অস্ট্রেলিয়া: ৩৫২-৭ (মিশেল মার্শ ৯৬, স্টিভ স্মিথ ৭৪, জসপ্রীত বুমরাহ ৩-৮১, কুলদীপ যাদব ২-৪৮)
ভারত: ২৮৬ (৪৯.৪ ওভার) (রোহিত শর্মা ৮১, বিরাট কোহলি ৫৬, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৪-৪০, জোশ হ্যাজলউড ২-৪২)
রাজকোট: ইতিহাস গড়া হল না। হল না প্রথম বার অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করাও। রাজকোটে সিরিজের তৃতীয় একদিনের ম্যাচে ৬৪ রানে হেরেও অবশ্য সিরিজ জিতে গেল ভারতই। বুধবারের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করে ৩৫২ রান তোলে। ভারত শেষ হয়ে যায় ২৮৬ রানে।
টসে জেতার ফায়দা তুলল অস্ট্রেলিয়া
টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। রাজকোটের পিচে বরাবরই রান ওঠে। পরিকল্পনা অনুযায়ীই শুরুটা করেছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। জসপ্রীত বুমরাহ এবং মহম্মদ সিরাজের করা বল বার বার বাউন্ডারিতে পাঠাতে শুরু করেন তিনি। বিশ্বকাপের আগে ওয়ার্নারের ফর্ম চিন্তায় ফেলতে পারে অনেক দলকেই। ওয়ার্নারকে শেষ পর্যন্ত আউট করেন প্রসিধ কৃষ্ণ। যদিও ওয়ার্নার নিজের দোষে উইকেট ছুড়ে দেন। প্রসিধের নির্বিষ বল পিছন দিকে খেলতে গিয়ে তিনি ক্যাচ তুলে দেন উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুলের হাতে। ৫৬ রান করে আউট হন ওয়ার্নার।
শুধু ওয়ার্নার নন, অস্ট্রেলিয়ার অন্য ওপেনার মিচেল মার্শও এ দিন দ্রুত রান তুলছিলেন। ওয়ার্নার আউট হলেও তিনি অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ৯৬ রানের মাথায় আউট হয়ে যান তিনি। ১৩টি চার এবং তিনটি ছক্কা মারেন।
মার্শ যখন আউট হয়ে সাজঘরে ফিরছেন, তখন ২৮ ওভারে অস্ট্রেলিয়া তুলেছে ২১৫ রান। হাতে থাকা ২২ ওভারে অস্ট্রেলিয়া ৪০০ রান পার করে দেওয়ার মতো খেলছিল। ক্রিজে থাকা স্টিভ স্মিথ এবং মার্নাস লাবুশানে ক্রিজে ছিলেন। স্মিথ ৫০ রান পারও করেছিলেন। কিন্তু তার পরেই ৭৪ রানের মাথায় মহম্মদ সিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান। অস্ট্রেলিয়ার রানও আটকে যায়।
লাবুশানে ৫৮ বলে ৭২ রান করায় ৩৫০ রান পার করে অস্ট্রেলিয়া। তবে অ্যালেক্স ক্যারি, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং ক্যামেরন গ্রিন রান পাননি। ১০ ওভারে ৮১ রান খরচ করলেও ভারতের হয়ে তিনটি উইকেট নেন জসপ্রীত বুমরাহ। দুটি উইকেট নেন কুলদীপ যাদব। একটি করে উইকেট সিরাজ এবং প্রসিধের। রান দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা কৃপণ ছিলেন একমাত্র ওয়াশিংটন সুন্দর। ১০ ওভারে ৪৮ রান দিয়ে কিছুটা রাশ টেনেছিলেন তিনি।
বুধবারের ম্যাচে ভারতীয় দলে অনেকেই ছিলেন না। পরিস্থিতি এমনই ছিল যে সৌরাষ্ট্রের চার জন ক্রিকেটার ভারতীয় দলের হয়ে ফিল্ডিং করতে নামেন।
কাজে লাগল না রোহিতের ৮১
শুভমন এবং ঈশান না থাকায় রোহিতের সঙ্গে কে ওপেন করবেন তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। মনে করা হয়েছিল পুরোনো জুটি রোহিত এবং রাহুলকে ওপেন করতে দেখা যাবে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ৩৫২ রান তাড়া করতে রোহিতের সঙ্গে ব্যাট করতে নামেন সুন্দর। ১০.৫ বলের সেই জুটিতে ভারত ৭৪ রান তোলে। তার পরেই ম্যাক্সওয়েলের বলে বড়ো শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন ওয়াশিংটন। ১৮ রান করেন তিনি। উলটো দিকে থাকা রোহিত ততক্ষণে স্বমেজাজে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫৫০ ছক্কা মারার নজিরও গড়ে ফেলেন তিনি। কিন্তু ৮১ রান করে হঠাৎ আউট হয়ে যান। ম্যাক্সওয়েলের করা বল তাঁর দিকেই মেরেছিলেন রোহিত। সেই বল বোলারের হাতে জমে যায়। ম্যাক্সওয়েল মুখ সরানোর সময় হাত বাড়িয়েছিলেন। সেখানেই আটকে যায় বল। তিনি নিজেও বুঝতে পারেননি যে ক্যাচ ধরতে পারবেন। ৫৬ রান করে আউট হন বিরাট। তাঁর উইকেটও নেন ম্যাক্সওয়েল। ভারতের প্রথম তিন ব্যাটারের উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলে দেন অসি অলরাউন্ডার।
বিরাট যখন সাজঘরে ফিরছেন ভারতের তখন ১৭১ রান। ক্রিজে শ্রেয়স আয়ার এবং লোকেশ রাহুল। তাঁদের উপর ভরসা করেছিল ভারত। কঠিন লক্ষ্যের সামনে ভারতের মিডল অর্ডার কেমন খেলে সেই দিকে নজর ছিল সমর্থকদের। চোট সারিয়ে দলে ফেরা দুই ক্রিকেটারের কাছে সুযোগ ছিল দলকে জেতানোর। কিন্তু রাহুল ২৬ রানের বেশি করতে পারেননি। তাঁদের ৫২ রানের জুটি ভেঙে দেন মিচেল স্টার্ক। সূর্যকুমারও এই ম্যাচে রান পাননি। মাত্র ৮ রান করেন তিনি। সূর্য আউট হতেই ভারতের জয়ের আশা শেষ হয়ে যায়। বাকিটা ছিল সময়ের অপেক্ষা। দু বল বাকি থাকতেই শেষ হয়ে গেল ভারতের ইনিংস।
আরও পড়ুন
শুটিংয়ে ভারতের আরেকটি পদক, এশিয়াডে রুপো জিতলেন অনন্তজিত সিং