আফগানিস্তান: ২৪৪ (আজমাতুল্লাহ ওমরজাই ৯৭ নট আউট, গেরাল্ড কোয়েৎজে ৪-৪৪, কেশব মহারাজ ২-২৫, লুঙ্গি এনগিডি ২-৬৯)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২৪৭-৫ (৪৭.৩ ওভার) (রাসি ফান ডেয়ার ডুসেন ৭৬ নট আউট, কুইন্টন ডি কক ৪১, মোহম্মদ নবি ২-৩৫, রশিদ খান ২-৩৭)
অমদাবাদ: শেষ খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরেও মাথা উঁচু করেই এ বারের বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করল আফগানিস্তান। এ বারের অভিযানে তারা ৪টি ম্যাচ জিতেছে। তার মধ্যে তুলনামূলক ভাবে দুর্বল দল ছিল নেদারল্যান্ডস। বাকি ৩টি দেশই ক্রিকেটের একেবারে প্রথম সারির দেশ – ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের কাছে হারটাই তাদের সবচেয়ে বেশি ব্যথা দিয়েছে। এই ম্যাচ জিতলে হয়তো তারা সেমিফাইনালে চলে যেত। আর সে দিন অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল সেই অবিশ্বাস্য মূর্তি ধারণ না করলে ক্রিকেটে ইন্দ্রপতন ঘটাত আফগানিস্তান।
শুক্রবার অমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচেও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকাকে লড়াই করে জিততে হল। প্রথমে ব্যাট করে আফগানিস্তান করে ৫০ ওভারে ২৪৪ রান। জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছোতে দক্ষিণ আফ্রিকার লাগল ৪৭.৩ ওভার। তারা করে ৫ উইকেটে ২৪৭ রান। ফলে ৫ উইকেটে তারা হারাল আফগানদের।
শেষ পর্যন্ত রান তাড়া করে ম্যাচ জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেমিফাইনালে তারা অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে এই রান তাড়া করে জয় দক্ষিণ আফ্রিকাকে অনেক শক্তি জোগাবে।
ওমরজাইয়ের অনবদ্য ব্যাটিং
শুক্রবার টসে জিতে ব্যাট করতে নামে আফগানিস্তান। মূলত আজমাতুল্লাহ ওমরজাইয়ের অনবদ্য ব্যাটিং-এর সুবাদেই আফগানিস্তান দক্ষিণ আফ্রিকাকে লড়াইয়ের মুখে ফেলার সুযোগ পায়। ১০৭ বলে ৯৭ রান করে নট আউট থাকেন ওমরজাই। দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো বোলারকেই তিনি রেয়াত করেননি।
ওমরজাই ছাড়া আর কোনো আফগান ব্যাটার প্রতিপক্ষের বোলারদের সে ভাবে মোকাবিলা করতে পারেননি। বোলিং-এ সবচেয়ে বেশি সফল গেরাল্ড কোয়েৎজে। তিনি ৪৪ রানে ৪ উইকেট দখল করেন। এ ছাড়াও কেশব মহারাজ তাঁর স্পিনের জাদুতে প্রতিপক্ষের দু’জনকে ঘায়েল করেন। তিনি ২৫ রান দিয়ে ২ উইকেট দখল করেন।
৬৬-২ থেকে ২৪৭-৫
জয়ের জন্য ২৪৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংসের ভিত গড়ে দেন কুইন্টন ডি কক। তিনি দলের অধিনায়ক টেমবা বাভুমাকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম উইকেটে ৬৪ রান যোগ করেন। দলের ৬৪ রানে টেমবাকে (২৮ বলে ২৩ রান) হারিয়ে ডি কক আর বেশিক্ষণ উইকেটে থাকেননি। ৪৭ বলে ৪১ রান করে মোহম্মদ নবির বলে তিনি এলবিডব্লিউ হন। ৬৬ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে কিঞ্চিৎ চাপে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
এর পরই লড়াইয়ের ময়দানে নামেন রাসি ফান ডেয়ার ডুসেন। আইডেন মার্করাম (৩২ বলে ২৫ রান), হাইনরিখ ক্লাসেন (১৩ বলে ১০ রান), ডেভিড মিলার (৩৩ বলে ২৪ রান) এবং আন্ডিলে ফেহলুকওয়াওকে (৩৭ বলে ৩৯ রান নট আউট) সঙ্গে নিয়ে দলকে জয়ে পৌঁছে দেন তিনি। ৯৫ বলে ৭৬ রান করে নট আউট থাকেন ডুসেন।
এক অবিশ্বাস্য সমীকরণ পাকিস্তানের কাছে
এ বারের বিশ্বকাপ থেকে ইতিমধ্যেই বিদায় নিয়েছে ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান। এর মধ্যে একমাত্র আফগানিস্তানই সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছিল। আর বাকি তিনটি দল আগাগোড়াই হিসাবের বাইরে ছিল।
এ দিকে তিনটি দল প্রথম চারে চলে গিয়েছে। এরা হল ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়া। চতুর্থ স্থানটি কে পাবে তা নিয়ে শনিবার লড়াই নিউজিল্যান্ড এবং পাকিস্তানের। পাকিস্তানের প্রথম চারে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ, নেই বললেই চলে। কারণ, তাদের সেমিফাইনালে যেতে হলে কার্যত অসম্ভব, অবিশ্বাস্য এক সমীকরণ বাস্তবায়িত করতে হবে। সুতরাং ধরেই নেওয়া যায় প্রথম সেমিফাইনালে ভারত মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ডের এবং দ্বিতীয় সেমিফাইনাল হবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে।
আরও পড়ুন
শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে চতুর্থ স্থানে নিউজিল্যান্ড, ‘অসম্ভব’ কিছু না ঘটালে পাকিস্তানের বিদায় নিশ্চিত