২০২৫ সালের বর্ষা দক্ষিণবঙ্গের জন্য যেন এক অভূতপূর্ব চমক হয়ে উঠেছে। ২০২১ সালের পর এই প্রথম দক্ষিণবঙ্গে এতটা অতিবৃষ্টি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চলতি বছর আবহাওয়ার আচরণ সাধারণ নিয়মকে তোয়াক্কা না করে চলছে। পূর্বাভাস না থাকলেও আচমকাই তৈরি হচ্ছে নিম্নচাপ, কখনও বা গভীর নিম্নচাপে রূপ নিচ্ছে একপ্রকার আগাম সংকেত ছাড়াই। ফলে দক্ষিণবঙ্গের আকাশে রোদের দেখা যেন দুর্লভ হয়ে উঠেছে।
আবহাওয়া দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বর্ষা মরসুমে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ১২% বেশি। অপরদিকে, উত্তরবঙ্গে দেখা যাচ্ছে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র – পাহাড়ি অঞ্চলগুলিতে কিছুটা বৃষ্টি হলেও সমতলের জেলাগুলিতে ১৯% কম বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বঙ্গোপসাগরের উপর চলতি মরসুমে ঘনঘন এবং হঠাৎ করে নিম্নচাপের সৃষ্টি হওয়াই দক্ষিণবঙ্গে অতিবৃষ্টির অন্যতম কারণ। বর্ষার প্রভাব এমনই যে শহর কলকাতা সহ আশপাশের জেলাগুলিতে একটানা বৃষ্টির ফলে জলমগ্ন হওয়ার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে ফের এক শক্তিশালী নিম্নচাপ দক্ষিণবঙ্গে আঘাত হানতে পারে। এর জেরে আরও কিছুদিন দক্ষিণবঙ্গবাসীকে প্রস্তুত থাকতে হতে পারে টানা বৃষ্টির জন্য।
তবে স্বস্তির খবর, বুধবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে কিছুটা রোদের মুখ দেখা যেতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। ভারী বৃষ্টির প্রবণতা সাময়িকভাবে কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে চাষাবাদের ক্ষেত্রে এই অনিয়মিত বৃষ্টিপাত নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। দক্ষিণবঙ্গে অতিবৃষ্টিতে জমির ক্ষতি যেমন হচ্ছে, তেমনই উত্তরবঙ্গে জলসেচের অভাবে ফসলের হাল খারাপ।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার এবং কৃষি দফতরের তরফে নজরদারি ও প্রয়োজনীয় সহায়তা বাড়ানোর দাবি তুলেছেন কৃষিজীবীরা