কলকাতা: শুক্রবার কামদুনি ধর্ষণ এবং হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত দু’জনের সাজা পরিবর্তন করে আমৃত্যু কারাদণ্ড ঘোষণা করেছেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। জানা গিয়েছে, স্পেশাল লিভ পিটিশন ফাইল করা হচ্ছে। পরিবারের সঙ্গে কথা বলেই সর্বোচ্চ আদালতে যেতে চায় রাজ্য।
২০১৩ সালে উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনিতে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। সেই ঘটনার তদন্তভার নেয় সিআইডি। নিম্ন আদালত ৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। তিনজনের ফাঁসির সাজাও দেয়। বাকি তিনজনেরও শাস্তি হয়। তবে এরপর মামলা যায় হাইকোর্টে।
শুক্রবার হাইকোর্টে রায়দান হয় এই মামলার। আদালত এক ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত-সহ আরও একজনকে বেকসুর খালাস করে দেয়। বাকি দুই ফাঁসির সাজাপ্রাপ্তের আমৃত্যু কারাদণ্ড হয়। অন্য দু’জন খালাস হয় ১০ হাজার টাকা জরিমানার বদলে। এই রায়ে হতাশ নির্যাতিতার পরিবার, কামদুনি।
ঘটনায় প্রকাশ, হাইকোর্টে কামদুনি-রায় ঘোষণা হতেই হতাশ নির্যাতিতার পরিবার। খুশি নয় কামদুনির মানুষ। হতাশায় ভেঙে পড়েন কামদুনির সুবিচার চেয়ে আন্দোলনকারী মৌসুমী কয়াল এবং টুম্পা কয়ালরা। বিচারপতিদের এজলাসে যাওয়ার পথে রাস্তাতেই বসে পড়ে কান্নাকাটি শুরু করেন তাঁরা। কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞানও হয়ে যান মৌসুমী!
পরিবারের তরফে তখনই জানিয়ে দেন, হাই কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। রায় মেনে নেয়নি রাজ্য সরকারও। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের হয়ে গোটা বিষয়টি দেখছে সিআইডি। ডিআইজি স্তরের এক অফিসারের অধীনে একটি বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে। সেই দলের দুই আধিকারিক শুক্রবারই মৌসুমীর বাড়িতে এসে দেখা করেন তাঁর সঙ্গে। ১১টার কিছু আগে সিআইডির একটি দল কামদুনিতে ঢোকে। ২০ মিনিট ছিল সেখানে। সেখানে ছিলেন নির্যাতিতার বাবা ও মা।
তবে, রাজ্যের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতার ভাই। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে কী করবে? সিআইডি তো চার্জশিট সাজিয়েছে ১ জনের বিরুদ্ধে। ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আমি মুখ্যমন্ত্রীকে তিন বার চিঠি দিয়েছি। চিঠিতে লিখেছি, কোনও সরকারি আইনজীবী এই মামলা লড়তে চাইছেন না। আপনি হস্তক্ষেপ করুন। কোনও চিঠির আজ পর্যন্ত জবাব পাইনি। এই রায়ের পর কামদুনি সুবিচারের দাবিতে ফের পথে নামবে। ফের অবরোধ হবে, বিক্ষোভ দেখবে রাজ্য।”