ক্যান্ডি (শ্রীলঙ্কা): জেতার জন্য পাকিস্তানকে করতে হত ২৬৭ রান। কিন্তু বৃষ্টির জন্য তারা ব্যাট করতে নামতেই পারল না। ম্যাচ পরিত্যক্ত হল। ফলে এশিয়া কাপের গ্রুপ স্টেজে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে কোনো ফল হল না। দুই দেশ পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিল।
গ্রুপ ‘এ’-তে নেপালকে হারিয়ে এবং ভারতের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে শীর্ষে থাকল পাকিস্তান। এবং ভারত তাদের পয়েন্টের খাতা খুলল। নেপালের সঙ্গে তাদের খেলা সোমবার ৪ সেপ্টেম্বর।
শনিবার পল্লেকেলে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট নেয় ভারত। ঈশান কিষান ও হার্দিক পাণ্ড্যর তুখোড় ব্যাটিং-এ ভর করে ভারত পৌঁছে যায় ২৬৬ রানে। বল হাতে জ্বলে উঠেছিলেন পাকিস্তানের শাহিন শাহ আফ্রিদি। তিনি ৩৫ রানে ৪টি উইকেট পান।
শুরুতেই ভারতের বিপর্যয়
ভালোই শুরু করেছিলেন রোহিত শর্মা। প্রথম ৪.২ ওভারে ভারত রান তোলে বিনা উইকেটে ১৫। এর মধ্যে রোহিতই করেন ১১ রান। এর পরই জোর বৃষ্টি নেমে খেলায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। ৩৫ মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর আবার খেলা শুরু হতেই বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ভারত।
পঞ্চম ওভারের শেষ বলে নিজস্ব ১১ রানেই আউট হয়ে যান রোহিত। শাহিন শাহ আফ্রিদি সরাসরি বোল্ড আউট করেন। খেলতে নামেন বিরাট কোহলি। ওদিকে নিজস্ব দশম বলে খাতা খোলেন শুভমন গিল। কিন্তু সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলে প্যাভিলিয়নের পথ দেখেন কোহলি। তাঁর সংগ্রহে ছিল মাত্র ৪ রান। এ বারেও উইকেট-শিকারি আফ্রিদি। এ বারেও সরাসরি বোল্ড করেন কোহলিকে। ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ২৭-২।
গিলের সঙ্গে জুটি বাঁধেন শ্রেয়স আইয়ার। ব্যাটে কিছুটা ঝড় তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু নিয়মিত ব্যবধানেই উইকেট পড়তে থাকে ভারতের। দলের ৪৮ রানের মাথায় হরিস রাউফের বলে ফকর জমানকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন শ্রেয়স। তাঁর রান ৯ বলে ১৪। এর পর স্কোরবোর্ডে আরও ১৮ রান যোগ হওয়ার পর বিদায় নেন ওপেন করতে নামেন শুভমন গিল। ৩২ বলে ১০ রান করে হরিসের বলে বোল্ড হন।
হাল ধরলেন ঈশান, হার্দিক
ততক্ষণে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করতে শুরু করেছে ঈশান কিষান ও হার্দিক পাণ্ড্যর জুটি। ধীরে ধীরে তাঁরা শক্ত ভিতের ওপর দলকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু দু’জনেই ছিলেন মারমুখী। ৫০-এর দিকে এগোতে থাকেন দুই ব্যাটার।
অবশেষে ৫০-এ পৌঁছে যান ঈশান কিষান। কে এল রাহুলের জায়গায় দলে নিজের অন্তর্ভুক্তিকে যথার্থ প্রমাণ করলেন ঈশান। ২৮.২ ওভারে সাদাব খানের বলে ১ রান নিয়ে নিজের অর্ধশত রান পূর্ণ করেন ঈশান। এই রান করলেন মাত্র ৫৪ বলে। একদিনের ম্যাচে পরপর চারটে অর্ধশত রান করলেন তিনি। ২৯ ওভারের শেষে ভারতের রান দাঁড়াল ৪ উইকেটে ১৪৭ রান।
৩২.৩ ওভারে মহম্মদ নওয়াজের বলে ৬ মেরে পঞ্চম উইকেটের জুটিতে ১০০ রান পূর্ণ করেন ঈশান কিষান। এর পর ৫০ রান পূর্ণ করলেন হার্দিক পাণ্ড্য। আগা সলমনের বলে বাউন্ডারি মেরে ৬২ বলে অর্ধশত রান করলেন তিনি। ৩৫ ওভারের শেষে ভারতের রান পৌঁছোল ৪ উইকেটে ১৮৩ রান। পঞ্চম উইকেটের জুটিতে রান হল ১১৭।
শতরান থেকে বঞ্চিত ঈশান, হার্দিক
ভারতের সমর্থকরা যখন ঈশানের শতরানের অপেক্ষায় মুহূর্ত গুনছে, ঠিক তখনই আঘাত হানল পাকিস্তান। শত রান ছুঁতে পারলেন না ঈশান। ১০০ রান থেকে মাত্র ১৮ রানে দূরে তাঁর ইনিংস থেমে গেল। ৮১ বলে ৮২ রান করে হরিস রাউফের বলে বাবর আজমকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথে পা বাড়ালেন ঈশান। পঞ্চম উইকেটের জুটিতে ভারতের রান উঠল ১৩৮ রান। হার্দিক পাণ্ড্যর সঙ্গী হলেন রবীন্দ্র জাদেজা।
হার্দিক পাণ্ড্যও শতরান থেকে বঞ্চিত হলেন। ১৩ রান দূরে থাকলেন তিনি। ৯০ বলে ৮৭ রান করে আফ্রিদির বলে আগা সলোমনকে ক্যাচ দেন তিনি। ৪৩.১ ওভারে ভারতের রান ওঠে ৬ উইকেটে ২৩৯। জাদেজার সঙ্গে জুটি বাঁধেন শার্দূল ঠাকুর। কিন্তু ৫টি বল পরেই সেই আফ্রিদির বলেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান জাদেজা। শাহিন শাহ আফ্রিদির সংগ্রহ ২৫ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট।
ভারতীয় দলে কিন্তু ধস চলতেই থাকে। নাসিম শাহের বলে ৩ রান করে আউট হয়ে যান শার্দূল ঠাকুর। ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ৪৪.১ ওভারে ৮ উইকেটে ২৪২ রান। শেষ পর্যন্ত ৪৮.৫ ওভারে গুটিয়ে যায় ২৬৬ রানে। আফ্রিদি ৪ উইকেট নেন ৩৫ রানে, নাসিম শাহ ৩ উইকেট নেন ৩৬ রানে এবং হরিস রাউফ ৩ উইকেট নেন ৫৮ রানে। জয়ের জন্য পাকিস্তানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬৭ রান। কিন্তু দফায় দফায় বৃষ্টির জন্য খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হল।