এশিয়া কাপ: ব্যাটে-বলে উজ্জ্বল দুনিত ওয়েলালেগ, তবু ভারতের কাছে ৪১ রানে হারল শ্রীলঙ্কা  

0

ভারত: ২১৩ (৪৯.১ ওভার) (রোহিত ৫৩, রাহুল ৩৯, ওয়েলালেগ ৫-৪০, অসালঙ্কা ৪-১৮)

শ্রীলঙ্কা: ১৭২ (৪১.৩ ওভার) (ওয়েলালেগ৪২, ধনঞ্জয় ৪১, কুলদীপ যাদব ৪-৪৩, বুমরাহ ২-৩০)     

কলম্বো: এশিয়া কাপের ‘সুপার ফোর’-এর খেলায় শ্রীলঙ্কাকে ৪১ রানে হারাল ভারত। এই নিয়ে ‘সুপার ফোর’-এর পরপর দুটি ম্যাচে জিতল ভারত। এই পর্যায়ে তাদের শেষ খেলা বাংলাদেশের সঙ্গে। এই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ১৫ সেপ্টেম্বর।    

মঙ্গলবার কলম্বোর আর প্রেমদাস স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই ম্যাচে টসে জিতে ভারত ব্যাটিং নেয়। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বোলার, বিশেষ করে দুনিত ওয়েলালেগ ও চরিত অসালঙ্কার বলে কিছুটা চাপে থেকেই তারা ইনিংস শেষ করে ২১৩ রানে। অধিনায়ক রোহিত শর্মার অর্ধশত রান এবং কিছুটা কে এল রাহুলের ব্যাটিং ছাড়া বলার মতো কিছু ছিল না। ভারতের ইনিংস নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৫ বল বাকি থাকতেই শেষ হয়ে যায়।

কিন্তু জয়ের জন্য ২১৪ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে ভারতীয় বোলারদের বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কার ওয়েলালেগ এবং ধনঞ্জয় ডি সিলভা ছাড়া কেউই স্বচ্ছন্দ বোধ করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ৪১.৩ ওভারেই তাদের ইনিংস শেষ হয়ে যায়। শ্রীলঙ্কা করে ১৭২ রান। ফলে তারা ৪১ রানে পরাজয় বরণ করে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার সান্ত্বনা পুরস্কার দুনিত ওয়েলালেগের ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হওয়া।    

ভারতের শুরুটা ভালোই হয়েছিল

অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও শুবমন গিলের ওপেনিং জুটি খুব সুন্দর শুরু করে। তবে তারই মধ্যে রোহিত অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন। প্রথম উইকেটের জুটিতে তাঁরা ৮০ রান যোগ করেন। এর মধ্যে শুবমন করেন ১৯ রান। দলের ৮০ রানের মাথায় দুনিত ওয়েলালেগের বলে শুবমন বোল্ড আউট হন।

শুবমন আউট হতেই ভারতের খেলার ছন্দ কেটে যায়। এর মূলে ওয়েলালেগের বিধ্বংসী বোলিং। গতকালের সেঞ্চুরিয়ান বিরাট কোহলি এ দিন বিশেষ কিছু করতে পারেননি। মাত্র ৩ রান করে সেই ওয়েলালেগের বলে শনককে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান। দলের রান তখন ৯০। দলের স্কোরের সঙ্গে মাত্র ১ রান যোগ হতেই আউট হয়ে যান রোহিত। রোহিত অবশ্য এ দিনও অর্ধশত রান পূর্ণ করেন। রোহিতকেও তুলে নেন ওয়েলালেগ, আবার বোল্ড।

ঈশান-রাহুলের চেষ্টা

এর পর কিছুটা হাল ধরার চেষ্টা করেন উইকেটকিপার ঈশান কিষান এবং কে এল রাহুল। তাঁরা দলের রান টেনে নিয়ে যান ১৫৪-তে। ১৫৪-তে আউট হন রাহুল। ৩৯ রান করে সেই ওয়েলালেগের বলে তাঁকেই ক্যাচ দিয়ে আউট হন রাহুল। আবার উইকেট পড়তে শুরু করে ভারতের। ১৮৬ রানের মধ্যে ৯টি উইকেট পড়ে যায়। আউট হয়ে যান ঈশান কিষান, হার্দিক পাণ্ড্য, রবীন্দ্র যাদব, জসপ্রীত বুমরাহ এবং কুলদীপ যাদব। এর মধ্যে পাণ্ড্যকে তুলে নেন ওয়েলালেগ। তিনি ৪০ রান দিয়ে ভারতের ৫টি উইকেট তুলে নেন।

আর এই ওয়েলালেগের পাশাপাশি বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন চরিত অসালঙ্কাও। তিনি ৪ উইকেট দখল করেন মাত্র ১৮ রান দিয়ে। ৪৭ ওভারের শেষে দলের রান ৯ উইকেটে ১৯৭ রানে পৌঁছোতেই নামে বৃষ্টি। খেলা বন্ধ হয়ে যায়। বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়। মহম্মদ সিরাজকে সঙ্গে নিয়ে অক্ষর পটেল দলের রান পৌঁছে দেন ২১৩ রানে। ৫০তম ওভারের প্রথম বলে মহিষ ঠিকসানা তুলে নেন অক্ষরের উইকেট। অক্ষর আউট হন ২৬ রানে।

শুরুতেই শ্রীলঙ্কার উইকেট পতন

২১৪ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে ২৫ রানের মধ্যেই ৩টি উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। একে একে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন পতুম নিসঙ্ক, কুশল মেন্ডিস এবং দিমুত করুণারত্নে। নিসঙ্ক ও মেন্ডিসকে তুলে নেন জসপ্রীত বুমরাহ এবং করুণারত্নেকে আউট করেন মহম্মদ সিরাজ।

এর পর দলের হাল কিছুটা ধরার চেষ্টা করেন সদিরা সমরভিকরামা এবং চরিত অসলঙ্কা। কিন্তু কুলদীপ যাদব এঁদের দু’জনকেই তুলে নেন ৫ রানের ব্যবধানে। ৭৩ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। দলের ৯৯ রানের মাথায় আউট হন দাসুন শনক। রবীন্দ্র জাদেজার বলে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন শনক।

ধনঞ্জয়-ওয়েলালেগের চেষ্টা

সপ্তম উইকেটের জুটিতে দলের স্কোরে যোগ হয় ৬৩ রান। পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন ধনঞ্জয় ডি সিলভা ও দুনিত ওয়েলালেগ। দলের ১৬২ রানের মাথায় জাদেজার বলে শুবমন গিলকে ক্যাচ দিয়ে ধনঞ্জয় বিদায় নেওয়ার পরে আবার চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। তখনও তারা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৫২ রান দূরে।

চেষ্টা করছিলেন ওয়েলালেগ। কিন্তু কাউকে সঙ্গী পেলেন না। শেষ তিন ব্যাটার মহিশ ঠিকসানা, কসুন রজিতা এবং মতিশা পতিরানা যথাক্রমে ২, ১ এবং ০ রানে আউট হয়ে যান। এঁদের মধ্যে রজিতা এবং পতিরানাকে বোল্ড করে ৪টি উইকেট দখল করেন কুলদীপ যাদব। শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ হয়ে যায় ১৭২ রানে। ভারত এই ম্যাচ জিতে যায় ৪১ রানে।

বিজ্ঞাপন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.