেছে। শিবসেনা নেতা ও বিধায়ক সঞ্জয় শিরসাট মন্তব্য করেছেন, “বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের নির্বাচনে লড়েছে মহায়ুতি জোট। ভোটাররা শিন্ডেকে সমর্থন করেছেন এবং তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার অধিকার রাখেন।”
অন্যদিকে, বিজেপি নেতা প্রবীণ দারেকর মনে করেন, “যদি বিজেপির কেউ মুখ্যমন্ত্রী হন, তবে তিনি দেবেন্দ্র ফডনবীশ।”
এদিকে, এনসিপি নেতা অমল মিতকারি দাবি করেছেন, উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারই মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য। তবে বিজেপির শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, জোটের তিন শরিক একত্রে বসে একটি “যথাযথ” সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিজেপি এই নির্বাচনে সর্বাধিক ১৫২টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে এবং তারা সবচেয়ে বড় দল হিসেবে উঠে আসার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। যদিও মহায়ুতি জোটের তরফে আনুষ্ঠানিক মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি, তবে নির্বাচনী প্রচারে বিজেপি পোস্টার-ব্যানারে দেবেন্দ্র ফডনবীশকে গুরুত্ব দিয়েছিল।
এমভিএ জোট জিতলে কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী?
মহাবিকাশ আঘাড়ী জোটেও মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে মতানৈক্য স্পষ্ট। কংগ্রেস প্রধান নানা পাটোলে দাবি করেছেন, ভোটের প্রবণতা অনুযায়ী কংগ্রেসই বেশি আসন পাবে এবং মুখ্যমন্ত্রী পদ তাদের প্রাপ্য। তবে পরে তিনি নিজের অবস্থান থেকে সরে এসে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, সেই সিদ্ধান্ত দলের হাইকম্যান্ড নেবে।”
পাটোলের এই মন্তব্যের পর শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে) নেতা সঞ্জয় রাউত তাঁর সমালোচনা করে বলেন, “কংগ্রেস হাইকম্যান্ড কি পাটোলেকে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে? যদি তা হয়ে থাকে, তবে মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী এবং প্রিয়ঙ্কা গান্ধী প্রকাশ্যে তা ঘোষণা করুন।”
এদিকে, বিজেপি নেতা প্রবীণ দারেকর পাটোলের মন্তব্যকে “মুঙ্গেরিলাল কে হাসিন সপনে” বলে আখ্যা দেন।
মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে এই উত্তেজনা এবং অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আগামী শনিবার (২৩ নভেম্বর, ২০২৪) ফলাফল ঘোষণা মহারাষ্ট্রে। ফলাফল ঘোষণার পর কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তা দেখতে রাজ্যের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।