শ্রয়ণ সেন
যার অপেক্ষা ছিল, অবশেষে সে এল। আর এক সন্ধ্যাতেই রীতিমতো বাজিমাত করে ফেলল। গোটা দক্ষিণবঙ্গ জুড়েই তীব্র কালবৈশাখী হানা দিল সোমবার সন্ধ্যায়। কলকাতা এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল ভাসল প্রবল বৃষ্টিতে। সাধারণত মে মাসে এই পরিমাণ বৃষ্টি দেখা যায় না। কলকাতায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৭১ মিলিমিটার। অর্থাৎ গোটা মে মাস জুড়ে যা বৃষ্টি হওয়ার কথা, তার দুই-তৃতীয়াংশ বৃষ্টি এক সন্ধ্যাতেই হয়ে গিয়েছে।
সাধারণ মানুষের ধৈর্যের বড়ো অভাব। এখন অনেকেই আবহাওয়া সংক্রান্ত বোদ্ধা হয়ে গিয়েছেন। তাই সোমবার সকালে বৃষ্টি হল না দেখে আবহাওয়া দফতরের ওপরে কী গালটাই না পাড়লেন ওঁরা। যদিও এই নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলোর জবাব পাওয়া যাবে না।
১) কে বলেছিল সোমবার সকাল থেকেই ঝমঝমেই বৃষ্টি নামবে?
২) অতীত হাতড়ে বলুন গরমকালে দিনের বেলায় কটা কালবৈশাখী দেখেছেন আর সন্ধ্যায় কটা?
৩) এখন আকাশ পরিষ্কার মানেই যে এক ঘণ্টা পর ঝড় হবে না, সেটা কী করে জানলেন? অতীতে ঝড়ের সময় এই রকম হত বুঝি! আমার তো মনে পড়ে না।
তবে সাধারণ মানুষদের দোষ দেওয়া যায় না, যেখানে সেলিব্রেটিরাই হাসিমস্করা করছে। অথচ কেউ যদি ওঁদের শিল্পচর্চা নিয়ে হাসিমস্করা করে, সেটা ওঁদের ভালো লাগবে তো? আবহাওয়াচর্চার মধ্যে প্রচণ্ড চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আর বিশেষ করে কালবৈশাখীর পূর্বাভাস দেওয়া আরও সমস্যার। এর থেকে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া অনেক সোজা।
ও হ্যাঁ, একটা কথা বলে দিই। এই কালবৈশাখীর ব্যাপারটাকে যদি ‘ওয়েব সিরিজ’ হিসেবে মানেন, তা হলে সোমবার সেটার প্রথম এপিসোডটাই আমরা দেখলাম। এখনও আরও চার-পাঁচটা এপিসোড হবে বলেই মনে হয়। কারণ আগামী অন্তত পাঁচ-ছ’দিন রোজই ঝড়বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি এবং তীব্র বজ্রপাতের আশঙ্কাও রয়েছে।