শ্রীলঙ্কা: ৫০ (১৫.২ ওভার) (কুশল মেন্ডিস ১৫, দুশন হেমন্ত ১৩ নট আউট, মহম্মদ সিরাজ ৬-২১, হার্দিক পাণ্ড্য ৩-৩)
ভারত: ৫১-০ (৬.১ ওভার) (শুভমন গিল ২৭ নট আউট, ঈশান কিষান ২৩ নট আউট)
কলম্বো: এশিয়া কাপের শেষ কয়েকটা ম্যাচ যে রকম রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনায় শেষ হল তাতে ফাইনালের ম্যাচ এমন একপেশে হবে তা কেউ ভাবতে পারেননি। চোখের পলক ফেলতে না ফেলতে একা হাতে শ্রীলঙ্কাকে খতম করলেন সিরাজ। মাত্র ১৫.২ ওভারে শেষ হয়ে গেল শ্রীলঙ্কার ইনিংস। জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান ভারত তুলে নেল মাত্র ৬.১ ওভারে। ভারত ১০ উইকেটে হারাল শ্রীলঙ্কাকে।
নির্ধারিত ১০০ ওভারের একদিনের ম্যাচ শেষ হয়ে গেল মাত্র ২১.৩ ওভারে। আগে ভারত-শ্রীলঙ্কা কোনো একদিনের ম্যাচে মোট রান এত কম কখনও হয়নি। এর মূলে রয়েছে ভারতের মহম্মদ সিরাজের বিধ্বংসী বোলিং। মাত্র ২১ রান দিয়ে ৬ উইকেট পেলেন সিরাজ। তার মধ্যে এক ওভারেই তুলে নিলেন ৪ উইকেট। আর শ্রীলঙ্কাকে অত্যন্ত কম রানে বেঁধে রাখতে সিরাজ পাশে পেলেন হার্দিক পাণ্ড্যকে। হার্দিক মাত্র ৩ রান পেলেন ৩ উইকেট।
রবিবার কলম্বোর আর প্রেমদাস স্টেডিয়ামে আয়োজিত ফাইনাল খেলায় ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হলেন মহম্মদ সিরাজ। এবং এশিয়া কাপে সামগ্রিক ভাবে ‘প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ’ হলেন কুলদীপ যাদব।
নিজের দ্বিতীয় ওভারে ৪ উইকেট সিরাজের
মেঘলা আকাশে খেলা শুরু হয়। টসে জিতে ব্যাট নেয় শ্রীলঙ্কা এবং সেটাই তাদের কাল হয়। প্রথম আঘাত হানেন জসপ্রীত বুমরাহ। ম্যাচে সবে তখন তৃতীয় বল। কুশল পেরেরাকে তুলে নিলেন বুমরাহ। দলের ২ রানে রাহুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরত গেলেন পেরেরা। কুশল শূন্য হাতে প্যাভিলিয়নের পথ ধরলেন।
ম্যাচ তিন ওভার গড়াল। শ্রীলঙ্কার রান ১ উইকেটে ৮ রান। মহম্মদ সিরাজ বল করতে এলেন। তাঁর দ্বিতীয় ওভার এবং দলের ম্যাচের চতুর্থ ওভার। এই ওভারেই খেল দেখালেন সিরাজ। ৪টি উইকেট নিলেন, কিন্তু হ্যাটট্রিক হল না। সিরাজের সুইং সামলাতেই পারলেন না পাথুম নিসঙ্ক, সাদিরা সমরবিক্রম, চরিত অসলঙ্কা এবং ধনঞ্জয় ডি সিলভা। চতুর্থ ওভারের প্রথম, তৃতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ বলে উইকেট নিলেন সিরাজ। দলের রা দাঁড়াল ৮-১ থেকে ১২-৫।
হার্দিকের ৩ বলে ৩ উইকেট
দলের ১২ রানেই ষষ্ঠ উইকেট পড়ল। সিরাজের বলে বোল্ড হলেন দাসুন শনক। শ্রীলঙ্কার পাঁচটা উইকেট তুলতে সিরাজ খরচ করলেন মাত্র ১৬টা বল। একদিনের ম্যাচে দ্রুততম ৫ উইকেট তোলার যে রেকর্ড এত দিন শ্রীলঙ্কার চামিন্ডা ব্যাসের ছিল তাকে ছুঁলেন সিরাজ।
এর পর উইকেট পতন কিছুটা আটকানোর চেষ্টা কুশল মেন্ডিস এবং দুশন হেমন্তের। দলের রান ৩৩ পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেলেন তাঁরা। শ্রীলঙ্কার সপ্তম উইকেট নিলেন সেই সিরাজ। ব্যক্তিগত ১৭ রানে বোল্ড হলেন মেন্ডিস। ৭ ওভার বল করে ২১ রান দিয়ে ৬টি উইকেট তুলে নিলেন সিরাজ। ভারতের পক্ষে একদিনের ম্যাচে চতুর্থ সর্বোত্তম হিসাব।
শ্রীলঙ্কার বাকি ৩ উইকেট পড়ে গেল ১৭ রান যোগ করে। ২.২ ওভার বল করে মাত্র ৩ রান দিয়ে হার্দিক পাণ্ড্য তুলে নিলেন দুনিথ ওয়েলালেগ, প্রমোদ মধুসন এবং মাতিশা পাতিরানাকে।
৬.১ ওভারে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছোল ভারত
জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ৫১ রান তুলতে ভারতের লাগল ৬.১ ওভার। ব্যাটে ঝড় তুললেন শুভমন গিল এবং ঈশান কিষান। ওয়েলালেগ, মধুসন এবং পাতিরানা ২ ওভার করে বল করলেন। অসলঙ্কা করলেন ১টি বল। কাউকেই সমীহ করে খেলার কোনো প্রশ্নই ছিল না। শুভমন আর ঈশান তা করেনওনি। শেষ পর্যন্ত শুভমন এবং ঈশান নট আউট থাকেন যথাক্রমে ২৭ আর ২৩ রানে।
আরও পড়ুন
একদিনের ম্যাচে দ্রুততম ৫ উইকেট, চামিন্ডার সঙ্গে নিজের নাম জুড়লেন মহম্মদ সিরাজ