উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: এ বার জয়নগর-২ ব্লকে শুরু হল বিনা কর্ষণে সূর্যমুখী ও ভুট্টা ফলনের পরীক্ষামূলক চাষাবাদ। এই চাষ করে লাভবান হয়েছেন প্রান্তিক কৃষক জয়দেব পুরকাইত। তাঁর এই সাফল্যের পর এই চাষ দেখতে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা।
জল সংকটের সমাধান
জয়দেব পুরকাইতের বাড়ি জয়নগর-২ ব্লকের ৯ নম্বর সোনাটিকারিতে। সেখানে তাঁর মতন আরও ৪০ জন কৃষক এই চাষ করেছেন। মূলত এই এলাকায় আগে আলু চাষ হতো। সে ক্ষেত্রে জলের অপচয় হতো প্রচুর হারে। তাঁর উপর এই এলাকা-সহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় রয়েছে জলের সংকট। চাষের জন্য জল পাওয়া যায় না বহু জায়গায়।
সেই সমস্যার সমাধান করতে এবারে উদ্যোগী হয়েছে জয়নগর -২ ব্লক কৃষি অফিস। সমস্যার সমাধান করতে কৃষকদের দেওয়া হয়েছে ড্রিপ মেশিন। যার সাহায্যে জল ফোঁটা, ফোঁটা করে ফেলা হচ্ছে নির্দিষ্ট জায়গায়। ফলে জলের অপচয় রোধ করা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে জমিতে বিনা কর্ষণে কী ভাবে চাষ করা যায়, সেই দিকটিও দেখানো হচ্ছে কৃষকদের। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিকে বলা হচ্ছে ড্রিপ ইরিগেশান এন্ড নো টিলেজ সিস্টেম। যার মাধ্যমে কৃষকরা লাভবান হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বিনা কর্ষণে চাষ
সম্প্রতি এই কাজ খতিয়ে দেখতে এলাকায় গিয়েছিলেন জয়নগর-২ ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা অন্তিমা হালদার, সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সৌরভ মাজি-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
শীতের শুরুতেই এলাকায় শুরু হয়েছিল এই সূর্যমুখী ও ভুট্টা চাষ। মূলত বর্ষার সময় নীচু জমিতে জল জমে থাকে। সেই জল শুকিয়ে জমি তৈরি করতে অনেকটাই সময় লেগে যেত কৃষকদের। তবে এ বার এই পদ্ধতিতে কৃষকদের জমিতে আর কোনো কর্ষণ করতে হবে না। তাঁরা সরাসরি জমিতে বীজ বপন করবেন। জমির কোনো বাহ্যিক পরিবর্তন না করে। এ ক্ষেত্রে জমির নরম মাটিতে নির্দিষ্ট দূরত্বে দুটি করে দানা বপন করা হচ্ছে।
এই চাষের মাধ্যমে কৃষকরা ১ বিঘা জমিতে প্রায় ৩ কুইন্টাল সূর্যমুখীর দানা তুলতে পারবেন। শীতের শেষে সেই ফসল ফলতে শুরু করেছে। যার ফলে খুশি চাষিরা। আর তাঁদের এই পরামর্শে কাজ হওয়ায় খুশি ব্লক কৃষি আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন: বিনা কর্ষণে সূর্যমুখী চাষ, পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু সুন্দরবনের মথুরাপুরে